হোমপেজ ইসলামের ভ্রান্ত ধারণা কাফের মানে কি এবং কাফের মূলত কারা।

কাফের মানে কি এবং কাফের মূলত কারা।

কাফের মানে কি এবং কাফের মূলত কারা।

কাফের আরবী শব্দ যার বাংলা অর্থ ঢেকে রাখা ও অস্বীকার করা। মূলত কাফের শব্দটি অর্থ দাঁড়ায় সত্যকে ঢেকে রাখা এবং সত্যকে অস্বীকার করা। কাফের শব্দটি ব্যাখ্যা করতে গেলে সুবিশাল হয়ে দাঁড়ায়। যা আমার মতো অধমের পক্ষে কখনো সম্ভব নয়। আমি শুধু অতি সামান্য কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করব।

পৃথিবীতে প্রায় সকল ধর্মের মানুষই সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করে এবং মানে। কেউ সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতাকে অস্বীকার করে না বরং সবাই একবাক্যে স্বীকার করে নেয়। কেউ আল্লাহ বলে, কেউ ভগবান, গড ইত্যাদি বলে ডাকে। শুধুমাত্র নাস্তিকরা বাদে। তবে নাস্তিকদের উদ্ভব খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। আধুনিক বিশ্বায়নে যখন বিজ্ঞান চরম উন্নতির পথে অগ্রসর হয়েছে, তখন এই নাস্তিকদের উদ্ভব হয়েছে। যাক আমার প্রসঙ্গ সেইদিকে নয়।

পৃথিবীতে যখন প্রথম নবী বাবা আদম আঃ এর আগমন ঘটে, তখন বাবা আঃ এর নির্দেশ অমান্য করে এক ভাই অপর ভাইকে হত্যা করে। মূলত আল্লাহর মনোনীত প্রতিনিধিদের নির্দেশ অমান্য করার নামই কাফের। যুগে যুগে মানুষ যখন পথহারা ভ্রান্ত পথিকের ন্যায় ঘুরতে থাকে এবং জাতি যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়, তখন আল্লাহ দয়া করে তাঁর মনোনীত নবী ও রাসূল প্রেরণ করে থাকতেন। যাতে মানুষ অন্ধকার থেকে আলোর পথের সন্ধান খুঁজে পায়।

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, যখনই কোন নবী রাসূল নিজেকে নবী ও রাসূল বলে সমাজে প্রচার করল এবং মানুষকে আলোর পথে আহবান জানালো, তখনই ঐ সমাজের অধিকাংশ মানুষ নবীদের বিরোধিতা শুরু করে দিল। তারা যুগে যুগে প্রতিটি নবী রাসূলকে উল্টো ভন্ড, কাফের, বিধর্মী ইত্যাদি উপাধি দিয়ে দিল এবং অকথ্য অমানুষিক অত্যাচার শুরু করে দিল। অসংখ্য নবীকে তারা হত্যা পর্যন্ত করল। তাই তো নবীরা আল্লাহর মনোনীত ধর্মকে কখনো সমাজে পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। যেমন নুহ নবী আঃ ৮০০ বছর ধর্ম প্রচার করে মাত্র ৮০ জন অনুসারী বা ভক্ত করতে সক্ষম হন।

হযরত রাসূল পাক সঃ যখন আল্লাহর মনোনীত ধর্ম নিয়ে আবির্ভাব হন, তখন তাঁকেও অধিকাংশ লোক মেনে নিতে পারেনি। বরং অকথ্য নির্যাতন এবং ভন্ড উপাধি পেয়ে বসল। তারপরও দয়াল রাসূল পাক সঃ ত্যাগের জলন্ত মহীমার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্হাপন করে মোহাম্মদী ইসলাম ধর্মকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে গেলেন। পরিশেষে রাসূল পাক সঃ বিদায় হজ্জের ভাষণ শেষে গাদীরে খুম নামক স্হানে এক মহা ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করে গেলেন। যা পরবর্তী মুসলিম জাতির জন্য চূড়ান্ত দিকনির্দেশনা দিয়ে যান। যাতে মানুষ কখনো পথভ্রষ্ট না হয়।

রাসূল পাক সঃ সোয়া লক্ষ সাহাবীর সামনে মাওলা আলীর হাত উত্তোলন করে বলে গেলেনঃ

“আমি যার যার মাওলা আলী তার তার মাওলা। যে আলীকে ভালোবাসে সে আমাকে ভালোবাসে এবং যে আলীর শক্রতা করে সে আমার শক্রতা করে।”

“আলী হলো আমার একমাত্র উত্তরসূরী। আলীর শান্তি আমার শান্তি এবং আলীর যুদ্ধ আমার যুদ্ধ।”

“কুরআন এবং সত্য আলীর সাথে এবং আলী কোরআন ও সত্যের সাথে। আলী যেদিকে মোড় নেয়, সত্য সেদিকে মোড় নেয়।”

“মুমিন ব্যক্তি কখনো আলীর বিদ্বেষ পোষণ করবে না এবং মোনাফেক কখনো আলীকে ভালোবাসবে না।”

“হে মুসলিম জাতি! তোমরা আল্লাহর পবিত্র কুরআন এবং আমার আহলে বায়াতকে আঁকড়ে ধরে থাক, তাহলে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না।”

তখন সবাই একবাক্যে শেরে খোদা হযরত আলীকে মাওলা হিসাবে মুখে মুখে স্বীকার করে নিলেন এবং অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাইল।

কিন্তু রাসূল পাক সঃ যখন পর্দা নিলেন, তখন থেকে সবকিছু উলট পালট হয়ে গেল। অধিকাংশ সাহাবী মাওলা আলীর বিরোধিতা শুরু করে দিল। যার চূড়ান্ত বাস্তবায়ন ঘটে সিফফিন যুদ্ধের মাধ্যমে। মোয়াবিয়া সামান্য একজন গর্ভনর হয়ে রাষ্টীয় এবং রাসূল পাক সঃ এর মনোনীত খলিফার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বসল। এই যুদ্ধে মোনাফেক মোয়াবিয়া মাওলা আলীর পক্ষের হাজার হাজার মুমিন সাহাবীকে নির্মমভাবে হত্যা করে বসে। সিফফিন যুদ্ধের পরবর্তীতে মাওলা আলীকে নামাজরত অবস্থায় হত্যা করা হয়, ইমাম হাসান আঃ কে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয় এবং কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইনকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

এবার শুনুন মহাশয়, এই হত্যাকান্ডগুলো কিন্তু কোন বিধর্মী করে নাই। বরং নামদারী সাহাবী এবং কোরআনের হাফেজরা করে। সাহাবী মানে হল নিষ্পাপ এবং মুমিন। এখন আহলে বায়াতকে হত্যা করার নাম যদি পবিত্র এবং মুমিন হয়, তাহলে এমন জ্ঞান পাপীদেরকে আমার কিছু বলার নাই। হায়রে মুসলমান! রাসূল পাক সঃ ওফাত হওয়ার সাথে সাথে তাঁর বংশধরকে হত্যা করে ফেলল। বাহ কি চমৎকার মুসলমান আমরা।

যারা আল্লাহর মনোনীত মহামানব নবী, রাসূল, পাক পান্জাতন এবং অলী আল্লাহরদের দেখানো পথ এবং মত অস্বীকার করে ও বিরোধিতা করে তারাই মূলত সত্যকে ঢেকে রাখে এবং সত্যকে অস্বীকার করে। আরে ভাই আপনি আল্লাহর মনোনীত মহামানবকে অস্বীকার করে কিভাবে মুসলমান হতে চান? এটা কি আল্লাহর বিধি লঙ্ঘন হয় না। আল্লাহর মনোনীত মহামানবকে অস্বীকার করা মানেই আল্লাহকে অস্বীকার করার নামান্তর।

আল্লাহর মনোনীত মহামানব নবী ও রাসূল, পাক পান্জাতন এবং অলী আল্লাহদের দেখানো পথ এবং মতকে অস্বীকার করার নামই কাফের। আপনি নিশ্চয়ই বলতে চাচ্ছেন, আমাদের কাছে পবিত্র কুরআন ও হাদিস আছে, তাহলে আমরা তাদেরকে মানব কেনো। আরে ভাই রাসূল পাক সঃ পর্দা নেওয়ার পর এই কথাটি খারেজিরা বলেছিল আপনার মতো করে। আপনি কি সেই খারেজী দলে নাম লিখাতে চান? তাহলে আমার কিছু করার নাই। যদি তাই হতো তাহলে বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী রঃ ও খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি রঃ সহ অসংখ্য অলী আল্লাহ জগতে আসত না।

আরে ভাই আল্লাহর পবিত্র কুরআন শরীফের এই নিগূঢ় রহস্য বুঝাইতেই আল্লাহ তাঁর মনোনীত মহামানব অলী আল্লাহ জগতে সবসময় প্রেরণ করে থাকে। অলী আল্লাহরা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথের সন্ধান দিয়ে থাকে। তাঁরা পাক পান্জাতনের ভালোবাসা মানুষের দীলে পয়দা করে দেয় এবং আল্লাহ ও রাসূল পাক সঃ এর সাথে স্বাক্ষাৎ ঘটিয়ে দেয়। নচেৎ যুগে যুগে নবী ও রাসূল এবং অলী আল্লাহর প্রেরণ হতো না। এই অমোঘ মহাসত্য সহজ কথাটি বুঝতে না পারলে আমার কিছু করার নাই। মনে রাখবেন পাক পান্জাতনকে ভালোবাসার নামই ধর্ম। এর বাহিরে কোন ধর্ম নাই। মোজাম্মেল পাগলা কেঁদে হয় ব্যাকুল, পাক পাঞ্জাতন ছাড়া নাই কূল। জয় পাক পান্জাতনের জয়। অধমের লেখায় মনে কষ্ট পেলে নিজগুণে ক্ষমা করবেন।

নিবেদক: অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।