নূরে মোহাম্মদীর আদি কথা।
নূরে মোহাম্মদীর আদি কথা, জানতে হয় ভক্তি ও বিশ্বাস নিয়ে। যে মজেছে সে পেয়েছে।
আমার মহান আল্লাহ নিজেকে প্রকাশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। কারণ আল্লাহ ছিলেন গুপ্ত ধনাকার। একাকী নিঃসঙ্গতা অনুভব করতে লাগলেন। সেই প্রয়াস থেকেই নিজের নুরকে দুই খন্ডে বিভক্ত করলেন। একখন্ডের নিজের নাম দিলেন আহমদ এবং অপর খন্ডের নাম দিলেন মুহাম্মদ। আবার নুরে মোহাম্মদী খন্ডকে বিভক্ত করে সাথে সাথে মাওলা আলী, মা ফাতেমা এবং মাওলা ইমাম হাসান ও হোসাইনকে সৃষ্টি করলেন। তারপর নুরে মোহাম্মদী খন্ড থেকে সমগ্র সৃষ্টি জগৎ তৈরি করলেন।
রাসূল পাক সঃ আল্লাহর নাম রাখলেন আর আল্লাহ মুহাম্মদ সঃ এর নাম রাখলেন। আল্লাহর আহমদ নামের অর্থ হলো প্রশংসাকারী। আর মুহাম্মদ সঃ এর নামের অর্থ প্রশংসনীয়। অর্থাৎ যাঁকে প্রশংসা করা বাধ্যতকমূলক। আল্লাহ তাঁর সমস্ত ক্ষমতা মুহাম্মদ সঃ এর কাছে ন্যাস্ত করে হয়ে গেলেন রাসূলের নামে গুণকীর্তন প্রশংসাকারী। সেই যে প্রশংসায় মগ্ন হলেন, সেই প্রেমময় মগ্নতার ঘোর এখনো কাটেনি। আর এই প্রেমময় ঘোর কখনো কাটবে না বরং চিরস্থায়ী অপরিবর্তিত।
এই জন্যই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে সূরা ফাতেহায় ঘোষণা করলেন, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর। অথচ আল্লাহ নিজেই মুহাম্মদের প্রেমে প্রশংসাকারী রুপে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করছেন। তাহলে এই সমস্ত প্রশংসা কার জন্য সৃষ্টি করছেন। নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সঃ এর জন্য। কারণ মুহাম্মদ সঃ এর অর্থই হলো প্রশংসনীয়। আল্লাহর সমস্ত নামগুলো ঘেটে দেখুন, কোথাও প্রশংসাকারী নাম খুঁজে পান কিনা? কারণ একমাত্র প্রশংসাকারী নাম হলো মুহাম্মদ সঃ এর জন্য।
এটা কিন্তু আমি কিংবা আমরা দিইনি। বরং এই নাম স্বয়ং আল্লাহ দিয়েছেন এবং নিজেই মুহাম্মদের প্রেমে এশকে দেওয়ানা হয়ে নিজেকে প্রশংসাকারী রুপে আত্মপ্রকাশ করছেন। তাহলে আমরা কেনো মুহাম্মদের প্রশংসা করতে কার্পণ্য করি। এতে কি আমরা লাভবান হব নাকি ক্ষতিগ্রস্ত? ভাবনাটা আপনার উপর ছেড়ে দিলাম। কারণ বিবেক বুদ্ধি জ্ঞান সম্পন্ন লোক গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করে উপনীত সিদ্ধান্ত নেয়।
আচ্ছা আমি একটি উদাহরণ দিই, একটি আপেলকে দুই খন্ড করলে কি একটির নাম আপেল এবং অপরটির নাম কমলা হয়ে যায় ? নাকি দুটিকেই আপেল বলা হয়? কারণ আপেল দুটি খন্ডে বিভক্ত হলেও তার গুনাবলী স্বত্বা হারিয়ে ফেলেনি। আবার এই আপেল খন্ড দুটি যখন জোড়া লেগে একত্রিত হয়ে মিশে যায়, তখন আপেল খন্ডটি তার পূর্বের রুপে রুপ ধারণ করে। আল্লাহ তাঁর নুরময় খন্ডকে দুটি খন্ড করে নিজের নাম রাখলেন আহমদ এবং অপরটির নাম রাখলেন মুহাম্মদ।
আল্লাহ মুহাম্মদ সঃ কে দেখে এমন গভীর প্রেমে মগ্ন হয়ে গেলেন যে, নিজের সমস্ত ক্ষমতা মুহাম্মদী স্বত্বার কাছে হস্তান্তর করে নুরে মুহাম্মদী স্বত্বার সাথে চিরস্থায়ী রুপে বিলীন হয়ে গেলেন। আর এই নুরে মোহাম্মদী স্বত্ত্বাই জগতকে পরিচালিত করে আসছে। তাই এই নুরে মোহাম্মদী স্বত্ত্বার লয় এবং বিনাশ নেই।বরং নুরে মোহাম্মদী স্বত্ত্বা চিরস্থায়ী, অক্ষয়, এক এবং অদ্বিতীয়। এর কোন জন্ম নেই, আহার নেই, নিদ্রা নেই এবং কারোর মুখাপেক্ষী নন। বরং আমরা সবাই নুরে মোহাম্মদী স্বত্ত্বার মুখাপেক্ষী। এই জন্য পবিত্র কুরআন শরীফে সূরা নিসায় স্পষ্টরুপে বলা হয়েছে, “তোমরা আমার এবং আমার রাসূলের মধ্যে কেউ পার্থক্য সৃষ্টি করিও না। যে পার্থক্য করবে, সে কাফের।”
এখন আমরা কেউ পার্থক্য সৃষ্টি করতে চাইলে, এর সম্পন্ন দায়ভার আমাদের। বিষয়টি সূক্ষ্ণভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য অনুরোধ করছি। সাধক যখন সাধনা করে ক্বালবের সপ্তম স্তর নাফসীর মাকামে নুরে মোহাম্মদী স্বত্ত্বার সন্ধান খুঁজে পায়, তখন তাঁর নিকট সমস্ত সৃষ্টি জগৎ জানা হয়ে যায়। তাঁর আর কোনকিছু পাওয়ার বাকী থাকে না। এই জন্য রাসূল পাক সঃ বলছেন, ” যে আমাকে দেখছে সে স্বয়ং হককে দেখেছে।” আচ্ছা থাক আর গভীরে প্রবেশ না করলাম।
পুনশ্চ: আল্লাহর নাম কিতাবে আছে কিন্তু বাস্তবে আছে নুরে মোহাম্মদী স্বত্ত্বায় মিশে।
নিবেদক: অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।