হেরার নীরবতায় (আধ্যাত্মিক কবিতা)
মরুর বুকে, পাথরের কোলে,
হেরা গুহার গভীর অন্ধকারে,
একাকী দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি।
আকাশ ভেদ করে এলো আলো,
এক কণ্ঠ বলল, “পড়ো!”
তার হৃদয় কেঁপে উঠল,
যেন নক্ষত্র ফুটল মরুর রাতে।
“আমি এনেছি সত্যের বাণী,
যা এসেছে আল্লাহর কাছ থেকে।”
তার কথা ছিল সহজ,
কিন্তু তাতে জ্বলে উঠল আগুন,
মানুষের মনে, সমাজের গভীরে।
এক শতাব্দীরও কম সময়ে,
মরুর বালি থেকে গড়ে উঠল সাম্রাজ্য।
পারস্যের সিংহাসন ধূলায় মিশল,
বাইজান্টিয়ামের মুকুট খসে পড়ল।
স্পেনের উপকূল থেকে
সিন্ধুর তীর পর্যন্ত,
তার অনুসারীরা ছড়িয়ে দিল আলো।
কী ছিল সেই বাণীর মধ্যে?
কোনো জাদু? কোনো গুপ্ত রহস্য?
নাকি সরল সত্যের অপ্রতিরোধ্য শক্তি?
তাদের হাতে ছিল একটি কিতাব,
যার আয়াতে লুকিয়ে ছিল
জীবনের সূত্র, বিশ্বের সংকেত।
কিন্তু অন্ধকার নেমে এলো চুপিসারে।
ষড়যন্ত্রের ছায়া গ্রাস করল আলো।
তাদের হাত থেকে খসে গেল
জ্ঞানের মশাল, প্রজ্ঞার হার।
চুরি হলো সেই অমূল্য ধন,
ইতিহাসের পাতায় মুছে গেল নাম।
অন্যরা এলো, নিলো সেই আলো,
রূপান্তর করলো নতুন রূপে।
ইউরোপ জাগলো, আকাশ ছুঁলো,
আমেরিকা খুঁজে পেলো সেই সূত্র।
বিজ্ঞানের পথে, সংকেতের খেলায়,
তারা গড়ে তুললো নতুন জগৎ।
কিন্তু হেরার গুহা এখনো নীরব।
সেই প্রথম আলো, সেই প্রথম কণ্ঠ,
লুকিয়ে আছে কোনো ভুলে যাওয়া পাথরে।
কে ফিরিয়ে আনবে সেই সত্যের সুর?
কে পড়বে আবার সেই প্রথম আয়াত?
ইতিহাস, বিজ giver, সংকেত।
হেরার নীরবতা কি ফের কথা বলবে?
— ফরহাদ ইবনে রেহান