হোমপেজ সকল দলিল হাদিসের অপব্যাখ্যা করে মুয়াবিয়াকে যেভাবে সাহাবী বানানো হয়।

হাদিসের অপব্যাখ্যা করে মুয়াবিয়াকে যেভাবে সাহাবী বানানো হয়।

হাদিসের অপব্যাখ্যা করে মুয়াবিয়াকে যেভাবে সাহাবী বানানো হয়।

হাদিসের অপব্যাখ্যা করে মুয়াবিয়াকে যেভাবে সাহাবী বানানো হয়।

যে হাদিসের অপব্যাখ্যা করে মোনাফক মোয়াবিয়াকে বিখ্যাত সাহাবী বানানো হয় এবং সরলমনা মুসলমানদেরকে ধোঁকা দেওয়া হয়ঃ

রাসূল পাক (সঃ) বলেনঃ

“তোমরা আমার সাহাবীদেরকে সমালোচনা কর না। আমার সাহাবীরা আকাশের নক্ষত্র তুল্য।”

এবার আসুন জেনে নিই সাহাবী কাকে বলে?

আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা, যারা রাসূল পাক সঃ কে সরাসরি দেখেছে এবং ইসলাম ধর্ম কবুল করছে তাদেরকে সাহাবী বলে। মূলত এই কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং মনগড়া তথ্য। সাহাবী তাঁকেই বলা হয়, যিনি সরাসরি রাসূল পাক সঃ দেখছে এবং তাঁর প্রতিটি আদেশ নিষেধ মেনে চলছে। যিনি জীবনের শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত রাসূল পাক সঃ এবং তার আহলে বায়াতের উপর পূর্ণ আস্হার সহিত দাসত্ব করছেন, মূলত সেই হলো সাহাবী। যিনি রাসূল পাক সঃ এবং তাঁর আহলে বায়াত অর্থাৎ মাওলা আলী, মা ফাতেমা এবং মাওলা ইমাম হাসান ও হোসাইনকে জীবনের চেয়ে বেশী ভালোবাসছেন এবং তাঁদের কদমে নিঃস্বার্থভাবে জীবন উৎসর্গ করছেন তাঁরাই হলো সাহাবী। সাহাবীর সংজ্ঞা মূলত ব্যাপক, লিখতে গেলে একটি বড় আকারের কিতাব হয়ে যাবে।

হযরত আবু বকর যখন খলিফা ছিলেন, তখন একশ্রেণীর নামদারী সাহাবীরা যাকাত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন আবু বকর এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বহু নামদারী সাহাবীকে হত্যা করে। তারপর হযরত ওমর ও উসমান যখন খলিফা হয়, তখন বিভিন্ন নামদারী সাহাবীকে অপরাধের জন্য শাস্তি ও হত্যা করে। কেউ চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ ইত্যাদি অপরাধের জন্য শাস্তি ভোগ করে, এরা কিন্তু সবাই নামধারী সাহাবী ছিল।

রাসূল পাক সঃ যখন মদীনার বাদশাহ ছিলেন, তখনও বিভিন্ন সাহাবী অপরাধের জন্য শাস্তি ভোগ করত। একবার রাসূল পাক সঃ গণিমতের মাল বন্টন করার সময়, এক সাহাবী বলে ওঠে হে রাসূল! আমার প্রতি ইনসাফ করুন এবং আমাকে ঠকাবেন না। তখন রাসূল পাক সঃ তাকে ধিক্কার জানিয়েছিল। আবু বকর, ওমর ও উসমান যখন নামধারী সাহাবীদেরকে হত্যা করেছে, তখন আমরা সমস্বরে চিৎকার করে বলি ঠিক কাজ করেছে।

কারণ কতগুলো মোনাফেক সাহাবীকে হত্যা করেছে। আচ্ছা মেনে নিলাম, খুবই যুক্তি সঙ্গত কথা। কিন্তু আমার মাওলা আলীর বেলায় উল্টোটা ঘটে কেনো বারেবার? এর জবাব কি আপনাদের কাছে আছে? সবার ক্ষেত্রে ঠিক এবং জ্বি হুজুর কিন্তু মাওলা আলীর বেলায় গণেশ উল্টে যায়। এমন অদ্ভুত আচরণ আর কতকাল দেখব এবং সহ্য করব। সুফিবাদের আড়ালে ভন্ডামি বাদ দিয়ে সরাসরি ওহাবী হয়ে যান, কিছুই বলব না। অন্তত মনে শান্তনা পাব, আপনারা পথহারা পথিক জাত এজিদের দোসর বলতে পারব।

মাওলা আলীর হত্যাকারী মুলজিম ছিল একজন কোরআনের হাফেজ নামদারী সাহাবী। এখন আমি কি তাকেও সাহাবী হিসাবে মেনে নিয়ে আকাশের নক্ষত্র তুল্য মনে করব? নাকি তাকে বেইমান মোনাফেক সাহাবী মনে করব। অথচ রাসূল পাক সঃ মাওলা আলী সমন্ধে বলছেন, “আমি যার মাওলা আলী তাঁর মাওলা। মুমিন ব্যক্তি আলীর বিদ্বেষ পোষণ করবে না এবং মোনাফেক কখনো আলীকে ভালোবাসবে না। যে ব্যক্তি আলীকে ভালোবাসে, সে আমাকে ভালোবাসে এবং যে আলীর সাথে শক্রতা করে, সে আমার শক্র।” এইরকম আরো অসংখ্য হাদিস রয়েছে। এবার আসি মূল প্রসঙ্গে।

অথচ মোনাফেক মোয়াবিয়া সিফফিনের যুদ্ধে সরাসরি মাওলা আলীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং হাজার হাজার বিখ্যাত সাহাবী হত্যা করে। তারমধ্যে বিখ্যাত আশেকে রাসূল ওয়াইজ করণী পাগলা সিফফিনের যুদ্ধে শহীদ হন। মূলত মোয়াবিয়া মাওলা আলীকে কাফের ফতোয়া দিয়ে হত্যা করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্যই যুদ্ধ করে। আচ্ছা মাওলা আলীর সাথে যুদ্ধ করার নাম কি শক্রতা নাকি বন্ধুত্ব করা। যদি বলেন বন্ধুত্ব করা, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আর যদি বলেন শক্রতা করা, তাহলে বলব মোয়াবিয়া মোনাফেক।

কারণ রাসূল পাক সঃ বলেন, যে আলীর শক্র সে আমার শক্র। এখন বলুন রাসূল পাক সঃ এর শক্র কিভাবে সাহাবী হতে পারে? এই অমোঘ সত্য কথাটি আপনাদের হৃদয়ে কবে নাড়া দিবে, আমি তাহা জানি না। শুধু এইটুকুই জানি, আপনারা আহলে বায়াতের দুশমন ভন্ড পীরের খপ্পরে পড়ে অন্ধ বিবেকহীন হয়ে গেছেন। হৃদয়ের উপলব্ধি আপনাদের শুকনো মরুভূমি হয়ে গেছে। আবার দেখুন পবিত্র কুরআন শরীফে সূরা নিসা আয়াত নং ৯৩ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে আল্লাহ বলেন, “যে একজন মুমিন বান্দাকে হত্যা করে, সে চির জাহান্নামী এবং অভিশপ্ত।”

এখন আপনার কি মনে হয়, মাওলা আলীর পক্ষের হাজার হাজার বিখ্যাত সাহাবী তারা কেউ মুমিন ছিল না। যাদেরকে মোয়াবিয়া সিফফিনের যুদ্ধে হত্যা করেছিল। আচ্ছা দাদা ভাই সাহাবী হত্যাকারীর নাম কি সাহাবী হতে পারে? একটু হৃদয় দিয়ে বিশ্লেষণ করুন, তাহলে উত্তর আপনার শুদ্ধ বিবেক ঠিকই দিয়ে দিবে। আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন, শুধু তর্কে জিতার জন্য এবং ভন্ড পীরের খপ্পরে পড়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদিস অনায়াসে অস্বীকার করছেন। আর আহলে বায়াতের চরম দুশমনে পরিণত হচ্ছেন। এখনো কিন্তু সময় ফুরিয়ে যায়নি আপনার।

একবার তওবা করে ফিরে আসুন আহলে বায়াতের পথে। গোলক ধাঁধাঁয় আর কতকাল পড়ে থাকবেন, এবার একটু সত্যের সন্ধান করুন। আমরা অবশ্যই সাহাবীদেরকে সম্মান করি এবং ভালোবাসি।তবে কোন আহলে বায়াতের দুশমন মোনাফেক সাহাবীকে নয়। আহলে বায়াতের দুশমনকে আমরা নর্দমার কীটের চেয়েও নিকৃষ্ট জানি। আর সাহাবী তো দুরের কথা। সাহাবীরা অবশ্যই আকাশের নক্ষত্র তুল্য। যেমন ছিলেন সালমান ফারসি, আবু জর গিফরী ও আব্বাস রাঃ ইত্যাদি সাহাবী।

যারা আমার আহলে বায়াতকে জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন এবং জীবন যৌবন আহলে বায়াতের কদমে উৎসর্গ করেছিলেন। এদেরকে আমরা শুধু আকাশের নক্ষত্র তুল্য নয় বরং আমাদের মাথার তাজ মনে করি এবং হৃদয়ের মনি কুঠায় স্হান দিয়েছি। সাহাবীদেরকে সমালোচনা করব, এমন সাধ্য আমাদের নাই।

কারবালা প্রান্তরে এজিদ সরাসরি যুদ্ধ করেননি, শুধু হুকুম দিয়েছিল মাওলা ইমাম হোসাইনকে হত্যা করতে। আর মোয়াবিয়া সরাসরি মাওলা আলীর বিপক্ষে সিফফিনের যুদ্ধ করেছিল। আচ্ছা সেদিন সিফফিনের যুদ্ধে যদি মাওলা আলী শহীদ হতেন, তাহলে মোয়াবিয়াকে কি বলতেন? তারপরও কি মোয়াবিয়াকে সাহাবী বলতেন? আচ্ছা আপনি যদি সিফফিনের যুদ্ধে থাকতেন, তাহলে সেদিন আপনি কার পক্ষে যুদ্ধ করতেন? মাওলা আলীর পক্ষে নাকি মোয়াবিয়ার পক্ষে। যদি বলেন মাওলা আলীর পক্ষে হয়ে মোয়াবিয়ার বিপক্ষে যুদ্ধ করতেন, তাহলে আজ কেনো মোয়াবিয়ার পক্ষে সাফাই গাইছেন।

আর যদি বলেন, মোয়াবিয়ার পক্ষ নিয়ে মাওলা আলীর বিপক্ষে যুদ্ধ করতেন, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আজ যারা মোয়াবিয়ার পক্ষে সাফাই গাইছেন আপনারা নিশ্চিত থাকুন, সেদিন আপনারা সিফফিনের যুদ্ধে মাওলা আলীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতেন। ইস সেদিন কারবালা প্রান্তরে মাওলা ইমাম হোসাইন যদি শহীদ না হতো, তাহলে আজ আপনারা এজিদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতেন। তখন সেই মোয়াবিয়ার মতো একই ফতোয়া দিতেন। এই যে শুনছেন,আমি কিন্তু ওহাবী ও আহলে হাদিসের লোকজনকে বলছি না।

আমি কথাগুলো নামদারী সুফিবাদের অনুসারীদেরকে বলছি। আপনাদেরকে দোহাই দিয়ে বলছি, আর আহলে বায়াতের নাম বিক্রি করে পাক পাঞ্জাতনকে অপমান করবেন না। আপনাদের চেয়ে ওহাবী এবং আহলে হাদিসের লোকজন শতগুণ মন্দের ভালো। কারণ তারা সরাসরি পাক পাঞ্জাতনের বিরুদ্ধে কথা বলে কিন্তু আপনাদের মতো পাক পাঞ্জাতনের নাম বিক্রি করে খায় না। তারা যদি কাফের হয়, তাহলে আপনারা মোনাফেক। তাই বলি কাফেরের চেয়ে মোনাফেক জগন্য।

শুনুন মানুষ কিন্তু এখন অনেক সচেতন, আপনাদের ভন্ডামি পীরগিরী সবাই ধরে ফেলবে। কারণ সত্যকে কখনো ধামাচাপা দেওয়া যায় না। আজ হোক কাল হোক মানুষ আপনাদেরকে ধিক্কার জানাইবেই। এখনো সময় আছে আহলে বায়াতকে ভালোবেসে সঠিক সুফিবাদে ফিরে আসুন। কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে নিজগুণে ক্ষমা করবেন। জয় পাক পাঞ্জাতনের জয়। মাওলা আলী তোমার কদমে ঠাঁই চায় অধমে।

নিবেদক: অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।