মিলাদ কিয়াম সম্পর্কে আলোচনা পর্ব-৩
পর্ব-৩
(১) সকল দেওবন্দী আলেমদের দাদা ওস্তাদ হাজী এমদাদুল্লাহ মহাজির মক্কী (রহ:) যাকে ছাড়া দেওবন্দীদের কোনো অস্তিত্ব থাকেনা। তিনি ফায়্সালায়ে হাফতে মাসায়ালা কিতাবের ৫পৃষ্ঠায় বলেন:
ﻣﻮﻟﻮﺩ ﺷﺮﻳﻒ ﻛﻮ ﺫﺭﻳﻌﻪ ﺑﺮﻛﻠﺖ ﺳﻤﺠﻪ ﻛﺮ ﻫﺮ ﺳﺎﻝ ﻣﻨﻌﻘﺪ
ﻛﺮﺗﺎﻫﻮﻥ ﺍﻭﺭﻗﻴﺎﻡ ﻛﮯ ﻭﻗﺖ ﺑﮯ ﺣﺪ ﻟﻄﻒ ﻭﻟﺬﺕ ﭘﺎﺗﺎﻫﻮﯼ
“ফকিরের (আমার) মত এই যে, আমি মৌলুদ শরীফের মাহফিলে শরিক হই। আর ইহাকে বরকতের কারণ মনে করিয়া প্রত্যেক বৎসর অনুষ্ঠান করিয়া থাকি এবং কিয়াম করার সময় খুবই স্বাদ ও আনন্দ উপভোগ করি।”
হাজী এমদাদুল্লাহ মহাজির মক্কী (রহ:) উনার শামায়েলে এমদাদীয়া কিতাবের ৮ পৃষ্ঠায় আরও উল্লেখ করেন,”আমাদের অনেক দেওবন্দী আলেমগনই মিলাদ শরীফের বিরোধিতা করছে। কিন্তু আমি মিলাদ কিয়াম শরিফ জায়েজপন্থী আলেমগণের পক্ষেই গেলাম।”
(২) দেওবন্দীদের আরেক গুরু ওস্তাদ মাওলানা আশরাফ আলী থানবী উনার “এমদাদুল ফতুয়া” কিতাবের চতুর্থ খন্ডের ৪২০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন “হুজুরে পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৌলুদ শরীফের মাহফিল সম্পূর্ণ জায়েজ ও মুস্তাহাব।যখন তা হিন্দুস্তানের প্রচলিত বিদাতের অন্তর্ভুক্ত হবেনা এবং মিলাদ শরীফের কিয়াম কখনো কুফরী হবে না।”
থানভী সাহেব উনার তরীকায়ে মিলাদ কিতাবের ৮ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ করেন, “ওই সকল কাজ অর্থাৎ শিরনী বিতরণ,মিলাদের কিয়াম অবশ্যই ভালো কাজের অন্তর্ভুক্ত।” এতে ক্ষতির কিছুই নেই এবং মিলাদের কিয়ামের ক্ষেত্রে কোন নিষেধ থাকতে পারেনা।
(৩) দেওবন্দীদের আরেক নির্ভরযোগ্য আলেম মাওলানা সামসুল হক ফরিদপুরী উনার তাসাউফ তত্ত্ব কিতাবের (৩৫- ৪৭ পৃঃ) পর্যন্ত শুধুই মিলাদের অসংখ্য বাব নিয়ে এসেছেন এবং ৪১ পৃষ্টায় উল্লেখ করেন “হুজুরে পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শানে যে কাসিদা পড়া হয় তাতে মহব্বত বাড়ে আর ওই মহব্বতের জোরে যদি কেউ মিলাদের কিয়ামে দাড়িয়ে যায় তাহলে তাকে বেদাত বলা যাবেনা।আর হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বসে বসে সালাম দেওয়া হুজুরের শানে বড়ই বেয়াদবী।”
(৪) মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী দেওবন্দীর দৃষ্টিতে মিলাদ ও ক্বিয়াম করা মুস্তাহাব।
[মাকতুবাতে শাইখুল ইসলাম,১ম খণ্ড, ৩৩৯ পৃঃ]
(৫) দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা হাজী সৈয়দ আবেদ হুসাইন হানাফী প্রত্যেক শুক্রবার মাগরিবের নামাযের পর মিলাদ শরীফের আয়োজন করতেন।হাজী সাহেবের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ঐ মিলাদ ও ক্বিয়ামের অনুষ্ঠান জারী ছিল।
[মিলাদ ও ক্বিয়ামের ফতোয়া,৮৬ পৃঃ]
– কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন: সুন্নীয়তের নয়ন মনি অধ্যক্ষ এম এ জলিল (রহঃ), মিলাদ ও কিয়ামের বিধান।
আরো পড়ুনঃ ↓
» মিলাদ কিয়াম সম্পর্কে দলিল ভিত্তিক আলোচনা পর্ব-১
» মিলাদ কিয়াম সম্পর্কে দলিল ভিত্তিক আলোচনা পর্ব-২
» মিলাদ কিয়াম সম্পর্কে দলিল ভিত্তিক আলোচনা পর্ব-৩