রাসূল (সাঃ) স্বয়ং মোয়াবিয়াকে লানত দেওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন।

রাসূল (সাঃ) স্বয়ং মোয়াবিয়াকে লানত দেওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন।

দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) স্বয়ং মোয়াবিয়াকে লানত দেওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। তাকে কোন বিবেকের মাথা খেয়ে জলিল কদর সাহাবী বলবো।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ بَشَّارٍ، – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا أُمَيَّةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ الْقَصَّابِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ كُنْتُ أَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَوَارَيْتُ خَلْفَ بَابٍ – قَالَ – فَجَاءَ فَحَطَأَنِي حَطْأَةً وَقَالَ ‏”‏ اذْهَبْ وَادْعُ لِي مُعَاوِيَةَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَجِئْتُ فَقُلْتُ هُوَ يَأْكُلُ – قَالَ – ثُمَّ قَالَ لِيَ ‏”‏ اذْهَبْ وَادْعُ لِي مُعَاوِيَةَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَجِئْتُ فَقُلْتُ هُوَ يَأْكُلُ فَقَالَ ‏”‏ لاَ أَشْبَعَ اللَّهُ بَطْنَهُ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى قُلْتُ لأُمَيَّةَ مَا حَطَأَنِي قَالَ قَفَدَنِي قَفْدَةً ‏.‏
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত:- তিনি বলেন, “একদা আমি বালকদের সাথে খেলায় লিপ্ত ছিলাম। তখন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) সেখানে আসলেন। তখন আমি একটি দরজার পিছনে লুকিয়ে থাকলাম। তিঁনি আমাকে তাঁর হাতকে চাপড়ে বললেন, যাও, মু’আবিয়াকে আমার কাছে ডেকে আনো। তখন আমি তার নিকট গেলাম এবং বললাম, তিনি খাচ্ছিলেন। আমি ফিরে আসলাম। তারপর রাসূল পাক (সাঃ) আবার আমাকে বললেন যাও, মু’আবিয়াকে আমার নিকট ডেকে নিয়ে আসো। তিঁনি আবার বললেন, তাকে ডেকে নিয়ে এসো, তখন আমি তার নিকট গেলাম এবং এসে বললাম, তিনি খাচ্ছেন। তখন রাসূল পাক (সাঃ) বললেন, আল্লাহ্ তার পেটভর্তি করবে না। (সহি মুসলিম, হাদীস নং-৬৩৯০)।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে আবু লাহাব এবং তার স্ত্রীকে লানত দিয়ে বলছেন, তাদের হাত ধ্বংস হোক। তাই লানত দেওয়া কখনো দোষের কিছু নয় বরং ইহা ফরজ কাজ। যিনি দয়াল রাসূল (সাঃ) এর আদর্শ ও চরিত্র হৃদয়ে ধারণ করে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত দয়াল রাসূল (সাঃ) এবং আহলে বাইতের গোলামি করছেন, তিঁনিই মুমিন সাহাবী। দয়াল রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি তার পিতামাতা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান, ভাইবোন, ধনসম্পদ এবং নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতে না পারবে, সে ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না। মুমিন হওয়ার মানদন্ডই হলো দয়াল রাসূল (সাঃ) কে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে। নচেৎ জীবনেও মুমিন হওয়া যাবে না বরং মোনাফেক হতে হবে। ওহুদ যুদ্ধের ময়দানে ছয়জন নাম না জানা সাহাবী দয়াল রাসূল (সাঃ) কে বাঁচাইতে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে শতশত তীর বুক পেতে নিয়েছিলো। তাঁরা দয়াল রাসূল (সাঃ) কে চারিদিকে বেষ্টনী দিয়ে নিজেদের বুকে তীর নিয়ে দয়াল রাসূল (সাঃ) কে বিন্দুমাত্র আঁচড় লাগতে দেয়নি। হযরত আফিফা (রাঃ) স্বামী, সন্তান, পিতা এবং ভাইয়ের শহীদ হওয়ার সংবাদ শুনার পরও টলাতে পারেনি বরং আলহামদুলিল্লাহ বলেছিলো। শুধুমাত্র আফিফা পাগলের মতো জানতে চেয়েছিলো আমার দয়াল রাসূল (সাঃ) কেমন আছে।

হযরত জাবের (রাঃ) ও তাঁর স্ত্রী তাদের দুটি সন্তান মারা যাওয়ার পরও, চোখের জল না ফেলে হাসিমুখে দয়াল রাসূল (সাঃ) কে মেহমানদারি করিয়াছিলো। মোটকথা মুমিন সাহাবীরা দয়াল রাসূল (সাঃ) কে পাগলের মতো ভালোবাসতো। এই জন্যই এসব সাহাবীরা আকাশের নক্ষত্র তুল্য হয়েছে। আর মোনাফেক সাহাবীরা নর্দমার ডাস্টবিনে নিক্ষপ্ত হয়েছে।

উপরের হাদিসটি দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, দয়াল রাসূল (সাঃ) পরপর তিনবার মোয়াবিয়াকে ডেকে পাঠায়। কিন্তু মোয়াবিয়া দয়াল রাসূল (সাঃ) এর ডাকে সাড়া না দিয়ে বরং তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে খাবার চালিয়ে গেছে। অবশেষে দয়াল রাসূল (সাঃ) লানত দিয়ে বলে, আল্লাহ যেনো মোয়াবিয়ার পেট না ভরায়। আর দয়াল রাসূল (সাঃ) জীবনে কখনো আল্লাহর হুকুম ছাড়া একটি কথা বলেননি। তাই দয়াল রাসূল (সাঃ) এর মুখের বাণী চির অম্লান। তাই পরবর্তীতে মোয়াবিয়া জীবনে যতই খাবার খেয়েছে কিন্তু কখনো পেট ভরেনি। আর হাকিকতে মোয়াবিয়া যতই আহলে বাইতের বিরোধিতা করছে কিন্তু মন ভরেনি।

তাই তো মোয়াবিয়া মাওলা আলী এবং মাওলা ইমাম হাসানের সাথে যুদ্ধ করেই মন ভরেনি বরং ভাড়াটে খু*নি দিয়ে তাঁদেরকে হ*ত্যা করিয়েছে। একবার চিন্তা ভাবনা করুন, কতোবড় বেয়াদব হলে দয়াল রাসূল (সাঃ) এর ডাকে সাড়া না দিয়ে খাবার চালিয়ে গেছে। এরচেয়ে বড় অপমান আর কি হতে পারে? অথচ দয়াল রাসূল (সাঃ) এর ডাকে সাড়া দিয়ে নববিবাহিতা স্ত্রীকে বাসর ঘরে রেখেই যুদ্ধে চলে গিয়ে হযরত হানযালা (রাঃ) শহীদ হয়েছে। আর মোয়াবিয়া সামান্য খাবার রেখে আসতে পারলো না। এখন আপনারা বলুন তাকে আমরা কিভাবে মুমিন সাহাবী বলতে পারি? আরে ভাই বিবেক তো কারোর নিকট ইজারা দেয়নি এখনো। একজন বদ্ধ উন্মাদ পাগলও এই সামান্য কথাটি বুঝতে সক্ষম হবে।

আপনি যদি আপনার সন্তানকে বারবার ডাকার পরও সাড়া না দিয়ে খাবার খায়, তখন আপনি নিশ্চয়ই তাকে ভালো বলবেন না বরং বেয়াদব বলবেন। আচ্ছা আমরা যারা পীরের মুরিদ হয়েছি, তাদের বিবেকের নিকট একটি প্রশ্ন করি। আপনার পীর যদি পরপর তিনবার ডাকে, তখনও কি আপনি খাবার চালিয়ে যাবেন নাকি দৌঁড়ে গিয়ে পীরের সামনে হাজির হবেন। কারণ পীরের হুকুম পালন করা ফরজ। তাহলে দয়াল রাসূল (সাঃ) এর হুকুম পালন করা শুধু ফরজ নয় বরং ফরজে আজম হবে। মূলত মোয়াবিয়া দয়াল রাসূল (সাঃ) কে আমাদের মতো একজন সাধারণ মানুষ মনে করেছিলো এবং চরমভাবে অপমান করেছিলো। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় আমাদের মোয়াবিয়াপন্হী সুন্নি ভাইয়েরা বলে, দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) নাকি ঠাট্টা করে বলেছিলেন মোয়াবিয়ার পেট ভরবে না।

এরা মোয়াবিয়াকে বাঁচানোর জন্য অবশেষে দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) কে অপবাদ দিতে কুন্ঠবোধ করলো না।হায় হায় এরচেয়ে বড় অপমান আর কি হতে পারে? দয়াল রাসূল পাক (সাঃ) আমাদেরকে ঠাট্টা ও বিদ্রুপ করতে নিষেধ করছেন। তাহলে বলুন সেই রাসূল পাক (সাঃ) কিভাবে নিজে ঠাট্টা করতে পারে? মূলত এরাও দয়াল রাসূল (সাঃ) কে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ মনে করে। নাউজুবিল্লাহ। নচেৎ কখনো এমন ঈমান বিধ্বংসী কথা বলতে পারতো না। আমরা যখনই এই মহাসত্য কথা তুলে ধরি, তখনই তারা আমাদেরকে শিয়া উপাধি দিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা চালায়। এই মুখস্থ বুলি আর ভাঙ্গা সারিন্দা কতোদিন বাজাবে, তা আমাদের জানা নেই। শুধু আফসোস হয় এদের হীনমন্যতা, অজ্ঞতা এবং বিবেকহীন অযাচিত কর্মকান্ড দেখে। মানুষ যখন হেদায়েতের আলো থেকে বিচ্যুত হয়, তখন সে অন্ধকারেই পথ চলে। তাই সে সবাইকে নিজের মতো অন্ধ ভাবতে শুরু করে। জ্ঞানসিন্ধু যার উদয় হয়নি, সে কিভাবে আলোর পথ খুঁজে পাবে? তবুও মহান আল্লাহর নিকট ফরিয়াদ জানাই, এদেরকে যেনো হেদায়েত নসিব করে। লানত আহলে বাইতের দুশমন মোনাফেক মোয়াবিয়ার উপর।

নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।