রাষ্ট্র, ধর্ম ও দাসত্বের ছায়া (দ্বিতীয় পর্ব)

রাষ্ট্র, ধর্ম ও দাসত্বের ছায়া (দ্বিতীয় পর্ব)

ধর্ম: অনুভব না বিধান?

ধর্ম জন্মেছিল মানুষের ভেতরের সেই অপার বিস্ময় থেকে—প্রকৃতির সৌন্দর্য, জীবনের রহস্য আর মৃত্যুর অজানা ছায়াকে বোঝার আকাঙ্ক্ষা থেকে। তবে সেই অনুভবের উপর যখন বিধান চাপানো হলো, তখন জন্ম নিল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। আর তখনই প্রশ্ন নয়, “নিয়ম হয়ে উঠলো চূড়ান্ত সত্য”।

ধর্ম হয়ে গেল “সংখ্যা” , “দল”, “আচার”, “বিধান”, আর “”আমরা বনাম তারা”-এর বিভাজন।

শুরু হলো সেই অনন্ত বিভ্রান্তি—
যেখানে ঈশ্বর হারিয়ে গেলো পুঁথির পাতায়,
ভক্তি হারিয়ে গেলো ভয় আর গ্লানির চাপে।

রাষ্ট্র: সংহতির মোড়কে শাসনের ছায়া

রাষ্ট্র—শুরুতে ছিল মানুষে মানুষে সম্পর্কের নিরাপত্তা-চুক্তি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্র হয়ে উঠলো একটি “ক্ষমতার কৌশল”।

রাষ্ট্র দাবি করে ‘আইন’। তবে সেই আইন একদিন হয়ে ওঠে—

  • ভিন্নমত দমন,
  • মৌলিক অধিকারের সীমারেখা,
  • আর জনগণকে এক পংক্তিতে দাঁড় করানোর কৌশল।
  • এখন আর রাষ্ট্র নাগরিক সৃষ্টি করে না—রাষ্ট্র সৃষ্টি করে এক ধরনের “ভীত, বাধ্য, নীরব জনগোষ্ঠী”।

রাষ্ট্রের বুদ্ধিমান শাসন: ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নয়, কেন্দ্রায়ন

রাষ্ট্রও ঠিক একইভাবে কাজ করেছে। বিভিন্ন রাজা বা রাজনীতিকরা সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসকে নিজেদের পক্ষে ব্যবহার করেছে।

  • “ধর্মীয় বিভাজন”,
  • “ভয়ের রাজনীতি”,
  • “নিয়ন্ত্রণের আইন”— সবকিছুই জনগণের মনে প্রশ্ন না তোলার “একটি কৌশলগত খেলা”।
  • যখন জনগণ প্রশ্ন করতে শুরু করে—শাসক তখন তৈরি করে “নতুন শত্রু”।
  • ধর্মীয় বিদ্বেষ, রাষ্ট্রবিরোধী তকমা, কিংবা নৈতিক ভ্রষ্টতার দোহাই দিয়ে “প্রশ্ন করাকে অপরাধে পরিণত করা হয়।”

আরো একবার সেই শৃঙ্খলের গল্প

তাই বলা যায়— ধর্ম ও রাষ্ট্রের এই যুগপৎ সংমিশ্রণ মানুষের ভেতর থেকে “নিজস্ব অনুভব ও উপলব্ধিকে অপসারিত করে দেয়”। এ যেন এক বন্দি সময়—যেখানে

  • ভক্তির নামে ভয়,
  • বিধানের নামে বশ্যতা,
  • আর ধর্মের নামে নিরবতা চাপিয়ে দেওয়া হয়।

চলবে..

আরো পড়ুন: রাষ্ট্র, ধর্ম ও দাসত্বের ছায়া (প্রথম পর্ব)

– ফরহাদ ইবনে রেহান
ভক্তি ও বিধানের অন্তঃসার
অধ্যায় ২: রাষ্ট্র, ধর্ম ও দাসত্বের ছায়া (দ্বিতীয় পর্ব)

» রাষ্ট্র, ধর্ম ও দাসত্বের ছায়া (সব পর্ব পড়ুন)

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel