আমীরে মুয়াবিয়ার ক্ষুরধার যুক্তি।
ইমাম হাকেম তার মুসতাদরাকে বলেন,
أخْبَرَنِي أبُو عَبْدِ اللَّهِ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الصَّنْعانِيُّ، ثَنا إسْحاقُ بْنُ إبْراهِيمَ بْنِ عَبّادٍ، أنا عَبْدُ الرَّزّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ ابْنِ طاوُسٍ، عَنْ أبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ أبِيهِ، أخْبَرَهُ، قالَ:
আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ সানআনি আমাদের বলেছেন, ইসহাক বিন ইব্রাহিম বিন আব্বাদ তাকে বলেছেন, আব্দুর রাযযাক তাকে জানিয়েছেন, মামার থেকে, তিনি ইবনে তাউস থেকে, তিনি আবু বকর বিন মুহাম্মদ বিন আমর বিন হাযম থেকে, তিনি তার বাবা মুহাম্মদ থেকে, যে –
لَمّا قُتِلَ عَمّارُ بْنُ ياسِرٍ: دَخَلَ عَمْرُو بْنُ حَزْمٍ عَلى عَمْرِو بْنِ العاصِ، فَقالَ: قُتِلَ عَمّارٌ وقَدْ سَمِعْتُ، رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ: «تَقْتُلُهُ الفِئَةُ الباغِيَةُ» فَقامَ عَمْرٌو فَزِعًا حَتّى دَخَلَ عَلى مُعاوِيَةَ، فَقالَ لَهُ مُعاوِيَةُ: ما شَأْنُكَ؟ فَقالَ: قُتِلَ عَمّارُ بْنُ ياسِرٍ، فَقالَ: قُتِلَ عَمّارٌ، فَماذا؟ قالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ: «تَقْتُلُهُ الفِئَةُ الباغِيَةُ» فَقالَ لَهُ مُعاوِيَةُ: أنَحْنُ قَتَلْناهُ إنَّما قَتَلَهُ عَلِيٌّ وأصْحابُهُ؟ جاءُوا بِهِ حَتّى ألْقَوْهُ بَيْنَ رِماحِنا أوْ، قالَ: سُيُوفِنا
আম্মার বিন ইয়াসিরকে যখন হত্যা করা হয়, আমর বিন হাযম, আমর বিন আসের কাছে প্রবেশ করেন এবং বলেন, আম্মার নিহত হয়েছে। আমি আল্লাহর রাসুলকে বলতে শুনেছি, “আম্মারকে বাগী-বিদ্রোহী দল হত্যা করবে।” আমর বিন আস এটা শুনে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দাঁড়িয়ে যান এবং মুয়াবিয়ার কক্ষে প্রবেশ করেন। মুয়াবিয়া তাকে জিজ্ঞেস করেন, “কী হয়েছে?” আমর বলেন, “আম্মারকে হত্যা করা হয়েছে।” মুয়াবিয়া মন্তব্য করেন, “তাতে কী হয়েছে?” আমর বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে বলতে শুনেছি, “তাকে বাগী দল হত্যা করবে।” মুয়াবিয়া তাকে বললেন, “আম্মারকে কি আমরা হত্যা করেছি? হত্যা তো করেছে, আলী ও তার সঙ্গীরা। তারাই তো আম্মারকে আমাদের বর্শা ও তরবারির নিচে ছেড়ে দিয়েছে।”
«صَحِيحٌ عَلى شَرْطِهِما، ولَمْ يُخَرِّجاهُ بِهَذِهِ السِّياقَةِ»
[التعليق – من تلخيص الذهبي]
٥٦٥٩ – على شرط البخاري ومسلم
ইমাম হাকিম বলেন, হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহিহ, তবে তারা একে এই শব্দে নির্গত করেন নি।
ইমাম যাহাবি তার তালখিসে বলেন, হাদিসটি বুখারি ও মুসলিমের শর্ত মেনেছে।
এছাড়াও বুখারীর সহীহ হাদীসে আছে, আবু সাইদ খুদরী বলেন,
كُنَّا نَحْمِلُ لَبِنَةً لَبِنَةً، وَعَمَّارٌ لَبِنَتَيْنِ لَبِنَتَيْنِ، فَرَآهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَيَنْفُضُ التُّرَابَ عَنْهُ وَيَقُولُ “ وَيْحَ عَمَّارٍ تَقْتُلُهُ الْفِئَةُ الْبَاغِيَةُ، يَدْعُوهُمْ إِلَى الْجَنَّةِ، وَيَدْعُونَهُ إِلَى النَّارِ ”.
“আমরা মসজিদের কাজের জন্য একটি করে ইট বহন করছিলাম, আম্মার করছিলেন দুইটি করে। নবীজী আম্মারকে দেখে তার ধুলো পরিষ্কার করতে করতে বললেন, আফসোস আম্মারের জন্য। বাগী বিদ্রোহী দল তাকে হত্যা করবে। সে তাদের জান্নাতের দিকে ডাকবে, আর তারা তাকে ডাকবে দোযখের দিকে।”
হায়, আমীরে মুয়াবিয়া! ধন্য আপনি। কী অসামান্য ক্ষুরধার মেধা আল্লাহ আপনাকে দিয়েছেন। এমন তীক্ষ্ম যুক্তি উম্মতের খুব মানুষেরই নসিব হয়। ঠিকই তো! দোষ তো আলীর। তিনি কেন খিলাফত আঁকড়ে থাকলেন, মুয়াবিয়াকে ছেড়ে দিলেন না? আম্মারও তাহলে আলীর খিলাফতের পক্ষে লড়াই করে মুয়াবিয়ার দলের হাতে নিহত হতেন না। আম্মারকে হত্যা করার দায় তো আসলে আলীর, তাই না? যুক্তি তো তাই বলে।
কিন্তু আফসোস, এত সুন্দর সলিড যুক্তি শোনানোর পরেও আমর বিন আস শান্ত হন নি। ইমাম হাকিম উল্লেখ করেছেন, আমর বিন আস আম্মারের হত্যার কথা স্মরণ করে বলতেন,
وَاللَّهِ إِنَّكَ لَتَعْلَمُهُ، وَلَوَدِدْتُ أَنِّي مُتُّ قَبْلَ هَذَا بِعِشْرِينَ سَنَةً
“আল্লাহর কসম, এটা ভালো করেই তুমি জান। ইশ, আমি যদি আজ থেকে বিশ বছর আগে মারা যেতাম!”
এবার আসেন, প্রসঙ্গক্রমে আমরা আলী, আম্মার ও মুয়াবিয়া শব্দের অর্থগুলো জেনে নিতে পারি।
লেখা— শেখ সাদী