জ্ঞান অর্জন করতে সদূর চীন দেশ হলেও যাও- এ কথার মর্মার্থ
হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:-
“জ্ঞান অর্জন করতে সদূর চীন দেশ হলেও যাও, কেননা ইলম অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ।”
[দলীলঃ আল জামিউছ ছগীর লিস সূয়ুুতি ১ম খন্ড ১৬৮ পৃষ্ঠা-হাদীস শরীফ নং ১১১০, শুয়াবুল ঈমান লি বায়হাকী ২য় খন্ড ২৫৪ পৃষ্ঠা, হাদীস শরীফ নং ১৬৬৩,তারিখে বাগদাদ ৭/৩৬৪ ,কানযুল উম্মাল ১০/১৩৮, ২৮৬৯৭]
জ্ঞান অর্জন করতে সূদূর চীন দেশে যাওয়ার আহবান করা হয়। এই কথা মালার মধ্যে আমরা কি বুঝতে পাই?
চীন দেশ বলতে কি দূর দেশ চায়না কে বুঝানো হয়েছে? না। ঐ চীন দেশ আর এই চীনদেশ এক নয়।
এই কথার মূল অর্থ হলো- যার যার আপন দেহটাই হলো অচিন বা চীন দেশ। এই দেহে একজন রাজা বাস করে। সেই রাজাই হলো অচিন, যে তাকে চিনতে পারে না তার নিকটে। তাকে চিনতে হবে, আর তাকে চেনার জন্য একজন জ্ঞানী বা তাকে চেনা লোকের নিকটে আত্মসমর্পণ করতে হবে। যখন সে ঐ চেনা লোককে ধরে অচিন রাজার সন্ধান পায় তখন সে চৈতন্য জ্ঞান অর্জন করে।
যে চিনেছে অচেনাকে তার নিকটে আর চীন দেশ দূরে নয়। অচেনাকে যে চিনতে পারে নাই তার নিকটে চীনদেশ বহু দূরে রয়। যে এই রাজা কে চিনতে পারেনাই তার নিকটে তাহা দূর দেশ বা অচিন দেশ।
তাই তো লালন সাঁই জি তার কলামে লিখেছেন-
খাচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়।
তাকে ধরতে পারলে মনভেরী দিতাম পাখির পায়।
যে এই পাখি ধরতে পেরেছেন, তার নিকটে সামনে পিছনে ডানে-বামে যে দিকে তাকায় সেদিকেই তার চীন দেশ।