মুহাম্মদ সা: এর আগমন বার্তা-বিভিন্ন ধর্মের মহাগ্রন্থে
প্রথম পর্বঃ
সকল প্রশংসাই সেই মহান রাব্বুল আলামিন এর, যিনি অত্যন্ত দয়া করে আমাদেরকে তাঁর প্রিয় হাবিব সারওয়ারে কায়েনাত, মুফাখখারে মাওজুদাত, তাজেদারে মাদীনা, রাহমাতাল্লিল আলামিন, শাফীয়াল মুজনবিন, আহমদ মুজতাবা, হযরত মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাঃ এর উম্মত হিসেবে জগতের বুকে প্রেরণ করেছেন।
মহান রাব্বুল আলামিন জগত সৃষ্টির শুরু থেকেই তাঁর প্রিয় সৃষ্টি মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য যুগে যুগে সকল সম্প্রদায়ের জন্যই পথ প্রদর্শক হিসেবে নবী রাসুল বা অবতার পাঠিয়েছেন। তাঁরই প্রতিনিধি করে ঐ সকল সম্প্রদায়ের ভেতর থেকেই তাঁর পছন্দনীয় কাউকে।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ সূরা ফাতিরের ২৪ নং আয়াতে এরশাদ করেছেন-
“এমন কোন সম্প্রদায় নেই যেখানে আমি সতর্ককারী পথ প্রদর্শক পাঠাইনি।”
সূরা রাদ এর ৭ নং আয়াতে এরশাদ করেছেন-
“প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যই আমি পথ প্রদর্শক পাঠিয়েছি।”
এমনই ভাবে এই পৃথিবীতে মহান আল্লাহ পাক এক লক্ষ মতান্তরে দুই লক্ষ তেইশ হাজার নয় শত নিরানব্বই জন নবী রাসুল বা অবতার পাঠিয়েছেন। তবে পবিত্র কুরআনে সর্বমোট পঁচিশ জন নবী-রাসুলের নাম তিনি উল্লেখ করেছেন।
প্রায় দুই হাজারেরও বেশি ধর্ম রয়েছে আমাদের বর্তমান এই পৃথিবীতে। ঐ সকল নবী-রাসুলগণের মধ্যে কেউ কেউ প্রেরিত হয়েছেন শুধুমাত্র তাঁর নিজ গোষ্ঠি বা সম্প্রদায়ের হেদায়েতের জন্য, কেউ প্রেরিত হয়েছেন একটি গ্রামের জন্য, কেউ বা একটি দেশের জন্য, কেউবা আবার একটি উপমহাদেশ বা মহাদেশের মানুষদের হেদায়েতের জন্য।
তবে, মহান আল্লাহ পাক আমাদের প্রাণাধিক প্রিয় নবীজি হযরত মুহাম্মাদ সাঃ কে প্রেরণ করেছেন সমগ্র মানব জাতির হেদায়েতের জন্য রহমত স্বরূপ।
সূরা সাবা এর ২৮ নং আয়াতে মহান আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন-
“হে নবী, আমি তো তোমাকে প্রেরণ করেছি সমগ্র মানব জাতির জন্য সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী হিসেবে।”
আমরা যে একশত চারটি আসমানী কিতাবের কথা জানি, তার একশত তিনটি কিতাবই নাজিল হয়েছে আমাদের প্রিয় নবীজি হযরত মুহাম্মাদ সাঃ এর আগমনের পূর্বেই। অথচ,পূর্বের ঐ সকল আসমানী কিতাবেই সুস্পষ্ট ভাবেই উল্লেখ রয়েছে আমাদের প্রিয় নবীজি সাঃ এর শুভাগমন বার্তা। শুধু আগমনের তথ্যই নয়, বরং নবীজি সাঃ কখন জন্মগ্রহন বা আগমন করবেন, কোথায় হিজরত করবেন, কোথায় থাকবেন, কি আহার করবেন, তাঁর আচার-আচরণ, ওঠা-বসা, কথা-বার্তা কেমন হবে, তাঁর স্বভাব চরিত্র কেমন হবে, তাঁর জীবন-যাপন, তাঁর বিভিন্ন কর্মকান্ড, এমন কি তাঁর শুভাগমন থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত সার্বিক বিষয়াবলী পূর্বে নাজিলকৃত ঐ সকল আসমানী কিতাব বা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ সমূহে আলোচিত হয়েছে।
ইনশাআল্লাহ, পূর্ববর্তী ঐ সকল ধর্মগ্রন্থে উল্লেখিত আমাদের প্রিয় নবীজি সাঃ এর শুভাগমন বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী গুলি এই নিবন্ধে আলোচনা করার চেষ্টা করব। তবে এ প্রসঙ্গে প্রিয় পাঠকগণকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এই নিবন্ধে কোন ধর্ম বা ধর্ম সম্প্রদায় বা ধর্মগ্রন্থকে আরও বেশি সম্মান প্রদর্শণ ছাড়া হেয় প্রতিপণ্ণ করার কোন অবকাশ নেই।
প্রিয় পাঠক, প্রথমেই বৌদ্ধ ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ ত্রিপিটকে উল্লেখিত প্রিয় নবীজি সাঃ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী তুলে ধরার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
বি: দ্র:
প্রিয় পাঠক, এই ধারাবাহিক রচনায় সুস্পষ্ট ভাবেই প্রতিয়মান ও প্রমাণিত হয় যে, উল্লেখিত ধর্ম সমূহ চির সত্য ধর্ম এবং ধর্ম গ্রন্থ সমূহও চির সত্য মহা পবিত্র ধর্ম গ্রন্থ। হাজার হাজার বছর পূর্বেই ঐ সকল পবিত্র গ্রন্থ সমূহে সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ মহা মানব নবীজি হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর শুভাগমন বার্তা সন্নিবেশিত থাকায় উল্লেখিত ধর্ম এবং ধর্ম গ্রন্থ সমূহ আরও বেশি পরিপুষ্ট ও সমৃদ্ধশালী হিসেবে স্থান লাভ করেছে।
পর্ব চলমান…
নিবেদক: Fakhrul Chondropuri