উমাইয়ারা যেভাবে মানুষকে আলী বিদ্বেষী করে তুলেছিল
উমাইয়ারা যেভাবে পরিকল্পিতভাবে মানুষকে হযরত আলী বিদ্বেষী করে গড়ে তুলেছিল:
সিরিয়ায় উমাইয়া খলিফাদের লোকেরা শিশুদের মাঝে ভেড়া-ছাগলের বাচ্চা বিতরণ করতো। শিশুরা কিছুদিন সেগুলো নিয়ে খেলার পরে একদিন চুপিচুপি এসে উমাইয়ারা সেগুলো নিয়ে চলে যেত এবং শিশুরা ভেড়া-ছাগলের বাচ্চা হারিয়ে কান্নাকাটি করলে তারাই আবার প্রচার করতো যে, সেগুলোকে “আলী” নিয়ে গিয়েছে। এর কারণে শিশুদের মনে উমাইয়া রাজারা দাতা ও দয়ালু হিসেবে স্থান পেত পক্ষান্তরে হযরত আলীকে জালেম ও সন্ত্রাসী বলে মনে হতো।
উমাইয়ারা এভাবে পরিকল্পিতভাবে মানুষকে হযরত আলী বিদ্বেষী করে গড়ে তুলেছিল। যার কারণে সিরিয়াসহ অন্যান্য এলাকার মানুষের কাছে “আলী” নামটা অনেক খারাপ ছিলো। এমনকি উমাইয়ারা মসজিদের খুতবায় হযরত আলীকে গালি-লানত দেয়ার প্রচলন করেছিল যা দ্বিতীয় শতাব্দীর শুরুর দিকে উমাইয়া খলিফা ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ এসে বন্ধ করেন।
বছরের পর বছর উমাইয়াদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত সিরিয়াবাসীর কাছে হযরত আলীর সঠিক পরিচয় ও ফজিলত তুলেধরতেই সিহাহ সিত্তার ‘সুনান আন নাসায়ী’ – এর লেখক ইমাম নাসায়ী রচনা করেন “খাসায়েসু আমিরিল মুমেনীন” নামে একটা কিতাব। এবার সিরিয়াবাসী এসে তাঁকে ধরেন অনুরূপ একটা কিতাব উমাইয়া রাজার নামে সংকলন-রচনা করতে। হযরত নাসায়ী তাদের বলেন, উমাইয়া রাজার প্রশংসাসূচক হাদীসের সংখ্যা এত কম যে তা দিয়ে বই লেখা সম্ভব নয় ভিন্ন বর্ণনামতে, তিনি বলেছিলেন, তার প্রশংসাসূচক কোনো হাদীস নেই বরং নিন্দাসূচক হাদীস আছে বলেই তিনি জানেন।
একদিন সিরিয়ার জামে মসজিদের মিম্বারে ইমাম নাসায়ী হযরত আলীর ফজিলত সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করছিলেন, এমন সময় হযরত আলী-আহলে বাইত বিদ্বেষী উমাইয়া রাজতন্ত্রের সমর্থকরা তাঁকে পাথর মেরে রক্তাক্ত করে এবং তিনি আহত হয়ে এই সফর মাসের ১৩ তারিখ ফিলিস্তিনের রামাল্লায় বা মক্কায় ইন্তেকাল করেন। ইমাম নাসায়ী জন্মগ্রহণ করেছিলেন পারস্যের খোরাসান অঞ্চলের নাসা শহরে।
– আবু সালেহ