বস্তুবিজ্ঞান এবং কোরানিক বিজ্ঞান
বস্তুবিজ্ঞান যেখানে কবর কোরানের বিজ্ঞান সেখান থেকে শুরুঃ-
“তাহারা কি জমিনে অথবা দেহে ভ্রমণ করে নাই? তাহা হইলে তাহারা জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন হৃদয় ও শ্রুতিশক্তিসম্পন্ন শ্রবণের অধীকারি হইতে পারিত।কিন্তু চক্ষু তো অন্ধ নয়,বরং অন্ধ হইতেছে বক্ষের মধ্য হৃদয়।” (সুরা হাজ্জ ২২:৪৬ নং আয়াত)।
মন্তব্য:
বস্তুবিজ্ঞান চর্মচক্ষুটি অন্ধ হলে অস্ত্রপাচার করে চোখের জ্যােতি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে কিন্তু কোরানিক দর্শন এমন একটি চোখের সন্ধান জানান দিচ্ছে সেই চক্ষুটি হলো বক্ষের (বুকের) অভ্যন্তরে একটি চোখ তার নাম হল কলব তথা অন্তরচক্ষু। তাহলে আমরা দুই প্রকার চোখ কোরানিক দর্শন হতে জানতে পারলাম চর্মচক্ষু যাহা কপালের নিচে নাকের উপরে প্রতিস্থাপিত। অপরটি হল অন্তরচক্ষু যা বক্ষের মধ্যে অবস্থিত কলব নামক হৃদয়।
কোরানিক দর্শন বলতেছে তার চর্মচক্ষু ঠিকই আছে এবং দেখেও বটে কিন্তু অন্তরচক্ষু হৃদয় অন্ধ। তাহলে চর্মচক্ষু সবকিছু সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারে না, চর্মচক্ষুটির সীমাবদ্ধতা রয়েছে। চর্মচক্ষু থাকলেই জ্ঞানবুদ্ধি উদয় হয় না এবং বিশেষ শ্রবণের অধীকারী তথা ঐশীপ্রত্যাদেশের অধীকারি হয় না। বিশেষ জ্ঞানের অধিকারী এবং ঐশীবাণী শ্রবনের অধীকারি হওয়ার জন্য অন্তর চোখের কপাট খোলতে হয় এবং এই অন্তর চোখটি খোলার জন্য পরিভ্রমণ (সাধনা তথা যোগচর্চা) করতে হবে। একজন নাস্তিক চর্মচোখ দিয়ে যুগের পর যুগ পৃথিবী পরিভ্রমণ করার পরও যদি তাকে জিজ্ঞেস করা হয় আপনি ঈশ্বরের দর্শন পেয়েছেন কি? তখনই এই নাস্তিক সুজাসাপ্টা বলে ফেলবেন ‘স্রষ্টাই তো নাই ‘ আবার ঈশ্বর দর্শন! তাহলে কোরানি দর্শন বলতেছে ভ্রমণ করার জন্য। জমিন অর্থ মাটি আর মানবদেহটিও মাটি।এই অন্তর চোখটিও একটি মানবদেহের অভ্যন্তরে সুপ্ত অবস্থায় লুকিয়ে থাকে। তাকে ফুটিয়ে তুলতে হবে।
আর এই চোখটিকে যদি দেহের মধ্যে যুগ যুগ ভ্রমন (সাধনা বা সালাত বা যিকির) করে ফুটিয়ে তুলা যায় তাহলে দেহটি আলোকিত হবে এবং প্রজ্ঞাশক্তি, দূরদৃষ্টি, ঐশীপ্রেরণা ও বানী আপন দেহে শ্রবণ করতে পারা যাবে। এবং সকল সন্দেহের অবসান ঘটবে এবং অন্ধত্ব ঘুচে যাবে। বস্তুবিজ্ঞান দ্বারা কি কলব তথা অন্তরচক্ষুটির এই অন্ধত্বকে ফুটিয়ে তোলা সম্ভবপর? ভবিষ্যতে কি এমন যন্ত্র আবিস্কার হবে যা দিয়ে অন্তর চক্ষুটিকে অপারেশন করে আলোকিত করা যাবে? না বস্তুবিজ্ঞান পারবে না? তাহলে কি বস্তুবিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা আছে? তাহলে কি আত্মারবিজ্ঞানী মুনি ঋষী, সুফি ও সাধকদের কথাই সঠিক, তারা বলেন বস্তবিজ্ঞানের যেখানে পরিসমাপ্তি আত্মার তথা সিনার বিজ্ঞান ঐখান থেকে শুরু মাত্র।
তাহলে আত্মার বিজ্ঞান অসীম। যার শেষও নাই আবার শুরুও নাই। এটাই দর্শনের বাহিরে এবং জ্ঞানের বাহিরে একটি বিজ্ঞান। যা বি অন সাইন্স। যা ফিলোসুফি অব ইউনিফর্মিটি অব নেচার তথা প্রাকৃতিক ঐক্যতান সৌন্দর্য দর্শন। সুতরাং বলা যায় বক্ষের মধ্যে অবস্থিত অন্তর চোখটির আলো ফুটাতে হলে যিনি অন্তরচোখটির অধীকারি তার ফর্মুলা মোতাবেক কিছু সময় নির্জনে আপনদেহে পরিভ্রমণ করতে পারলে অন্তরচক্ষুটি বিকশিত হওয়ার সমূহ সম্ভবনা আসন্ন। এবং এই প্রত্যক্ষ বিশ্বাসটুকু একজন ব্যক্তি তার আপন দেহে উপলব্ধি করতে পারেন। পারেন নিজেকে কেরানের চরিত্রে রাঙিয়ে নিতে।
– আর এফ রাসেল আহমেদ