কোন প্রেমে গুরু হয় ভবতরী, শিষ্য হয় তার কান্ডারী?
অমৃত জিজ্ঞাসা (পর্ব-০৬)
প্রশ্নঃ কোন প্রেমে গুরু হয় ভবতরী, শিষ্য হয় তার কান্ডারী?
উত্তরঃ
প্রশ্ন যারা বুঝেন নাই তাদের জন্য উদাহরন;
গুরুঃ “অভক্তরে আমি তরাই (পার করি)
আর ভক্তের মাঝে আমি তরী (পার হই)”।
যে গুরু সর্বজ্ঞানের অধিকারী এবং তিনি তাঁর ভক্তকে সঠিক শিক্ষাদানে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সে এমন গুরু যার মাধ্যমে একজন ভক্ত পার হতে পারবে। এমনকি সেই ভক্তকে পার করার জন্য সে তার সমস্ত জ্ঞান কাজে লাগাতে প্রস্তুত। কিন্তু সেই গুরুরই এমন একটা সময় আসলো যখন সে অনেক বড় একটা অপরাধ করে বসলো, আর সেই অপরাধ এতটাই মারাত্মক যে, দয়াল তার উপর ক্ষিপ্ত হল এবং স্থির করলো যে তাকে তার শাস্তিস্বরুপ আর কখনো মানবকূলে পাঠাবেন নাহ বা তাঁর কর্মই এমন যে তাকে পশু কূলেই জনম নিতে হবে, এমনকি সেক্ষেত্রে তার কোনোপ্রকার আকুতি মিনতিও দয়ালের দরবারে কবুল হল না। দয়াল তাকে তার সেই পাপের শাস্তি দিবেই যে শাস্তি তার প্রাপ্য।
এমতাবস্থায় একজন ভক্ত, যার ভেতর পঞ্চপ্রেম তথা তারও অধিক প্রেম কাজ করে সেই পারে তার গুরুকে উদ্ধার করতে। পঞ্চপ্রেম তথা অধিক প্রেম বলতে পঞ্চপ্রেম বিরাজ করেও আরো বেশি ভালবাসা বা টান যে প্রেমে কাজ করে সেই প্রেম। সেখানে দুনিয়াবী কোনো টান থাকবেনা শুধু গুরু ছাড়া।। সব ভালবাসার উর্দ্ধে যে ভালবাসাটা সেটাই বুঝায়। এমন প্রেম যে ভক্তের ভেতর থাকবে এবং সে তার দয়ালের নিকট এই বলে প্রার্থনা করবে যে, দয়াল আমি পরজন্মেও শুধু এই গুরুর কৃপাই চাই। তার চরণেই ঠাই চাই। এই গুরু ব্যতীত অন্য কোন গুরুর সান্নিধ্য আমি চাইনা।
অর্থাৎ সেই ভক্তের বাসনাই হবে এমন যে-
“দয়াল তোমার সনে প্রেম মরিয়া
আমার পরান ভরে নাই,
আমি আগেই নালিশ কইরা রাখি
আবার যেন আমি তোমার দেখা পাই।”
তখন প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ভক্তের অধীন হয়ে যান স্বয়ং দয়াল এবং সেই ভক্তের মনের বাসনা পূরণের জন্য হলেও পরজন্মে সেই গুরুকে মানবকূলেই পাঠান এবং তাও গুরুরুপেই। যাতে সে তার কর্মের দ্বারা পার হবার সুযোগ পায়। আর এভাবেই একজন ভক্ত তার গুরুকে পার করতে পারে।
তবে গুরুকে অবশ্যই একজন সদগুরু হতে হবে। গুরু কপট ও ভ্রান্ত হওয়া চলবে না। গুরু যদি ভ্রান্ত মনোভাবের-ই হয় তাহলে সে ভক্তকে কি শিক্ষা দিবে? সে নিজেই তো মূর্খ, ভন্ড। তার তো কোন জ্ঞানই থাকার কথা নয়। সে ভক্তকেও বা কিভাবে শিক্ষা দিবে?
লেখাঃ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমার মনের একজন মানুষ (জামালচর ছায়েদিয়া পাক দরবার শরীফ এর ভক্ত)