মুয়াবিয়ার অনুসারীরা ইমাম নাসাঈ (রহঃ)’কে শহীদ করেন
শহীদ ইমাম নাসাঈ রহ:’র ওফাত মুলুকিয়াত খুনী এজীদবাদ মুয়াবিয়াবাদের জনক মুয়াবিয়ার উপর চির লানতেরই ইশারা বহন করে। আজকের এ সময় কাল যুগটি ঠিক যেন ইমাম নাসাঈর সেই সময়কালীন হালেরই বাস্তব চিত্রায়ন — আজ যেমনি ইয়া মুয়াবিয়া ইয়া মুয়াবিয়া বে গুনাহ বে খতাহের শ্লোগানে আকাশ বাতাস দূষিত হচ্ছে। পক্ষান্তরে মাওলায়ে আলাকে মদখোর (নাউজুবিল্লাহ) বানিয়ে আহলে বায়েতের তহারতকে কলূষিত করার মহড়া বিদ্যমান। ঠিক তেমনি ইমাম নাসাঈর সে সময়কালটির বহু আগে থেকেই চলছিলো আকাশে বাতাসে মুয়াবিয়ার বন্দনাগীতি এবং আহলে বায়েত আলাইহিমুস সালামদের প্রতি তীব্র কটাক্ষের স্টীম রোলার।
সে সময়টিতে খুনী কাতিলে সাহাবী বাগী মুরতাদ মুয়াবিয়াকে নিয়ে কেউ কোন আওয়াজ তুললে যেভাবে দমন করা হতো খঞ্জরের আঘাতে আজ তেমনি সেই খঞ্জরই দৃশ্যমান হচ্ছে খঞ্জরে তাকফীর আর শিয়া (লাফজে মুবমালের মতোই বানোয়াট ভিত্তিহীন এক শব্দ) অপবাদের ফতোয়ার আদলে। এ ধরণের ফতোয়ার খঞ্জর দিয়েই আজ হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে।
বাগী মুয়াবিয়ার ক্যান্টমেন্টখ্যাত স্পস্ট — উমাইয়্যাদের শাসনে চলা শত শত বছরের শামের এরিয়াতে ইমাম নাসাঈ রহ: বিভিন্ন জলসা মাহফিলে আমিরুল মুমিনিন সাইয়্যেদেনা মাওলা আলী (আলাইহিস সালাম) এর শান ও মান বয়ানে ব্রত ছিলেন খুব জোড়ালোভাবে। বয়ানে বয়ানে মাওলা আলীর শানে জিকরে মুয়াবিয়ার হাদীস শরীফ সমূহের অমীয়ধারা বাধভাংগা জোয়ারের মতো ফুড়ে ফুড়ে নুরে নুরে আন্দোলিত করছিলো স্রোতাদের ঈমানী আত্মাসমূহকে, ইমাম নাসাঈ রহ: যে কিতাবটি থেকে হাদীস শরীফ সমূহ পড়ে পড়ে শুনাতেন সেই কিতাবটি সম্মানিত ওনারই লিখিত — ‘কিতাবুল খাছায়িছ ফী ফাযলে আলী ইবনি আবী তালিব ওয়া আহলিল বায়ত’ কিতাব।
ঠিক এমনি সময়ে মুয়াবিয়ার প্রেতাত্মারা ইমাম নাসাঈ রহ:’কে জোড় করতে লাগলো এই বলে যে — “আপনি মুয়াবিয়ার শানে ফজীলত পূর্ণ হাদীস শরীফ অবশ্যই বয়ান করুন।” ইমাম নাসাঈ তখন শেরের মতো সেই মুলুকিয়াতের উমাইয়া শাসনিক সময়ের অগ্নির দাবানলে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন “মুয়াবিয়ার শানে কোন ফজীলতপূর্ণ হাদীস বিদ্যমান নেই।”
লএলামুল মুহাদ্দীসিন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে ইমাম নাসাঈ আশেকে মুয়াবিয়া তথা মুয়াবিয়ার প্রেতাত্মাদের সামনে মুলুকিয়াতের ধারক বাহকদের সামনে এ কথা বলেছিলেন, “মুয়াবিয়ার জন্যে কি এটা যথেষ্ট নয় যে তিনি ফজীলতের হাদীস থেকে হামেশা বাদ পরে যাবেন?” এ কথা বলার পরেই — “ধর ধর — শিয়া শিয়া” বলে ইমাম নাসাঈর উপর উমাইয়্যারা নিষ্ঠুরভাবে পশুর মতো হামলে পরে, সে আঘাতের রেশ নিয়ে ইমাম নাসাঈ চরমভাবে আহত হয়ে শাম থেকে বের হয়ে ফিলিস্তিনের রামলাহ শহরে চলে আসেন এবং সেখানেই এ মহান ইমাম ইমাম নাসাঈ রাহিমাহুল্লাহ এ আঘাতের জেড়েই শাহাদাত বরণ করেন।
– বুস্তানুল মুহাদ্দিসীন/তাহজীবুত তাহজীব। ; হাফেয যাহাবী ‘তাযকিরাতুল হুফ্ফায’।
লেখাঃ মাওলানা শোয়ায়েব হুসাইন মোল্লা।