পাপ বলে কেঁদে কি লাভ বলো?
প্রতিদিন পাপ পাপ বলে গলা ফাটা চিৎকার করে কেঁদে কি লাভ বলো? মূলত পাপ একটি কুসংস্কার, পাপের জন্য এসব কাঁদা কাঁদি অনেকটাই দুষ্টবুদ্ধির লক্ষ্মণ। তোমরা কি এমন পাপী হয়েছো যে তাঁর জন্য তোমাদের কাঁদতে হচ্ছে? মুলত তোমাদের পাপের জন্য কাঁদা উচিৎ নয়, কাঁদা উচিৎ এই জন্য যে তোমরা পাপ নামক শব্দের সাথে পরিচিত হয়েছো। তোমাদের এজন্য’ই কাঁদা উচিৎ যে তোমরা তোমাদের জানার বিপক্ষে কিছু’কে দেখা মাত্র’ই তাকে পাপ বলে গণ্য করছো, এটা তোমাদের অজ্ঞতা, এবং এটা তোমাদের বিশুদ্ধজ্ঞানের অভাব।
পাপের জন্য যারা কাঁদে আমি তাদেরকে অজ্ঞানী বলছি, কারণ জগতে যা কিছুকে’ই পাপ বলে জানো তাঁর সব কিছু’ই তোমরা তৈরি করেছো। যখন থেকে তোমরা নিজেরা’ই নিজেদেরকে অতি জঘন্য ভাবাতে শুরু করেছো, তখন থেকে’ই এই পাপ তোমাদের দুর্বলতার ফল হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার দরুন এখন তোমরা নিজেদেরকে পাপী দাবি করছো৷
মানুষের আদ্যাশক্তিকে নষ্ট করার জন্য প্রতিটি ধর্মে’ই কিছু আগাছা যুক্ত পণ্ডিতের জন্ম হয়, তাঁরা মানুষদেরকে ছোট থেকে’ই শিক্ষা দিয়ে থাকে যে ঈশ্বর মানুষকে সৃষ্টি করেছেন নাপাক বস্তুদ্বারা এবং তাকে খুব দুর্বল করে বানানো হয়েছে, মানুষ সবাই পাপী, আর মানুষেরা পাপ মুক্ত হতে’ই দুনিয়াতে পরিক্ষা দিতে এসেছেন।
তোমরা যদি পারো এসকল আগাছাযুক্ত পণ্ডিতদের বক্তব্যকে গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকো৷ সারাদিন পাপ পাপ করে পাপের অপবাদ শুনে নিজেদের আদ্যাশক্তিকে নষ্ট করিওনা৷ সত্য’ই যদি তোমরা পাপ মুক্ত হতে চাও, তবে তোমরা পাপ নামক গল্পকে পরিহার করো, এবং লোকেদের বুঝাও যে তাঁরা কেহ পাপী নয় বরং তাঁরা সবাই ঐ গৌরের অংশ, তাঁরা সবাই অখণ্ড ভূ, তাঁরা সবাই ব্রহ্মা, আর ব্রহ্মা কি করে পাপী হয়? অখণ্ড ভু কি করে নাপাকে জন্মায়?
লোকেদের বলো তাঁরা যেন পাপ পাপ বলে জগৎকে আর অতিষ্ঠ করে না তোলে৷ তোমরা সকলে’ই সব ধরনের পাপ পুণ্যের হিসাব মাথা থেকে ফেলে দাও, এবং তোমাদের সকালের গভীরে যে আরও একটি মানুষ লুকিয়ে আছে, সেই মানুষটি’ই মুলত তোমাদের আসল তুমি।
তাঁকে তোমরা প্রকাশিত হওয়ার সুযোগ করে দাও, তাকে উন্মুক্ত হতে দাও, তোমরা সারাদিন পাপ পুণ্যের হিসাব করতে করতে তোমাদের আসল তুমিটি’কে প্রকাশ করাতে ব্যার্থ হচ্ছো, তোমাদের সকলের উচিৎ তোমাদের গভীরে থাকা তুমিটি’কে অজ্ঞাতর পর্দা কেটে তাঁকে জয় করে এনে প্রকাশ করা, তাঁকে উপস্থিত করা এবং তোমার গভীরের সেই তুমিতে যে রহস্য, যে শক্তি রয়েছে তা প্রকাশ্যে ব্যাবহার করা৷
তোমরা নিজেরা এটি করার চেষ্টা করো, এবং পাপ পুণ্য নামক যে সব কুসংস্কার রয়েছে সেগুলিকে পরিহার করে চলো, দুনিয়া এখনো তোমাদের অনুকূলে রয়েছে, এসকল কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসো, এই অসুস্থতা দূর করো, আসল কাজে মন দাও, এখন’ই সময় নিজের অস্তিত্বকে প্রকাশ করার, এবং জানান দাও তুমি’ই সেই শক্তি৷
লেখা: বুদ্ধ মুহাম্মদ কৃষ্ণ