হোমপেজ মুয়াবিয়া প্রসঙ্গ মুয়াবিয়াকে হক মনে করা মানে মাওলা আলীকে অবমাননা করা!

মুয়াবিয়াকে হক মনে করা মানে মাওলা আলীকে অবমাননা করা!

367

মুয়াবিয়াকে হক মনে করা মানে মাওলা আলীকে অবমাননা করা!

সাহাবীদের একটা সংজ্ঞা তৈরি করা হয়েছে। (মানুষের তৈরি সংজ্ঞা) “রাসূল (সঃ)-কে জীবদ্দশায় দেখেছেন এবং এই বিশ্বাস নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন যে, তিনি আল্লাহর প্রেরিত নবী এবং তা মুখে স্বীকার করেছে, এমন ব্যক্তিকে সাহাবী বলা হয়।” সেই হিসেবে রাসূলের লক্ষাধিক সাহাবী ছিল। অর্থাৎ জাজিরাতুল আরবের অধিকাংশ মানুষই তখন মৌখিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েই ইসলাম গ্রহন করেছিল।

আচ্ছা, তখন বিচার হতো অনেকের। যাদের বিচার হতো, তারা সবাই ত অমুসলিম ছিলেন না। কিছু মুসলিমও ছিলেন। কারন চুরির কারনে শুধু যদি অমুসলিমদের হাতই কাটা হতো তাহলে রাসূল (সঃ) কে নিয়ে অনেক সমালোচনা হতো। তাছাড়া সেটা ন্যায় বিচারও হতো না। রতে বুঝা যায় যে, এই বিধান সবার জন্য সমান ছিল। অর্থাৎ অনেক মুসলিমদের হাতও কাটা হয়েছে বা অনেক মুসলিমকেই শাস্তি দেওয়া হয়েছে অপরাধের জন্য। যেহেতু তারা মুসলিম ছিল এবং রাসূলের জীবদ্দশায়ই তারা মুসলিম ছিল, সেহেতু তারাও ত সাহাবীই ছিল। মুসলিমদের তখনকার শাস্তির ব্যাপারে দলীল ভাল দিতে পারবেন আমাদের আলেম-ওলামারা।

একজন জেনাকারিণী মুসলিম নারীর ঘটনাত সবাই জানেনই। তিনিও ঈমান এনেছিলেন। অর্থাৎ তাকে যখন পাথর মেরে হত্যা করা হয়, তখন কিন্তু তিনি সাহাবীই ছিলেন। তাঁর তওবার ব্যাপারেও রাসূল (সঃ) পজিটিভ মন্তব্য করেছিলেন।

মুয়াবিয়াকে সাহাবী মানাই যায়। কারণ মুয়াবিয়া মুখে স্বীকার করেছিল আল্লাহ ও রাসূলকে। আর সাহাবীদের (মানুষের তৈরি) সংজ্ঞানুযায়ী সেও একজন সাহাবী।

কিন্তু, মুয়াবিয়াকে আমির বা খলিফা কিভাবে মানবো? মুয়াবিয়া ত জোর করে ক্ষমতা দখল করেছিল। এটা ত মিথ্যা না। এই বিষয়টায় দুনিয়ার সব আলেম একমত। যদি মাওলা আলী (আঃ) তখন খলিফা হয়ে থাকেন, তাহলে খলিফারল বা আমিরের আনুগত্য থেকে কি মুয়াবিয়া সরে গিয়েছিল। একজন সাহাবী ক্ষেত্রে কি আমিরের আনুগত্য ত্যাগ করার সুযোগ আছে? তাও আবাত ক্ষমতা জোর করে নিয়ে নেওয়ার জন্য? মাওলী আলী যদি অযোগ্য হতেন, তাহলে মুয়াবিয়ার জোর করে ক্ষমতা দখলকে স্বাগমত জানানো যেত। কিন্তু দুনিয়ার কোনো আলেম কিন্তু বলে নাই যে, মাওলা আলী অযোগ্য ছিল। একজন যোগ্য ও বৈধ খলিফার আনুগত্য না করলে ত ঈমানই থাকার কথা না রাসূলের হাদীস অনুযায়ী। তবে মুয়াবিয়া যেহেতু রাসূলের জীবদ্দশায় মুসলিম ছিল, তাই তর্কের খাতিরে তার ঈমানদারই মেনে নেওয়া অযৌক্তিকও নয়। কিন্তু তাকে আমির বা খলিফা মানা কিভাবে সম্ভব? তাও মুমিনদের আমির, খাঁটি মুমিনদের আমির।

যেকোনো দেশেই হোক, জোর করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করলে কি কোনো দেশপ্রেমিক সেই দল এবং ব্যক্তিকে সরকার হিসেবে মেনে নেয়? না, নেয় না। যারা মেনে নেয়, তারা দেশপ্রেমিক নয়। এগুলো সবাই বুঝে। কিন্তু মুয়াবিয়া যে অবৈধভাবে বৈধ খলিফার আনুগত্য ত্যাগ করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে নেয়, এইভাবে যে ইসলামী খলিফা বা মুমিনদের আমির হওয়া যায় না, এটা অতিজ্ঞানীরা বুঝেনা।

মুয়াবিয়াকে যদি কেউ আমির হিসেবে মেনে নেয়, সে নিশ্চিয়ই মাওলা আলীকে খলিফা হিসেবে অমান্য করে। কারন একজন বৈধ হলে ত অন্যজন অবৈধই। দুজন ত আর বৈধ নয়। এখন মুয়াবিয়াকে নিজেদের আমির ঘোষণা দেওয়া আলেমরা মাওলা আলীকে অবৈধ্য ষোষণা করছে। কিন্তু মুখে বলছে যে, তারা মাওলা আলীকেও খলিফা মানে। এটা কিন্তু হাস্যকর। এক্ষেত্রে যেসব আলেমরা মুয়াবিয়াকে আমিরে মুয়াবিয়া বলছে, তারা কি আসলেই মুমিন বা মুসলমান আছে??? এটা সাধারন মানুষ জ্ঞান খাটালেই বুঝতে পারবেন।

এখন অনেকেই আবার বলে উঠবে যে, সাহাবীদের সমালোচনা করা যায় না। তাই চুপ থাকাই ভাল। তাদের জন্য কিছু কথা।

রাসূলের জমানায় যেসব মুসলিম সাহাবীরা অপরাধের শাস্তি পেয়েছিল, সেগুলো কি এখনও আলোচনা করা হয় না? জেনা করার কারণে সেই নারী সাহাবীর ঘটনা কি হাদিসগ্রন্থে উল্লেখ নেই, সেইসব ঘটনা কি আলেমরা ওয়াজ মাহফিলে বলে না? তাহলে মুয়াবিয়ার দোষ নিয়ে আলোচনা করলে এতো গাঁয়ে লাগে কেন? এই থেকে কি বুঝা যায় না যে, অবৈধ আমিরকে বৈধ করার জন্য দালালী করছে কিছু আলেম।

কেউ স্পষ্ট ভুল করলে, তা বললে মন্দ কি? বরং না বলাটাই ত অন্যায়। এসব ক্ষেত্রে ত এতো দলীলের প্রয়োজন নেই। মুয়াবিয়ার নামে মিথ্যাচার করা হলে তা অন্যায়, আজাজিল শয়তানের নামেও যদি কেউ মিথ্যাচার করে, সেটাও অন্যায়। কিন্তু সত্য বলা ইসলামে নিষেধ কিভাবে? আমরা ত জানি এরকম ক্ষেত্রে সত্য গোপন রাখাই অন্যায়।

যা ই হোক, দলীল দিয়ে কাউকে মানানো যায় ন। তাই তর্ক কোনো কাজে আসে না। সবাই আপন আপন চিন্তাকেই প্রাধান্য দেয়।

-DM Rahat