জীবের প্রতি দয়ার চেয়ে বড় কোনো মহৎ কাজ নেই।
জীবের প্রতি দয়া এমনই এক মহৎ কাজ যার বদৌলতে মৃত্যুর পথযাত্রী মূহুর্তে দীর্ঘায়িত হতে পারে, বিপদের চরম পর্যায় হতেও রক্ষা পেতে পারে এবং ধ্বংসের দারপ্রান্তে গিয়েও উন্নতি লাভ করতে পারে।
জীবের প্রতি দয়াবান হওয়ার চেয়ে বড় কোনো মহৎ কাজ নেই, জীবকে কষ্ট দেওয়ার মতো অমানবিক কিছু নেই এবং জীব হত্যার চেয়ে বড় কোনো পাপ নেই।
স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন- “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর?/জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।”
অর্থাৎ তিনি বলতে চাচ্ছেন- তুমি কোথায় ঈশ্বরকে খুঁজে বেড়াচ্ছ, তোমার আশে পাশে অনেক জীব আছে তাদের সেবা করলেই ঈশ্বরকে পাওয়া যাবে।
স্বামীজি আরো বলেন- “যতক্ষণ পর্যন্ত আমার দেশের একটি কুকুরও ক্ষুধার্ত, আমার সমগ্র ধর্মকে একে খাওয়াতে হবে এবং এর সেবা করতে হবে, তা না করে অন্য যাই করা হোক না কেন তার সবই অধার্মিক।”
নবী মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন- “একদা একটি কুকুর প্রচন্ড গরমের দিনে একটি কুয়োর পাড়ে পিপাসায় কাতর হয়ে জিহ্বা বের করে হাঁপাচ্ছিল এবং কুয়োর চারদিকে ঘুরছিল। এ অবস্থা দেখে বনী ইসরাইলের একজন স্ব-ঘোষিত বে*শ্যা মহিলা নিজের ওড়না দ্বারা মোজা বেঁধে কুয়োতে নামিয়ে পানি উত্তোলন করে কুকুরটিকে পান করালো। এর ফলে তার সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেয়া হলো।”
মাদার তেরেসা বলেছেন- “তুমি যদি দৃশ্যমান কোনো জীবকে ভালোবাসাতে না পারো, তবে অদৃশ্য ঈশ্বরকে কী করে ভালোবাসবে?”
আমার অভিজ্ঞতা হতে একটু বলিঃ-
আমরা সৃষ্টির সেরা জীব, এটাকে কথার কথাতে সীমাবদ্ধ না রেখে নিজ যায়গা হতে বাস্তবায়নটাই বেশি জরুরি। আসলে আমি নিজেও দুনিয়া আসক্ত একজন মানুষ, অন্যের নিকট নীতিবান কথা বলতেও লজ্জাবোধ করি। সবসময় চেষ্টা করি অসহায় ও অবলা সকল প্রানী বা জীবের প্রতি দয়াবান হতে।
আমি যখন খাবার খেতে বসি তখন অনেক গুলো বিড়াল খুব নিকটে চলে আসে, কারন আমি কখনও তাড়াই না। বিড়াল গুলোকে প্রতিদিনই আমার খাবারের কিছু অংশ খেতে দেই, তাই ওদের মধ্য ভীতি কেটে গেছে ও বিশ্বস্ততা গড়ে উঠেছে। আমি খাবার নিজ থেকে ওদের না দিলে ওরা পাত্রে রাখা খাবারে মুখ দেয় না, এটা ওদের নীতি। বড় দুঃখের বিষয় হচ্ছে- আমরা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হয়েও ওদের নীতি আমাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি।
“পৃথিবীর সকল জীব সুখী হোক,
পশুরাও বাঁচুক, বাঁচুক সবাই।”
— Nishat Wahid