মুয়াবিয়াকে সাহাবীর মর্যাদা দেওয়া কি যৌক্তিক?
মুয়াবিয়াকে ‘জলিল কদর’ সাহাবীর মর্যাদা দেয়া এবং তাকে অপরাধের সকল দায়ভার থেকে অব্যাহতি দেয়া ইসলামের জন্য পরাজয় ছাড়া আর কিছু নয়। তাকে দায়মুক্তি দেয়ার জন্য রসূলের (সা.) হাদিস ব্যবহার করা হয়। লাখো লাখো সাহাবীকে বাদ দিয়ে বিনা দোষে তার সমালোচনা করা হয় না। তার হাতে রক্তের দাগ না থাকলে কেউ তাকে ঘৃণা করতো না।
মুয়াবিয়ার প্ররোচনায় বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে রসূলের (সা.) জ্যেষ্ঠ নাতি ইমাম হাসানকে। মুয়াবিয়া তার পুত্র ইয়াজিদের সিংহাসনে বসার পথ পরিষ্কার করার জন্য খালিদ বিন ওয়ালিদের পুত্রকে হত্যা করেন। হযরত আবু বকরের পুুত্র মোহাম্মদ বিন আবু বকরকেও তার নির্দেশে হত্যা করা হয়। মোহাম্মদ বিন আবু বকরকে গাধার চামড়ায় মুড়িয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। ইমাম হাসানকে তিনি ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং তার সাথে স্বাক্ষরিত পাঁচ দফা চুক্তি ভঙ্গ করে নিজের কুখ্যাত পুত্র ইয়াজিদকে সিংহাসনে বসান।
ইয়াজিদকে সিংহাসনে বসিয়ে তিনি কারবালার গণহত্যার পটভূমি তৈরি করেন। ইসলামের বৈধ খলিফা হযরত আলীর বিরুদ্ধে তিনি সিফফিনে যুদ্ধ করেন। এমন একটি জঘন্য লোককে সাহাবী বলা মানে সাহাবীদের অপমান করা। মক্কা বিজয়ের পর মুয়াবিয়া প্রাণ বাঁচাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম গ্রহণকারীদের বলা হয় ‘তোলাকা।’ তোলাকা শব্দের অর্থ হলো সাধারণ ক্ষমাপ্রাপ্ত।
সাধারণ ক্ষমাপ্রাপ্ত মুয়াবিয়া ইসলামে এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হন কিভাবে তার কোনো ব্যাখ্যা নেই। মুয়াবিয়া ইসলাম গ্রহণ করার পর রসূল (সা.) ৮২ দিন জীবিত ছিলেন। ৮২ দিনে মুয়াবিয়া রসূলের (সা.) সান্নিধ্য পেয়েছিলেন কিনা সন্দেহ। তাকে কাতিবে ওহী বলা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ উল্লেখ করতে পারেননি তিনি কুরআনের কোন আয়াত বা সূরা লিপিবদ্ধ করেছেন। মনে হয় তিনি রসূলের (সা.) কিছু কিছু চিঠিপত্র লিখেছিলেন।
মুয়াবিয়া খোলাফায়ে রাশেদীন ধ্বংস করে রাজতন্ত্র চালু করেন। কিছু ভালো কাজ তার অবশ্যই আছে। কিন্তু রসূলের (সা.) পরিবারের বিরুদ্ধে তার ক্ষমাহীন অপরাধ ভালো কাজগুলোকে ঢেকে দিয়েছে।
লেখক- শাহাদাত হোসাইন খান।
মুয়াবিয়া প্রসঙ্গে আরো পড়ুন:
- মুয়াবিয়ার প্রতি মাওলানা ভাসানীর দৃষ্টিভঙ্গি।
- মুয়াবিয়ার আকিদা সম্পর্কে খাজাবাবা ফরিদপুরীর নসিহত
- মুয়াবিয়ার অনুসারীরা ইমাম নাসাঈ (রহঃ)’কে শহীদ করেন
- মুয়াবিয়া কৌশলে আয়েশা (রাঃ)-কে নির্মমভাবে হত্যা করে।
- মুয়াবিয়াকে হক মনে করা মানে মাওলা আলীকে অবমাননা করা!
- মুয়াবিয়ার ফজিলতে প্রচলিত হাদিসগুলো বানোয়াটঃ
- মুয়াবিয়ার ২২টি নির্মম কুকীর্তি:
- হাদিসের অপব্যাখ্যা করে মুয়াবিয়াকে যেভাবে সাহাবী বানানো হয়।
- আল্লাহ পাক স্বয়ং মুয়াবিয়ার কর্মকে জাহান্নামী বলছেন।
- খারেজিদের পরিচয় এবং মুয়াবিয়া সম্পর্কে আলোচনাঃ
- মুনাফিক মুয়াবিয়ার পরিচয়।
- স্বয়ং রাসূল পাক (সাঃ) মুয়াবিয়াকে মোনাফেক বলছেন।
- মাওলা আলী (রাঃ) ও মুয়াবিয়া প্রসঙ্গে দলিল ভিত্তিক আলোচনা
- যে ব্যক্তি আহলে বাইতের শত্রুতা করে, সে কাফের হয়ে মারা যায়।
- মোয়াবিয়াপন্থী ও আহলেবাইত প্রেমিকের মধ্যে কথোপকথন: পর্ব-১
- মোয়াবিয়াপন্থী ও আহলেবাইত প্রেমিকের মধ্যে কথোপকথন: পর্ব-০২
- রাসূল (সাঃ) স্বয়ং মোয়াবিয়াকে লানত দেওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন।
- মোয়াবিয়া কখনো ওহী লেখক হতে পারে না।
- রাসূল (সাঃ) মোয়াবিয়াকে বিদ্রোহী এবং জাহান্নামী বলেছেন
- কোন যুক্তিতে মোয়াবিয়াকে জলিল কদর সাহাবী বলছেন?
- মোয়াবিয়ার নিকট মাওলা আলী (আঃ) এর পত্র।
- মাওলা আলী (আঃ) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ