হোমপেজ ইলমে মারেফত কোরবানী কাকে বলে, আসল কোরবানী কি?

কোরবানী কাকে বলে, আসল কোরবানী কি?

কোরবানী কাকে বলে, আসল কোরবানী কি?

বাবা ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজের সবচেয়ে প্রিয়বস্তু ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানি অর্থাৎ বিসর্জন দিয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহ খুশি হয়ে ইসমাইল (আঃ) এর পরিবর্তে দুম্বা কোরবানি হয়। সেই থেকে আমাদের মুসলিম সমাজে কোরবানি চালু হয়ে আসছে। এটা ছিল বাবা ইব্রাহিম (আঃ) এর আল্লাহর প্রতি আত্নত্যাগের বলিয়ান।

আর মাওলা ইমাম হোসাইন তাঁর পবিত্র ৭২ জন সঙ্গীসহ কারবালা প্রান্তরে আমাদের মতো পাপীতাপীদের মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গ করে। আর মাওলা হাসান আমাদের মুক্তির জন্য বিষ খেয়ে নিজেকে কোরবানি করে। নচেৎ বিষের কি ক্ষমতা আছে, আমার মাওলা ইমাম হাসানকে মেরে ফেলার। আর সৃষ্টি জগতের সমস্ত শক্তি এক হলেও মাওলা ইমাম হোসাইনকে কতল করবে, এমন শক্তি কারোর আছে। মাওলা ইমাম হোসাইনের দুলদুল ঘোড়ার একটি পায়ের কাছে এজিদি ২২ হাজার সৈন্য অতি তুচ্ছ ছিলো। অথচ মাওলা ইমাম হোসাইন স্বেচ্ছায় নিজের গর্দান মোবারক কোরবানি দিয়ে আমাদের জন্য মুক্তির ব্যবস্হা করে গেলেন।

আচ্ছা আপনার বিবেককে একবার প্রশ্ন করুন তো, বাবা ইব্রাহিম (আঃ) এর কোরবানি নাকি মাওলা ইমাম হোসাইনের কোরবানি সবচেয়ে বেশি মহৎ ছিলো। বাবা ইব্রাহিম (আঃ) এর কোরবানি ছিল শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। এখানে আমরা জড়িত নই। আর মাওলা ইমাম হাসান ও হোসাইন আমাদের মুক্তির জন্য কোরবানী হয়েছেন। সেদিন কারবালা প্রান্তরে মাওলা ইমাম হোসাইন কোরবানী না হলে, আমাদের মতো পাপীতাপীর জীবনেও মুক্তির ব্যবস্হা হতো না। এরচেয়ে বড় আত্নত্যাগ অর্থাৎ কোরবানি কি হতে পারে?

হায়রে সেলুকাস মুসলিম জাতি! কারবালা প্রান্তরের সেই কোরবানির কথা নিমিষেই ভুলে গেলাম। অথচ হাজার হাজার বছর আগে বাবা ইব্রাহিম (আঃ) এর কোরবানি নিয়ে মহা উৎসবে মেতে উঠলাম। তার মানে এই নয় যে, আমি বাবা ইব্রাহিম (আঃ) এর কোরবানিকে অস্বীকার করছি। বাবা ইব্রাহিম (আঃ) শুধু দেখিয়ে গেছে কিভাবে আত্নত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হয়। সে কিন্তু আমাদের নাজাতদাতা নন। আমাদের নাজাতদাতা মাওলা ইমাম হাসান ও হোসাইন। কারণ তাঁরা শুধু আমাদের মুক্তির জন্য কোরবানী হয়েছেন। আমি মাঝে মাঝে শুধু ভাবি, মুসলিম জাতি এতো অজ্ঞ ও বিবেকহীন কিভাবে হলো? আজ কারবালার নির্মম কাহিনি আমাদের হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করে না। বৃষ্টি ধারায় আঁখি ভিজে না। হায় হোসাইন, হায় হোসাইন, হায় হোসাইন বলে মন অনুতপ্ত হয় না। এ কেমন অকৃতজ্ঞ জাতি আমরা?

বিষয়টি যখন গভীরভাবে ভাবি, তখন নিজের উপর ধিক্কার দিই শতবার। প্রচন্ড ঘৃণা লাগে নিজের প্রতি। আমার মতো জুলুমবাজ ও অকৃতজ্ঞ জগতে আর একটিও নেই। হায়রে সেলুকাস আমাদের বিবেক বুদ্ধি। মাওলা ইমাম হোসাইনের চেয়ে আত্নত্যাগ অর্থাৎ কোরবানি সৃষ্টি জগতে আর একটি দেখান তো আমায়। জানি কেয়ামত পর্যন্ত অপচেষ্টা করলেও পারবেন না। ধ্বংস হোক আমাদের অকৃতজ্ঞ বিবেক এবং মাওলা ইমাম হোসাইনের আত্মাত্যাগে বলিয়ান হোক আমাদের জাগ্রত শুদ্ধ বিবেক। হে মাওলা ইমাম হোসাইন! তোমার স্মরণে যেনো আজীবন প্রতিটি সেকেন্ড আমার হৃদয় ক্রন্দনরত হয়। ক্ষত-বিক্ষত হোক আমার পাষান্ড মন। তুমি দয়া করে অধম পাপীকে তোমার ভালোবাসায় সিক্ত করো।

নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।