প্রেম একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়!
প্রত্যেক প্রেমিকের প্রেমের আইন কানুন তার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। সুতরাং সমস্ত প্রেমিকের প্রেমের আইন কানুনগুলো কখনোই এক রকম হতে পারে না। যার যার প্রেম করার স্টাইল তার তার মনের মত হবে। স্টাইল এক রকম হয় না, সুতরাং প্রেমিকের মাজাহেবে কেউ কারোর নয়। সুতরাং এই কথাটি লিখা চাই মসজিদ, মন্দিরে প্রেমপাশে সমতুল্য মুমিন কাফিরে (মারফতের বানী)। যারা নীতি এবং আইনে পূজারী তারা হানাফি, মালেকি, শায়ফি ও হাম্বলি মাজহাব মানে। কিন্তু যারা প্রেমিক তারা অন্যের শিখানো বুলিতে প্রেমিকাকে ডাকে না, তারা প্রেমিকাকে নিজস্ব স্টাইলে, নিজস্ব ভঙ্গিমাতে প্রেমের ফুলটি উৎসর্গ করে। কারণ প্রেমিক দশের মধ্যে একজন নয়, প্রেমিক দশের বাহিরে এগারো। দশের মধ্যে একজন হওয়া এটা আদর্শগত ব্যাপার, আর দশের বাহিরে এগারো হওয়া এটা ত্যাগ এবং সাহসের ব্যাপার।
আদর্শবাদী সুবিধাবাদী ভোগী, আর প্রেমিক ত্যাগী। প্রেমিকের চলার পথ, নীতি এবং আদর্শের বিপরীত মনে হয়। কেননা প্রেমিক তো আর রেললাইনের তৈয়েরী পাতের উপর দিয়ে চলে না। প্রেমিক নিজে তার প্রেম পথ সৃষ্টি করে নেয়, আর সেই পথেই প্রেমিক নিজেকে প্রেমিকার নিকট উৎসর্গ করে। তাতে লাভ আর লোকসান প্রেমিক দেখে না। প্রেমিক দেখে তার প্রেমের উৎসর্গটুকু প্রেমিকার কাছে কেমন লাগলো! প্রেমিকের বাজারে পাবার কোনো বিধান নাই, প্রেমিকের বাজারে হারানোটাই ধর্ম। তাই প্রেমিক সবকিছু তুচ্ছ করে দিয়ে, শুধু প্রেমিকাকে জিতাতে উঠে পড়ে লাগে। তাই প্রেমিক বলে উঠে প্রেমের কলংকের মধ্যেও আনন্দ আছে, আর চাটুকারের প্রশংসা চোখ ধাঁধিয়ে দেয়।
আদর্শবাদী ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম শায়েফি ও ইমাম হাম্বল তারাই আইন তৈয়েরী করে। আর সেই আইন ভঙ্গ করে ওয়েস করনী, আল্লামা আব্দুর রহমান জামী, হাফেজ সিরাজী, আরাবী, আমির খসরু, রুমী, উমর খৈয়াম, ইকবাল, বুআলী কলন্দর, বাবা বুল্লে শাহ, বাবা কবির, বাবা লাল ও মাস্ত কালান্দার, দাতাগঞ্জ বকস, জিগার মুরাদাবাদী, সারমাস্ত, সামনুন মোহেব,বাবা বেদম ওয়ারসী, বাবা জাহাঙ্গীর, লালন, নজরুল, রবীঠাকুর, মীরা, রাবেয়া, আনার কলি, অষ্টম এডওয়ার্ড ইত্যাদি প্রমুখগণ। তারাই আইনকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে প্রেমের ফুলটি ফুটিয়ে গেছেন এবং আইনের বুকে প্রেমের শৈলীটি ফুটন্ত গোলাপের ন্যায় ফুটিয়েছেন।
নীতিবাদীরা প্রগতির বাধা দেয়, আর প্রেমিক সেই বাধা ভেঙ্গে ফেলে, নতুনত্বের আহবান জানায়। প্রেমিকের জম্ম হয় আইন ভেঙে ফেলার জন্য, আর আদর্শবাদীর জম্ম হয় প্রেমিকের বুকের উপর দিয়ে স্টিমরোলার চালানোর জন্য। কিন্তু পরম প্রেমের স্বীকৃতিটুকু দিয়েগেছেন। পরম এটাও বলেছেন, নীতি আদর্শ আমারই তৈয়ারী আইন, কিন্তু আমি যে প্রেমিকের সাথে থাকি, আমি যে নিজেই প্রেমিক, পরম বলে আমি যে প্রেমিকের উপর সালাত(দরূদ) করি। কারণ প্রেমিক আমার আর আমিই প্রেমিকের। কারণ আমি স্বয়ং পরম নিজেই ভোলানাথ, তাই যে সংসারকে ভুলে আমাকে খোজে আমি যে তাতেই প্রতিষ্ঠিত থাকি। আমার জ্বালালী এবং জামালি উভয় স্বরূপই প্রেমিকের সাথে বিদ্যমান। আমি পরম স্বয়ং প্রেম। তাই লীলাই আমার আনন্দ।
– আর এফ রাসেল আহমেদ