প্রত্যেকটি শিশু কোন ধর্মের উপর জম্মগ্রহণ করে?
প্রতিটি শিশু আত্মসমর্পণের মোকামে তথা ঘরে জম্মগ্রহণ করে। কার কাছে আত্মসমর্পণ? আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ। আর যারা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করছে তারা ইসলাম ধর্মটিকে গ্রহণ করে নিয়েছে এবং তারাই মুসলমান। আত্মসমর্পণের পরেই শান্তি আসে। সুতরাং ইসলাম শব্দটি প্রথম অর্থটি হলো আত্মসমর্পণ এবং পরের অর্থটি হলো শান্তি।
সুতরাং জগতে যত মানবশিশুর আগমন হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে প্রতিটি শিশুই মুসলমান। শিশুর পিতা মাতা শিশুটিকে ধীরে ধীরে পিতা মাতার ধর্মের দিকে নিয়ে যায়। ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায়ই হোক, অবশেষে শিশুটি যখন পূর্ণ যৌবনে উপনীত হয় তখন আত্মসমর্পণের ধর্মটি হতে ছুটে যেতে থাকে এবং পিতা মাতার ধর্মটিকে গ্রহণ করে। পিতা মাতার ধর্মের সাইনবোর্ডটি তখন ওই সন্তানটির কাঁধের উপর ঝুলতে থাকে।
দলগত দর্শনের ভিত্তিতে বলছি (হাকিকতে নয়)।
হিন্দুর ঘরে জম্মগ্রহণ করা শিশুটি হিন্দু নয়, বরং মুসলমান; জৈন ধর্মের পিতা মাতার ঘরের শিশুটি জৈন ধর্মের অনুসারী নয়, বরং মুসলমান; পার্শী ধর্মের পিতামাতার ঘরে জম্মগ্রহণ করা শিশুটি পার্শী নয়, বরং মুসলমান; বৌদ্ধ ধর্মের পিতা মাতার ঘরে জম্মগ্রহণ করা সন্তানটি বৌদ্ধ নয়, বরং মুসলমান; খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী পিতা মাতার ঘরে জম্মগ্রহণ করা শিশুটি খ্রিস্টান নয়, বরং মুসলমান; ইহুদি ধর্মের অনুসারী পিতা মাতার ঘরে জম্মগ্রহণ করা শিশুটি ইহুদি নয়, বরং মুসলমান; তেমনিভাবে সাবাইয়া, কনফুসিয়াস, তাও, মানী, মং শিখ, দেলমাদাল, আকা, দপলা, মিশমি, ধর্মের জম্মগ্রহন করা শিশুটিও সেই সেই ধর্মের সন্তান নয়, বরং মুসলমান।
মুসলমান পিতা মাতার ঘরে জম্মগ্রহণ করেও যদি যৌবনে আল্লাহতে আত্মসমর্পণ না করে তা হলে মুসলমান পিতা মাতার ঘরে জম্মগ্রহণ করেও সে মোটেও মুসলমান নয়। এ বড় সাংঘাতিক কথা। এ বড়ই নিরপেক্ষ কথা। এ বড়ই অপ্রিয় কথা। কিন্তু অপ্রিয় হলেও কথাটি একটি তেতো উলঙ্গ সত্যকথা। কেউ মানবে কেউ মানবে না। মানাটাও তকদীর, না মানাটাও তকদীর। সুতরাং বিশালতার প্রশ্নে, ব্যাপকতার প্রশ্নে কাকে দোষারোপ করতে যাব? তাই কোন বিশ্বের মানবজাতীকে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করার দাওয়াত দিচ্ছে। কেউ আল্লাহর দাওয়াত গ্রহণ করে, কেউ করে না। এই নেগেটিভ ও পজেটিভের খেলাটি মহাকালের কোন প্রান্তে গিয়ে শেষ হবে আমি জানি না।
(আল্লাহ কোথায় থাকে? ৪৬-৪৭ পৃষ্ঠা: কালান্দার জাহাঙ্গীর)