হোমপেজ আকিদা সংক্রান্ত গুরুহীন সুফি বা পীরদের হইতে সাবধান।

গুরুহীন সুফি বা পীরদের হইতে সাবধান।

গুরুহীন সুফি বা পীরদের হইতে সাবধান।

তরিকাপন্থি বা সূফীবাদীদের সবচেয়ে বেশি পথভ্রষ্ট করতেছে সেসব নামধারী সূফী-ফকিররা, যারা কিনা আধ্যাত্মিকতা বা সূফীবাদের কথা বলে বেড়ায় এবং নিজেরা ওহাবীদের বিরোধীতা করে, কিন্তু সদগুরু বা কামেল পীরের নিকট বায়াত বা দীক্ষা নেওয়াকে অস্বীকার করে এবং অন্যদেরও অনুৎসাহিত করে। যেহেতু যারা সূফীবাদের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ায় ওলী-আউলিয়া বা পীর-ফকিরদের পছন্দ করে এবং ওহাবীদের অপছন্দ করে, ফলে তারাও ঐসব নামধারী সূফী-ফকির বা আধ্যাত্মিক গুরুদের ফাঁদে আটকে যায়।

যেহেতু তাদের কথা-বার্তা ও চাল-চলন পীর-ফকিরদের মত, আর গুরুর গোলামী বা পীরের পায়রবীও করা লাগে না, তাই খুব সহজেই কিছু মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে এই দলে যোগ দিয়ে নিজেদের আধ্যাত্মিক পথের পথিক ভাবা শুরু করে দেয়। অথচ গুরুবাদ বা সূফীবাদের মূল বিষয় হলো গুরুর পায়রবী বা পীরের গোলামী করা। এসব নামধারী সূফী-ফকিররা ওহাবীদের বাগে আনতে পারে না, কাছেও ঘেঁষতে পারে না, সবসময় সূফীবাদী বা গুরুবাদীদের সাথেই চলাফেরা করে এবং গুরুবাদীদের কাছেই নিজেদের দর্শন প্রচার করে। অথচ তারা গুরুবাদের বিরোধীতা করে।

তাদের মূল কনসেপ্টই হলো- আত্মজ্ঞান লাভ বা আত্মশুদ্ধির জন্য গুরুর গোলামী করার দরকার নেই, ঈশ্বর সবার ভিতরেই আছেন। ভাবটা এমন যেন- তারা একেকজন বুধিপ্রাপ্ত গৌতম বুদ্ধ। তারা লালন সাঁইজির কথা বলবেন, কিন্তু সিরাজ সাঁইজিকে ‘সেই রাজ’ বানিয়ে লালন সাঁইজির গুরুকে অস্বীকার করে। যদি বলা হয় যে, ‘আপনারা কি গুরু মানেন না?’, তখন তারা বিষ্ময় দেখিয়ে বলবে- “কেন গুরু মানবো না! কিন্তু আমরা আমাদের ভিতরের পরমগুরুকে মানি’।

যদিও এইদলে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের বেশিরভাগ লোকই ব্যথিত হৃদয়ের মানুষ। তারা এই ব্যথা তাদের ভন্ডগুরুদের থেকে পেয়েছেন। ধোঁকা খেয়েছেন ভন্ডদের থেকে। আর বাকীদের বিশাল অংশের সমস্যা হলো- তারা দীর্ঘদিন গুরু খুঁজেও মনের মতো গুরু পায় নাই, ফলে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন তত্ত্ব ও তথ্য শুনে শুনে অহংকারী হয়ে উঠে এবং পরে আর কাউকে নিজের উপযুক্ত গুরু ভাবতেই পারে না। অবশেষে গুরুহীন ফকিরদের সঙ্গ ধরে নিজেকেও সূফী-ফকির ভাবতে শুরু করে। নিজের নামের সাথে নিজেই ফকির, সূফী, সাধু ইত্যাদি যুক্ত করে নেয়।

যা-ই হোক, যারা এই দলে যুক্ত হয়ে গেছে, তাদের কিছু বলার নেই। তবে যারা গুরুবাদী আছেন, তাদের উচিত এদের ফাঁদে পা না দেওয়া। নিজ গুরু ধোঁকা দিলে পুনরায় অন্য কারো কাছে বায়াত বা দীক্ষা নেওয়া। আর যারা এখনও গুরু বা পীর খুঁজে পাচ্ছেন না, তাদের উচিত দ্রুত একজন গুরুর আশ্রয় গ্রহণ করা। মুর্শিদ ছাড়া ব্যক্তির মুর্শিদ স্বয়ং শয়তান। তাই শয়তানীর গোলামী ত্যাগ করে দ্রুত একজন আল্লাহওয়ালা ব্যক্তির গোলামী স্বীকার করা উচিত।

লেখাঃ DM Rahat