লোকনাথ ব্রহ্মচারীর অমিয় বাণী: পর্ব-২

লোকনাথ ব্রহ্মচারীর অমিয় বাণী: পর্ব-২

৪৬.
শোন! মন যা চায় -তাই করবি; কিন্তু বিচার করে নিবি আগে।

৪৭.
যদি আমার প্রতি কোনো কৃতজ্ঞতার ভাব অন্তরে অনুভব করিস তো আমাকে ভিক্ষা দিস। দীন দরিদ্র আর সম্বলহীন অনাথের জন্য দয়া করে যা হাতে তুলে দিবি জানবি বতা একমাত্র আমিই পাব। আমি ছাড়া যে আর কেউ নেই রে।

৪৮.
আমি নিত্য জাগ্রত। তোদের সুখে সুখি, তোদের দু:খে দু:খি। আমার বিনাশ নেই, আমি অবিনশ্বর, আমি আছি, আছি, আছি।

৪৯.
যতক্ষণ তোর অসন্তোষ, ততক্ষণই তোর দারিদ্র।

৫০.
গুরু কে? গুরু স্বয়ং ভগবান। স্বয়ং ভগবান ছাড়া কেউ গুরু হতে পারে না।

৫১.
যারা ঠিকভাবে শ্রদ্ধাপূর্ণ চিত্তে আমার স্মরণ নেবে, তারাই আমার কৃপা উপলব্ধি করবে।

৫২.
যোগযুক্ত হও, শ্বাস ও প্রশ্বাসে জপই হলো যোগ।

৫৩.
তার ওপর নির্ভর করে সুখ-দু:খ বা লোকের গঞ্জনার দিকে লক্ষ্য না করে, কাকেও দু:খ না দিয়ে, আপনার কাজ করে যাও।

৫৪.
তোরা জাগতিক চাওয়া নিয়েই ভুলে থাকিস না, সত্য লাভ করার জন্য চেষ্টা কর, আমার কৃপা তোদের সাধন পথকে সুগম করে তুলবে।

৫৫.
মন যা বলে শোন, কিন্তু আত্মবিচার ছেড়ো না। কারণ মনের মত প্রতারক আর কেউ নেই, মহাপুরুষরে বাক্য, শাস্ত্র বাক্যে শ্রদ্ধাবান না হলে প্রকৃত আত্মবিচার সম্ভব নয়।

৫৬.
বাক্যবান, বিত্ত-বিচ্ছেদবান ও বন্ধু বিচ্ছেদবান এই তিন বান সহ্য করতে পারলে, মৃত্যুকেও হটিয়ে দেওয়া যায়। তিনি যে অবস্থায় রাখেন সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কারণ তিনি মঙ্গলময়। তার ইচ্ছায় বা কার্যে আমাদের অমঙ্গল হয় না।

৫৭.
এতো পাহাড়-পর্বত পরিভ্রমণ করে দুজন ব্রাহ্মণ বৈ দেখিনি; একজন মক্কার আব্দুল গফুর; অপরজন কাশীর ত্রৈলাঙ্গস্বামী।

৫৮.
তোদের ছেড়ে আমি যাবই বা কোথায়? সমস্ত অস্তিত্বের মধ্যে আমি পূর্ণ হয়ে বিরাজ করছি।

৫৯.
দীন দারিদ্র্য অসহায় মানুষের হাতে যখন যা দিবি তা আমিই পাব, আমিই গ্রহণ করবো।

৬০.
ওরে তোরা কি ভাবিস আমি চাই তোরা দু:খ পাস, রোগ যন্ত্রণা ভোগ করিস?

৬১.
রণে বনে জলে জঙ্গলে যখনই বিপদে পরবে আমাকে স্মরণ করো আমিই রক্ষা করব।

৬২.
আমার দান ছড়ানো পড়ে আছে, কুড়িয়ে নিতে পারলেই হলো।

৬৩.
আমি যা ইচ্ছা তাই করতে পারি, তোদের বিশ্বাস নেই, কাজেই তোদের কানে ফল হয় না।

৬৪.
গরজ করবি, আহাম্মক হবি না। ক্রোধ করবি, ক্রোধান্ধ হবি না।

৬৫.
সর্বদায় আনন্দে থাক। আনন্দে থাকাই শ্রীভগবানকে নিয়ে থাকা।

৬৬.
জগতে যখন মানুষের শরীর নিয়ে এসেছিস, তখন দশের সেবা করে, তাদের প্রসন্ন করে জীবন সার্থক করে নে। এতে তোরও মঙ্গল জগতেরও মঙ্গল।

৬৭.
সংসারে থেকে সাধন-ভজন করা কঠিন বলে অনেকের ধারণা। সংসার বাইরে নয়। সংসার মানুষের মনে; কিন্তু সংসারে থেকেও যদি কারো মনে সংসার না থাকে, তবে তার আবার ব্যাঘাত কিসের? অহংকার যে পথেই আসুক, সাধন পথের বিঘ্ন।

৬৮.
যাকে পাবার জন্য এতো যোগসাধনা, এতো ভক্তি, তিনি শুধু মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহের মধ্যে না সাধু মহাপুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ? তিনি যে সবের মধ্যেই আছেন।

৬৯.
বহু বছর পাহাড়-পর্বত ঘুরেছি; কিন্তু ঈশ্বরের সঙ্গে আমার দেখা হয় নি। আমি দেখেছি আমাকে, আমি বন্ধ আছি কর্মে অর্থাৎ সংসারে। সংসার বদ্ধ আছে জিহ্বা আর উপস্থে। যে এ দুটিকে সংযম করতে পারে, সেই কেবল সিদ্ধিলাভ করতে পারে।

৭০.
আমি পাহাড়-পর্বত পরিভ্রমণ করে বড় একটা ধন কামাই করেছি। কত বরফ ও শরীরের ওপর দিয়ে জল হয়ে গিয়েছে। তোরা বসে খাবি আর আমার নাম জপ করে পরিত্রাণ পাবি।

৭১.
যে যোগী আত্মাজ্ঞান লাভ করার পর করুণায় বিগলিত হয়ে সর্বজীবের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করেন। সেই-ই পরম যোগী আমার সব থেকে প্রিয়।

৭২.
যে কর্ম করলে তাপ লাগে তাই পাপ। অর্থাৎ বাসনাই পাপ।

৭৩.
ক্রোধ ভালো, কিন্তু ক্রোধান্ধ হওয়া ভালো নয়।

৭৪.
তুই যতই ক্ষমতা সম্পন্ন হসনা কেন, সর্বদা আইনের মর্যাদা রক্ষা করবি। আইনের সম্মান রক্ষা করলে মর্যাদাহানি হয়না। তাইতো আমি সরকারি বিধিব্যবস্থার উপযুক্ত সম্মান রক্ষার জন্যই নারায়ণগঞ্জ কোর্টে গিয়েছিলাম।

৭৫.
যে যখন আপদে-বিপদে আমার স্মরণ নেবে, সে ক্ষণেই আমার কৃপালাভ করবে।

৭৬.
যে কারণে মোহ আসে, তা যদি জানা থাকে, আসতে না দিলেই হয়।

৭৭.
জানি এতে তোদের প্রশ্রয় দেয়া হয়। কিন্তু সব বুঝেও কিছু না করেই বা থাকতে পারি কই?

৭৮.
শাসন করতেও পারি, আবার ধূলো ঝেড়ে বুকে তুলে নিতেও আমি।

৭৯.
বাবা মঙ্গলময়, সুতরাং যেখানে তার মূর্তি বিরাজমান, সেখানে অমঙ্গল ঘটতে পারে না।

৮০.
সত্য পালনই প্রকৃত ধর্ম। যারা সত্য রক্ষা করে না, তারা বিধর্মী -তারা অপরাধী। তাদের গতি নরকে, তারা শাস্তি পাবার যোগ্য।

৮১.
ভক্তের বোঝা আমি নিজের কাঁধে বয়ে বেড়াই। তোদের সব দায়িত্বই আমার। কেবল তোদের সহজ সরল মনটুকু আমায় দে আমি যে তোদের প্রেমের কাঙ্গাল।

৮২.
আমি কে জানার দরকার নেই। শুধু অন্তর দিয়ে প্রাণভরে আমার দয়া ভিক্ষা চাইবি। তাহলেই আমি তোদের সব কষ্ট হতে মুক্তি দেব।

৮৩.
আত্মনিষ্ঠ যোগই তোদের মুক্তির পথ। ভক্তিই সারবস্তু। মন্ত্রাদি হয় সহায় মাত্র। ভক্তিকে সম্বল করে এগিয়ে চল, তোদেরকে রুখবে কে-রে, তোরা যে আমারই সন্তান।

৮৪.
ওরে, কোথায় যাব বল। পূর্ণ থেকে পূর্ণ গেলে যে পূর্ণই অবশিষ্ট থাকে। তিনি যে পূর্ণ।

৮৫.
গীতা শুধুমাত্র একটা পাঠ্যপুস্তক নয়, যে তুই নিয়মিত পাঠ করবি, কষ্ট করবি সব সংস্কৃত শ্লোক, গীতা হবার সাধনা কর।

৮৬.
অহং চলে গেলে মনই নিজের গুরু হয়, বুদ্ধি জাগ্রত হয়, সৎ ও অসৎ এর বিচার আসে। জ্ঞানের সাথে ভক্তির যোগ করে দিয়ে তোরা মণিকাঞ্চন হলে শ্রদ্ধা হবে তোদের আশ্রয়, শ্রদ্ধাই হবে তোদের বান্ধব, শ্রদ্ধাই হবে তোদের পাথেয়।

৮৭.
শত বছরেরও অধিক পাহাড় পর্বত বন জঙ্গলে ঘুরে তোদের ঈশ্বরের সঙ্গে আমার দেখা হলো না। আমি দেখলাম শুধু আমাকে, আমি বন্ধ আছি সংসারে, সংসার বদ্ধ আছে জিহ্বা এবং উপস্থে। যে এই দুটোর সংযম করতে পেরেছে একমাত্র সেই সিদ্ধি লাভের অধিকারী।

৮৮.
কিন্তু যখন দেখি রোগ যন্ত্রণায় খুব কষ্ট পাচ্ছিস, আর সহ্য করতে পারছিস না, তোদের যন্ত্রণা কাতর, ‘বাবা’ ডাকে আমার অন্তর বিগতি হয়। তখন তোদের ঐ কষ্ট দূর না করে থাকতে পরি না।

৮৯.
মানসিক দু:খ, সন্তোষের অভাব, মনের ক্ষোভই অসন্তোষের ফল।

৯০.
সমাধির উচ্চতম শিখরে গিয়ে যখন পরমতত্ত্বে পৌঁছালাম, তখন দেখি আমাতে আর অখিল ব্রহ্মাণ্ডের অস্তিত্বে কোনো ভেদ নেই, সব মিলেমিশে একাকার।

আরো পর্ব:
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর অমিয় বাণী: পর্ব-১
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর অমিয় বাণী: পর্ব-২

আরো পড়ুন:
চাণক্য পন্ডিতের অমূল্য বাণী
বেদ’ এর কিছু অমৃত বাণী ও উপদেশ।
শ্রীকৃষ্ণের অমর বাণী সমাহার

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel