আপনি কি আল্লাহর মনোনীত ইমামের দলে আছেন?
আপনি কি আল্লাহর মনোনীত ইমামের দলে আছেন নাকি শয়তানের মনোনীত ইমামের দলে আছেন?
পবিত্র আল কোরানে আল্লাহু বলেন:-
يَومَ نَدعو كُلَّ أُناسٍ بِإِمامِهِم فَمَن أوتِيَ كِتابَهُ بِيَمينِهِ فَأُولئِكَ يَقرَءونَ كِتابَهُم وَلا يُظلَمونَ فَتيلًا
“স্মরণ কর, যেদিন আমি প্রত্যেক মানুষকে তাদের ইমামসহ ডাকব। অতঃপর যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে তারা নিজদের আমলনামা পাঠ করবে এবং তাদের প্রতি সামান্য পরিমাণ অবিচার করা হবে না।” (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত নং ৭১)।
হাদিস শরীফে উল্লেখ আছে:
“বান্দা নফল ইবাদত দ্বারা আমার এত নিকটবর্তী হয়ে যায় যে, আমি তাকে ভালবাসতে থাকি, আর যখন আমি তাকে ভালবাসতে থাকি তার কর্ণ হয়ে যাই, যে কর্ন দ্বারা সে শোনে ; চোখ হয়ে যাই, যে চোখ দ্বারা সে দেখে; হাত হয়ে যাই, যে হাত দ্বারা সে ধরে ; পা হয়ে যাই, যে পা দ্বারা সে হাটে ; কোন বিষয়ে প্রার্থনা করা মাত্র আমি অবশ্যই তা দান করে থাকি এবং কোন বিষয়ে মাফ চাওয়া মাত্র আমি অবশ্যই তা মাফ করে থাকি”।
(বোখারি শরিফ, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৯৬৩, মেশকাত শরিফ, পৃষ্ঠা নং ১৯৭ এবং তাফসীরে মাজহারি ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা নং ৫৮)
মহান আল্লাহ তায়ালা রোজ হাশরের মাঠে বিচার দিবসে প্রত্যেক মানুষকে তার ইমামসহ ডাকবে। আর তাদের আমলনামা তারা নিজেরাই পাঠ করবে এবং আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি সামান্যতম অবিচার করবে না। ইমাম অর্থ এখানে ধর্মীয় নেতা বুঝানো হয়েছে। যুগে যুগে মহান আল্লাহ তায়ালা নবীদের যুগে নবী-রাসূল এবং বেলায়াতের যুগে অলী আল্লাহ রুপে ধর্মীয় নেতা প্রেরণ করেছেন এবং করে থাকেন। এই ধারা কেয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। পাশাপাশি শয়তানও প্রত্যেক যুগে আল্লাহর মনোনীত ইমামদের বিপরীতে তার ধর্মীয় নেতা প্রেরণ করে থাকে। যেমন মূসা নবীর বিপরীতে ফেরাউন, ইব্রাহিম নবীর বিপরীতে নমরুদ, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিপরীতে আবু জেহেল, মাওলা আলীর বিপরীতে মোয়াবিয়া, মাওলা ইমাম হোসাইনের বিপরীতে ইয়াজিদ, বড়পীর আবদুল কাদের জিলানীর বিপরীতে তৎকালীন পথভ্রষ্ট আলেম সমাজ, খাজা মঈনুদ্দিন চিশতীর বিপরীতে রাজা পৃথ্বিরাজ, হযরত শাহ জালালের বিপরীতে রাজা গৌড় গোবিন্দ ইত্যাদি।
আপনি ভাবছেন এখন আপনি কার দলে আছেন। উদাহরণটা সুন্দর করে বুঝানোর জন্য উপস্থাপন করছি, ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য নয়। যেমন যারা জামায়াত ইসলাম করে, তারা আছেন আবুল আলা মওদুদির দলে, হেফাজত ইসলামের লোকজন আছে আহমদ শফীর দলে, আহলে হাদিসরা আছে আলবানির দলে, ওহাবীরা আছে আবদুল ওহাব নজদীর দলে, যার যার পীরের অনুসারীরা আছেন তাদের পীরের দলে এবং সাধারণ জনগণ আছেন তাদের মসজিদের মৌলভীদের দলে। মোটকথা আপনি যে ব্যক্তির কথা শুনে ধর্ম পালন করছেন, রোজ হাশরের মাঠে সেই হবে আপনার ইমাম।
এখন আপনার বিবেককে প্রশ্ন করুন, আপনার ইমাম কি আল্লাহর মনোনীত ইমাম কিনা? আল্লাহর মনোনীত ইমামদের বিপরীতে ইমামগণ হলেন শয়তানের মনোনীত ইমাম। আল্লাহর মনোনীত ইমামদের বিরুদ্ধে সর্বযুগেই শয়তানের মনোনীত ইমামরা বিরোধিতা করে আসছে। মনে রাখবেন, এই শয়তানের মনোনীত ইমামসহ সকল অনুসারীরা নিশ্চিত বিপদগামী। আল্লাহর মনোনীত ইমামদের অলৌকিক কারামত থাকবে, যার জন্য তাঁর অনুসারীরা সহজেই বুঝতে পারবে। বর্তমান যুগে আল্লাহর মনোনীত ইমামগণ হলেন অলী আল্লাহগণ এবং আল্লাহর মনোনীত অলী আল্লাহদের বিরোধীকারীরা হলো শয়তানের ইমাম। দাদা ভাই এখনো সময় রয়েছে, আপনার বিবেক বুদ্ধি দিয়ে আল্লাহর মনোনীত ইমামদের পক্ষে থাকা। নচেৎ নিশ্চিত শয়তানের মনোনীত ইমামের অনুসারী হয়ে রোজ হাশরের মাঠে উঠতে হবে।
শয়তান কিন্তু সূক্ষ্ম কৌশলের অধিকারী। সবাইকে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের কথা বলেই ধোঁকা দিবে। এই দলটা সবসময় কোরআন ও হাদিসের দোহাই দিয়ে পাক পাঞ্জাতন ও অলী আল্লাহদের বিরোধিতা করে আসছে। এদেরকে আপনারা খুব ভালো করেই চিনেন। আপনি কেমন ইমামের অনুসরণ করছেন, তার চরিত্র দেখলেই সুস্পষ্ট বুঝতে পারবেন। তার চরিত্র কি শয়তানের মতো নাকি আল্লাহর মতো, এটাই আল্লাহর মনোনীত ইমাম চেনার উত্তম মানদণ্ড। যারা আল্লাহ এবং রাসূলের চরিত্রে চরিত্রবান হতে পারছে, তাঁরাই একমাত্র আল্লাহর মনোনীত ইমাম। বিচার বিশ্লেষণের ভার আপনার উপরই রইলো। অধম শুধু উপস্থাপন করলাম মাত্র। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলেকে হেদায়েত নসিব করুক। আমিন
নিবেদক : অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।