নারী কণ্ঠের গান শোনার বৈধতাঃ

নারী কণ্ঠের গান শোনার বৈধতাঃ

তিরমিযীর হাদিস :

عن بريدة خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم فى بعض مغازيه , فلما انصرف جاءت جارية سوداء , فقالت: يا رسول الله إنى كنت نذرت إن ردك الله سالما أن أضرب بين يديك بالدف وأتغنى , فقال لها رسول الله صلى الله عليه وسلم: إن كنت نذرت فاضربى , وإلا فلا فجعلت تضرب

“বুরাইদা বলেন, রাসূল এক যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে এক কৃষ্ণাঙ্গ নারীর সাক্ষাৎ লাভ করেন। সে রাসুলকে বলে, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি আল্লাহর কাছে মানত করেছি যে তিনি যদি আপনাকে সহি সালামত ফেরত আনেন, আমি আপনার সামনে দফ বাজিয়ে গান গাইব। আপনাকে বরণ করে নিব। রাসূল বললেন, যদি তুমি এমন পণ করে থাকো তবে পূরণ কর। অন্যথায় বাদ দাও।”

তুহফাতুল আহওয়াজি গ্রন্থকার এই হাদিস উল্লেখ করে বলেন,

وفي قولها وأتغنى دليل على أن سماع صوت المرأة بالغناء مباح إذا خلا عن الفتنة

“হাদিস থেকে প্রমাণ হচ্ছে যে, ফিতনা না থাকলে নারীর কণ্ঠে গান শোনা বৈধ।”

বুখারির হাদিস:

عن عائشة قالت دخل علي رسول الله صلى الله عليه وسلم وعندي جاريتان تغنيان بغناء بعاث فاضطجع على الفراش وحول وجهه ودخل أبو بكر فانتهرني وقال مزمارة الشيطان عند النبي صلى الله عليه وسلم فأقبل عليه رسول الله عليه السلام فقال دعهما فلما غفل غمزتهما فخرجتا وكان يوم عيد

“আয়েশা বলেন, রাসূল আমার ঘরে তশরিফ আনেন। আমার সাথে দুইজন দাসী ছিল। তারা বুয়াস যুদ্ধের গীত গাইছিল। নবিজি বিছানায় গা এলিয়ে দেন এবং অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নেন। এরপর আবু বকর ঘরে ঢোকেন এবং আমাকে ধমক দেন। বলে ওঠেন, সর্বনাশ! নবির সামনে শয়তানের বাদ্য! রাসূল এটা শুনে আবু বকরের দিকে মুখ করে বলেন, বাদ দাও তো। করতে দাও তাদের। অতঃপর আবু বকর অমনোযোগী হয়ে গেলে আমি মেয়ে দুইজনকে চোখ টিপে ইশারা করি। তারা বেরিয়ে যায়। ঐদিন ছিল ঈদের দিন।”

আল্লাহর রাসুলের ঘরে ঈদের দিন যেই দুইজন মেয়ে গান-বাজনা করেছিল তারা ছিল আনসারদের দুইজন দাসী। ফতহুল বারীতে বলা হয়েছে, একজন দাসী ছিল হাসসান বিন সাবেতের। অন্য বর্ণনায় আছে, দুইজনই ছিল আব্দুল্লাহ বিন সালামের দাসী।

এই ঘটনা উল্লেখ করে ইবনে হাজার আসকালানী রহ. পরনারীর কণ্ঠে গান শোনার অনুমতি থাকার দলিল উল্লেখ করে বলেন –

واستدل به على جواز سماع صوت الجارية بالغناء ولو لم تكن مملوكة لأنه – صلى الله عليه وسلم – لم ينكر على أبي بكر سماعه بل أنكر إنكاره واستمرتا إلى أن أشارت إليهما عائشة بالخروج . ولا يخفى أن محل الجواز ما إذا أمنت الفتنة بذلك ، والله أعلم .

“এই হাদিস থেকে দাসীর কণ্ঠে গান শোনার বৈধতার পক্ষে দলিল দেয়া হয়, চাই দাসী অন্যের হয়ে থাকুক। কেননা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কণ্ঠে গান শোনায় আবু বকরের উপর আপত্তি করেন নি। বরং আবু বকর তাদের বিরুদ্ধে আপত্তি করায় তিনি উল্টো আবু বকরের উপর আপত্তি করেছেন। যার ফলে মেয়ে দুজন তাদের সঙ্গীত অব্যাহত রাখে। অবশেষে আয়েশা তাদের চলে যেতে ইশারা করেন। আর জানা কথা যে, এটা তখনই বৈধ হবে যখন ফিতনার আশঙ্কা না থাকে। আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞাত।”

উল্লেখ্য : ফিৎনার আশঙ্কা থাকলে নারীর কণ্ঠে গান কেন কোরআন তিলাওয়াত শোনাও জায়েয নয়।

এখন কথা হল ফিৎনা অর্থ কী?

উত্তর:

هي ميل النفس ودعاؤها إلى الجماع أو مقدماته

“সহবাস বা সহবাস পূর্ব কর্মকাণ্ডের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হওয়া।”

(হাশিয়াতু বুজায়রমি আলাল খতিব)

– শেখ সাদী।

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel