আর কত কাল মিথ্যার সাথে আপোষ করে চলবে?
তোমরা আর কত কাল মিথ্যার সাথে আপোষ করে চলবে? তোমরা মিথ্যার কাছে জিম্মি হয়ে বার বার সেই মিথ্যাকে’ই পূজ্য করে নিচ্ছো!
‘ঈশ্বর যা করেন তা তোমাদের মঙ্গলের জন্য’ই করেন’ এ কথা বলে আর কতকাল নিজেদেরকে ধোকা দিবে? এ কথার উপর ভরসা করে তোমরা কিসের নিরাপত্তা পাচ্ছো আমার জানা নেই, কিন্তু ফল প্রকাশে দেখেছি তোমরা এতে ধ্বংস হয়েছো।
ঈশ্বরের নামে এমন নির্ভরশীল হয়ে তোমরা অন্ধ হয়ে যাচ্ছো, শত দুঃখকষ্ট পেয়েও অযোগ্য হাঁত পা বাঁধা ভীতুর মতন তাতে’ই সন্তুষ্টি থাকো। জগতের মাঝে তোমরা তোমাদের অজ্ঞতার দরুন আঘাত পেলেও প্রজ্ঞাহীনের মতন মিথ্যাকে স্বীকার করে বলছো এটা আঘাত নয় এটা ছিলো ফুল!
অসত্যের ক্রীতদাস তোমরা। তোমাদেরকে যত ক্রীতদাস বানানো যায়, তোমরা তত’ই খুশি। নিজেরা ক্রীতদাস হয়েছো, এখন তোমাদেরকে দুঃখ দুর্দশায় বেঁধে নিয়ে গেলেও তোমরা চিৎকার দিয়ে বলতে থাকো যে আমরা মুক্ত! তোমরা কত বড় অজ্ঞ এবং বোকা, মিথ্যা সংলাপের উপর দাঁড়িয়ে দিনরাত নিজেদের আত্মাকে ঠকাচ্ছো।
তোমরা প্রতিদিন মিথ্যা সংলাপের অনুসরণ করে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছো, নিজেরা নিজেদেরকে ধ্বংস করে দিয়ে আবার সেই ধ্বংসশীল জীবনের উপর ফুলের মালা দিয়ে নিজেদেরকে’ই বরণ করে নিচ্ছো। এ ফুলের মালা কি তোমাদের ধ্বংস হওয়া জীবন সুগন্ধিময় করে দিতে পারেন? তোমরা নিজ আত্মাকে আর ধোকা দিওনা।
তোমরা তোমাদের যন্ত্রণাদায়ক জীবনকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিলে যন্ত্রণাদায়ক জীবনের কোনো পরিবর্তন হবে না, জীবনের ক্ষতবিক্ষত গুলোকে দামি বস্ত্র দিয়ে ঢেকে রাখা যায়, কিন্তু তা সাময়িক। জীবনের সাথে সংগ্রাম করো, মিথ্যা নিরাপত্তার আশা গুলোকে সমাধি করে দাও। নিজেরা মুক্ত হতে চাইলে অপরের ভরসা পাওয়া বন্ধ করে দাও, নিজেদের মুক্ত করতে চাইলে ক্রীতদাস থাকা থেকে বিরতি নেও৷
“তোমরা সবাই দুঃখী,
কারণ এই পৃথিবী একটা কারাগার”
এটি পপুলার একটি মিথ্যা কথা, এটাও তোমাদের’ই ধোকা। না তোমরা কেহ’ই দুঃখী নয়, এ জগৎ কারাগার নয়, জগতকে কারাগার তোমরা বানিয়েছো, কারাগারে তোমরা’ই থেকে জগতকে কারাগার বলে নিজেদের দোষ এড়িয়ে যাচ্ছো।
এ কারাগার তোমাদের মন, এ কারাগার তোমাদের বুদ্ধি, এ সকল দুঃখ দুর্দশা তোমাদের অজ্ঞতার কারণে হচ্ছে। যাও কোনো প্রজ্ঞাবানের কাছে গিয়ে বসো, দেখো তোমরা নিজেদেরকে কতটা ঠাকাচ্ছো, মিথ্যা আশার সংলাপগুলোর ক্রীতদাস হয়ে তোমরা কতটা ধ্বংস হচ্ছো এটা বুঝে আসো৷
আমি কেন তোমাদেরকে বলেছি প্রজ্ঞাবানের কাছে যাও? কারণ তাদের নিকটে এক ঐশ্বরিক সত্যের বাঁশি বাজতে থাকে এবং বলতে থাকে, ‘এসো যাঁরা পরিশ্রম করে ফল না পেয়ে ক্লান্ত, যাঁরা চিন্তিত দুঃখী তাঁরা আমার কাছে এসো, আমি তোমাদেরকে সংগ্রাম করা শিক্ষা দিবো, এবং তোমাদেরকে জড়তা মুক্ত করার চুক্তিবদ্ধ হবো’
এ সুরের বাঁশি তাঁরা প্রতিমুহূর্তে’ই বাজাচ্ছেন, এই সুর তোমাদেরকে সংগ্রাম করার প্রেরণা দিবেন৷ যারা সত্যের উপর বিজয়ী হতে চাও, তাঁরা সত্যের জন্য সংগ্রাম সাধনা করে যাও, তোমরা’ই হবে সঠিক পথের অনুসরণকারী। দেখবে একদিন তোমাদের সবার ভিতর থেকে’ই ঐ সূরে বাঁশি বাজতে থাকবে।
জগতের সকল ধর্ম মূলে’ই এই বাঁশির সুর প্রকাশ্যে বাজতে থাকে, কিন্তু তোমরা শুনতে চাওনা, একে শুনতে হবে এবং সংগ্রাম করতে হবে, তবে’ই তোমরা তোমাদের স্বাধীনতাকে আদায় করে নিতে পারবে, তোমরা কোনো মিথ্যা আশার বাণীর দিকে তাকিয়ে থেকোনা।
লেখা: বুদ্ধ মুহাম্মদ কৃষ্ণ
Nice Post