মোয়াবিয়া কখনো ওহী লেখক হতে পারে না।

মোয়াবিয়া কখনো ওহী লেখক হতে পারে না।

মোয়াবিয়া কখনো ওহী লেখক হতে পারে না। জীবনভর জাল হাদিস দিয়ে আমাদেরকে আষাঢ় মাসের গল্প শুনানো হয়েছে।

ওহী লেখক বলতে কি বুঝায়?

দয়াল রাসূল পাক ( সাঃ) ৪০ বছর বয়সে শরিয়তের দৃষ্টিতে নবুয়াত লাভ করে। তখন থেকেই আল্লাহর তরফ থেকে পবিত্র কুরআন শরীফ ধীরে ধীরে নাজিল হয়। হেরা গুহায় থেকে প্রথম ওহী নাজিল হয় এবং দয়াল রাসূল (সাঃ) মক্কা বিজয়ের পর বিদায় হজ্ব করে যখন গাদীরে খুমে পৌঁছায়, তখন পবিত্র কুরআন শরীফের সর্বশেষ আয়াত নাজিল হয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ আয়াত নাজিলের পরিসমাপ্তি ঘটে। মোট ২৩ বছর ধরে ওহী নাজিল হয়। যেহেতু পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত একেক সময় বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নাজিল হয়েছে, তাই আয়াতগুলো লিখে রাখার প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক হয়ে পড়ে। দয়াল রাসূল (সাঃ) তাঁর বিশ্বস্ত ও অনুগত সাহাবীদেরকে ওহী লেখার দায়িত্ব অর্পণ করে। তাঁরা বিভিন্ন গাছের বাকলা, পাথর খন্ড ও চামড়ার মধ্যে কোরআনের আয়াতগুলো লিখে রাখতেন।

দয়াল রাসূল (সাঃ) জীবনে ৪০-৬৩ সময়ে সূদীর্ঘ ২৩ বছরে মোট ২৭টি যুদ্ধের প্রতিরোধ করেন। প্রতিটি যুদ্ধ সংঘটিত হয় মোয়াবিয়ার পিতা আবু সুফিয়ানের সাথে। অবশেষে মক্কা বিজয়ের পর জীবন বাঁচানো এবং ইসলামের ক্ষতি সাধন করার জন্য আবু সুফিয়ান ও মোয়াবিয়াসহ হাজার হাজার লোক মুখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে কিন্তু অন্তরে তাদের মোনাফেকি থেকেই যায়। তাই আল্লাহ তায়ালা সাথে সাথে পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত নাজিল করে বলে দেয়, মক্কা বিজয়ের আগে যারা ইসলাম গ্রহণ করছে এবং মক্কা বিজয়ের পর যারা ইসলাম গ্রহণ করছে, তারা কখনো এক নয়।

মক্কা বিজয়ের পর মাত্র অল্প কয়েকটি আয়াত নাজিল হয়। মক্কা বিজয় করে দয়াল রাসূল (সাঃ) অল্প কিছুদিন থেকে সরাসরি মদিনায় চলে যায়। আর আহলে বাইতের দুশমন মোয়াবিয়া মক্কা বিজয়ের পর জীবন বাঁচানোর জন্য ইসলাম গ্রহণ করে মক্কায়ই থেকে যায়। ফলে মোনাফেক মোয়াবিয়া দয়াল রাসূল (সাঃ) এর সহবত লাভ করার সুযোগ পাননি। ফলে মোয়াবিয়ার মধ্যে দয়াল রাসূলের আদর্শ ও চরিত্র বিন্দুমাত্র দেখা যায়নি। কারণ মোয়াবিয়া দয়াল রাসূলের কাছ থেকে ইসলাম শিখার নূন্যতম সুযোগ পাননি। তাহলে এখন শুদ্ধ বিবেকে প্রশ্ন জাগে, মোয়াবিয়া কখন এবং কিভাবে ওহী লেখক হলো? তখন তো আর মোবাইলের যুগ ছিলো না। দয়াল রাসূল ( সাঃ) ফোন করে মোয়াবিয়াকে ওহী লিখতে বলবে।

তাছাড়া দয়াল রাসূল ( সাঃ) এর ওহী লেখার মানুষের কি এতোই অভাব হয়ে গিয়েছিলো? যার জন্য মোয়াবিয়াকে দিয়েই ওহী লেখাতে হবে। তাছাড়া তখনমাত্র অল্প কয়েকটি আয়াত বাকী ছিলো। এই অল্প কয়েকটি আয়াতের জন্য কিভাবে পূর্বের ওহী লেখকদের বাদ দিয়ে মোয়াবিয়াকে দায়িত্ব দিবে। তাহলে কি পূর্বের ওহী লেখকগণ ব্যর্থ, ক্লান্ত এবং ওহী লেখতে অস্বীকার করেছিলো নাকি? নাউজুবিল্লাহ। তাহলে কেনো অল্প কয়েকটি আয়াতের জন্য দয়াল রাসূল (সাঃ) মদিনা থেকে শতশত মাইল দুরে মক্কা থেকে মোয়াবিয়াকে ডেকে এনে ওহী লেখাবে? তাহলে কি দয়াল রাসূল (সাঃ) পূর্বের সকল ওহী লেখকদের প্রতি বিশ্বাস এবং আস্হা হারিয়ে ফেলছিলেন? নাউজুবিল্লাহ।

মদিনা থেকে মক্কায় মোয়াবিয়াকে ডেকে আনতে যতক্ষণ সময় লাগবে, ততক্ষণে তো কয়েক হাজার আয়াত লেখা সম্পন্ন হয়ে যাবে। ভাই এটা তো আষাঢ় মাসের গল্পকেও হারা মানাবে। অথচ জাল হাদিস দিয়ে এইরকম আজগুবি গল্প ১৪০০ বছর ধরে শুনতে শুনতে কান ঝালাফালা হয়ে গেছে। অন্ধ, বধির এবং বিবেকহীন হলেই এইরকম আষাঢ় মাসের গল্প বিশ্বাস যোগ্য। তাছাড়া দয়াল রাসূল (সাঃ) কিভাবে ইসলামের ঘোরতর দুশমন আবু সুফিয়ান ও হিন্দার ছেলে নব্য ইসলাম গ্রহণকারী মোয়াবিয়াকে এতোবড় দায়িত্ব অর্পণ করবে। আচ্ছা বর্তমান সরকার কি সবচেয়ে ঘোরতর বিরোধী নব্য যোগদান নেতাকে সরকারের মীমাংসিত মহামূল্যবান গুরুত্বপূর্ণ কাজে দায়িত্ব অর্পন করতে পারে? এটা কখনো হতে পারে না।

মূলত এরা নাস্তিক এবং বিধর্মীদের কাছে দয়াল রাসূল (সাঃ) কে অবিবেচক, বুদ্ধিহীন, হাস্যকর পরিণত করতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই এরা জাল হাদিস তৈরি করে মোয়াবিয়াকে ওহী লেখক বানিয়ে দিয়েছে। এর নাম যদি ইসলাম ধর্ম হয়, তাহলে পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট অযোক্তিক ধর্ম হবে ইসলাম। নাউজুবিল্লাহ। ইসলাম ধর্ম কখনো এমন হতেই পারে না। বরং ইসলাম ধর্ম হলো সবচেয়ে যুক্তিক এবং মানবতাবাদী ধর্ম। মূলত এজিদ মোয়াবিয়ার অনুসারীরা শতশত বছর ধরে ভাঙ্গা সারিন্দা বাজিয়ে শিয়া উলুধ্বনি দিয়ে আমাদেরকে অখাদ্য খাবার খাইতে বাধ্য করছে। কোন সুস্হ্য বিবেকবান মানুষ কখনো মোয়াবিয়াকে ওহী লেখক বলতে পারবে না। একমাত্র বদ্ধ উন্মাদ পাগলের দলেরা মোয়াবিয়াকে ওহী লেখক বলবে।

নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel