সংক্ষিপ্ত ওজিফা (শেষ পর্ব)।
বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে খোদাপ্রাপ্তিতত্ত্বের প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন যে সকল ওজিফা সমূহ এবং তরিকতের অন্যান্য কাজ করিতে হয়, নিম্নে ধারাবাহিক ভাবে তাহা বর্ণিত হইল।
ফজর ওয়াক্ত
১। ফজর নামাযান্তে আদবের সাথে বসিয়া মনােযােগ সহকারে নিম্নের ফাতেহা শরীফ আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ সহ পড়িবেন।
استغفر الله ربی من کل ذنب واتوب اليه
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বী মিন কুল্লে জাম্বেও ওয়া তুবু ইলাইহে- ৭ বার।
২। তারপর বিছমিল্লাহ শরীফের সাথে সূরা ফাতেহা (আলহামদু সূরা)- ৩ বার।
৩। তারপর বিছমিল্লাহ শরীফের সাথে সূরা এখলাস (কুলহু আল্লাহ)- ১০ বার।
৪। তারপর দরুদ শরীফ- ১১ বার।
اللهم صل على سيدنا محمد و سيتي اليك و آله وسلم
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লে আলা ছাইয়্যেদেনা মােহাম্মাদিও ওয়াছিলাতি ইলাইকা ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লেম।
উক্ত ফাতেহা শরীফ পড়া শেষ হইলে নিম্নোক্তভাবে মুনাজাত করিবে।
মুনাজাত
ইয়া আল্লাহ! এই ফাতেহা শরীফের ভুল-গলতি মাফ করিয়া কবুল কর, কবুল করিয়া ইহার সওয়াব নজর পৌছাও- আমাদের এই তরিকার ইমাম হযরত শায়খ আহমদ ছিরহিন্দী, ইমামে রব্বানী, কাইউমে জামানী, মাহবুবে ছােবহানী, মুজাদ্দেদ আলফেছানী (রাঃ), তাহার বিবি ছাহেবা (রঃ) ও তাহার চার পুত্র খাজায়েনে রহমত এবং তাঁহাদের নেছবতে যত ওলীআল্লাহ ইন্তেকাল করিয়াছেন, তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে।
দয়া করিয়া সওয়াব নজর পৌছাও -হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ (রঃ), হযরত গাওস পাক আবদুল কাদের জিলানী (রঃ), হযরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রঃ), হযরত মাদার (রঃ), হযরত কলন্দর (রঃ), হযরত মােছাফিয়া (রঃ), হযরত জোনায়েদ বােগদাদী (রঃ), হযরত জুন্নুন মিছরী (রঃ), সুলতানুল আওলিয়া হযরত বায়েজিদ বােস্তামী (কুঃ ছেঃ আঃ), হযরত শেখ ফরিদ (রঃ), হযরত নিজামুদ্দীন (রঃ), হযরত ফজিল (রঃ), হযরত শাহ কামাল (রঃ), হযরত বাকিবিল্লাহ (রঃ), আশেকে রাসূল হযরত বেলাল (রাঃ), হযরত ওয়ায়েছ করণী (রাঃ), তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে।
ইয়া আল্লাহ! দয়া করিয়া সওয়াব নজর পৌছাও হযরত মাওলানা শাহসূফী ফতেহ আলী (রঃ), তাঁহার বিবি ছাহেবা (রঃ) ও তাঁহাদের নেছবতে যত ওলীআল্লাহ ইন্তেকাল করিয়াছেন, তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে। দয়া করিয়া সওয়াব নজর পৌছা হযরত মাওলানা শাহসূফী সৈয়দ ওয়াজেদ আলী (রঃ), তাঁহার বিবি ছাহেব (রঃ) ও তাঁহাদের নেছবতে যত ওলী-আল্লাহ ইন্তেকাল করিয়াছেন, তাহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে।
কুতুবুজ্জামান, দুররে মাকনুন, মরহুমা মাগফুরা হযরত জহুরা খাতুন (রঃ), তাহার কলিজার টুকরা হযরত এহসান (রঃ), তাহার নেছবতে যত ওলীআলাহ ইন্তেকাল করিয়াছেন -তাহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে সওয়াব নজর পৌছাও -আল্লাহ।
ইয়া আল্লাহ! দয়া করিয়া সওয়াব নজর পৌছাও আরেফে কামেল, মুর্শিদে মুকাম্মেল, খাজায়েনে রহমত, হযরত শাহসূফী খাজা এনায়েতপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ) ছাহেবের হুজুরে, তাহার ওয়ালেদাইন, খেশ আকরাবা, তাঁহার যত আওলাদ এবং মুরিদান ইন্তেকাল করিয়াছেন তাঁহাদের সকলের আর ওয়াহ পাকের হুজুরে।
হে খােদা! পৌছাও সওয়াবে নজর আমাদের দয়াল পীর, দস্তগীর, আরেফে কামেল, মুর্শিদে মুকাম্মেল, মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা শাহসুফী ফরিদপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ) ছাহেবের হুজুরে, তাহার মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, তাঁহার যত আওলাদ ও যত মুরিদান ইন্তেকাল করিয়াছেন, তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে সওয়াব নজর পৌছাও-আল্লাহ। হে আল্লাহ! সওয়াব নজর পৌছাও আমাদের বড় পীর আম্মা (রঃ) ও পীর আম্মা (রঃ) দ্বয়ের হুজুরে।
তরিকার যত ওলীআল্লাহ, গাওস-কুতুব, নুজাবা, নুকাব, আইয়ার। আবদাল ইন্তেকাল ফরমাইয়াছেন, তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজরে সওয়াব নজর পৌছাও। ইয়া আলাহ! আমাদের মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং যত মুমিন মুমিনাত, যাঁহারা ইন্তেকাল করিয়াছেন তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে সওয়াব নজর পৌছাও, আল্লাহ তাঁহাদের কবর কোশাদা কর, কবর রৌশন কর, কবরে বেহেশতের দরজা খুলিয়া দাও, আল্লাহ! আবাদুল আবাদ পর্যন্ত তাঁহাদের উপর রাজী ও খােশ থাক, আল্লাহ।
হে আল্লাহ! আমরা চির নাদান, চির গুনাহগার। তুমি রহমান, রহিম, গফুর মাফ করনেওয়ালা। তুমি দয়া করিয়া তােমার ফযল, করম ও রহমে, তােমার হাবিব পাকের খাতিরে আমাদের জীবনের পুঞ্জিভূত সকল গুনাহ মাফ কর এবং আমাদিগকে মাঞ্জিলে মাকছুদে পৌছাইয়া দাও, আল্লাহ! তুমি দয়া করিয়া আখেরী জামানার ফেৎনাফাহাদ হইতে আমাদের বাঁচাও।
মানুষ-শয়তান, জিন-শয়তান, খবিছ-শয়তান, আরওয়াহ-শয়তান ও নফছ-শয়তানের হাত হইতে আমাদিগকে বাঁচাও। দয়া করিয়া এই ক্ষমতা ভিক্ষা দাও -এক মুহূর্তও যেন তােমাকে না ভুলি। তােমার নাম লইতে লইতে, তােমার গুণ গাইতে গাইতে, তােমার জামালের দিদারের হাউসে কাবাব বনতে বনতে আমাদেরকে ‘খাতেমা বিল খায়ের কর, আল্লাহ! আমিন, আমিন, সুম্মা আমিন, বেহাক্কে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
মুনাজাত শেষ হইলে নিম্নের খতম শরীফ পড়িবেঃ
খতম শরীফ পড়িবার নিয়ম হযরত দয়াল পীর কেবলাজান ছাহেবের পাক দিলের সহিত নিজের নাপাক দিল ওসিলা করিয়া হযরত মাওলানা শাহসূফী এনায়েতপুরী (কুঃ) ছাহেবের পাক দিলের সহিত দিল মিলাইবে। খেয়াল করিবে। শরীয়তের পর্দার অন্তরালে আফজালে জামানিয়া, মারহুমা মাগফুরা হযরত জহুরা খাতুন (রঃ) -এর দু’আর বরকতে আল্লাহর তরফ হইতে তাইদ ও মদদ আসিয়া দিলে পড়িতেছে।
তাহার পর পর্যায়ক্রমে কুতুবুল এরশাদ হযরত শাহসূফী সৈয়দ ওয়াজেদ আলী (রঃ) ছাহেবের পাক দিলের সহিত দিল মিশাইয়া পরে হযরত শাহসূফী ফাতেহ আলী (রঃ) ছাহেবের পাক দিলে দিল মিশাইবে, ইহার পরে সুলতানুল আওলিয়া হযরত শায়খ আহমদ ছিরহিন্দী মুজাদ্দেদী আলফেছানী (রাঃ) ছাহেবের পাক দিলের সহিত নিজের নাপাক দিল ওসিলা করিয়া দয়াল নবী হযরত রাসূলে পাক (দঃ) -এর পাক দিলের সহিত নাপাক দিল মিশাইয়া এবং আল্লাহতায়ালার জাত পাকের দিকে দিল রুজু করিয়া তাহার কুওয়াতের ফয়েয ভিক্ষা চাহিবে।
খেয়াল করিবে-দোছরা দায়েরা হইতে কুওয়াতে এলাহিয়ার ফয়েয জাত পাক হইয়া, রাসূলে পাক (দঃ) -এর পাক দিল হইয়া পীরানে পীরগণের পাক দিলসমূহ হইয়া দয়াল পীর কেবলাজান ছাহেবের পাক দিল হইয়া নিজের দিলে আসিতেছে। দিলের জাহের বাতেন, ছফিদায়ে কালব, ৭০ হাজার পর্দার ভিতর যত গুনাহর পাহাড়, গুনাহর জুলমাত, গুনাহ করার হাউস, নাফসের কু খায়েশ, মানুষ-শয়তান, জিন-শয়তান, খবিস-শয়তান, আরওয়াহ-শয়তান ও নাফস-শয়তানের ওয়াছওয়াছা, যাদু-টোনা, বান, মন্ত্র-তন্ত্র ও যত প্রকার বিপদ-আপদ এবং মাথা হইতে পায়ের তলা পর্যন্ত যত রকম ব্যাধি ও বালা-মছিবত সব কিছুর উপর। আল্লাহ পাকের কুওয়াতের ফয়েয পড়িয়া সলব হইয়া সিজ্জিন দোজখে পড়িতেছে ও দিল সাফ হইতেছে।
এই সাফ দিলে হযরত শায়খ আহমদ ছিরহিন্দী মুজাদ্দেদী আলফেছানী (রাঃ) ছাহেবের খাস মহব্বতের ফয়েয খেয়াল করিতে হইবে এবং এই মহব্বতে ডুবিয়া থাকিয়া নিম্নের খতম শরীফ পড়িয়া মুজাদ্দিদ আলফেছানী (রাঃ) ছাহেবকে নজরানা দিতে হইবে।
খতম শরীফ
নিম্নোক্ত দরূদ শরীফ ১০০ বারঃ
الله صل على سيدنا محمد وسيلتي اليك و آله وسلم
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লে আলা ছাইয়্যেদেনা মােহাম্মাদিওঁ ওসিলাতি ইলাইকা ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লেম।
অতঃপর নিম্নোক্ত দুআ
لا حول ولا قوة الا بالله
উচ্চারণঃ লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ …. ৫০০ বার।
পুনরায় উল্লিখিত দরূদ শরীফ ১০০ বার।
বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে খতম শরীফ পড়ার শেষে যে গযলটি হযরত মুজাদ্দেদ আলফেছানী (রাঃ) ছাহেবের শানে পেশ করা হয়, নিম্নে উহা প্রদত্ত হইলঃ
গযল
মুজাদ্দেদ আলফে সানী মান
দেলােজানম বাশও কেতু
বহরদম যা রে মিনালেদ
নামাআতাল আতে জিবা
গােলামেতু শুদাম আজজান
মুরীদেতু শুদাম আজদেল
শুয়াদ বরপায়েতু কুরবাঁ।
বমিছকিনাম দরে গাহাদ
চু ফরমায়ে নযর বারে
বহালম হাম নযর ফরমা
কেখাকে পায়ে মিছকিনাম।
জোহর ওয়াক্ত
জোহর ওয়াক্তের ফরজের পরবর্তী সুন্নত নামাযান্তে নিম্নলিখিত নিয়মে দুই রাকআত নফল নামায পড়িবে। প্রথম রাকাআতে সূরা ফাতেহার পর সূরা কাফেরুন ও দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ফাতেহার পর সূরা এখলাছ। যাহার সূরা কাফেরুন জানা নাই বা মনে নাই, সে উভয় রাকআতেই সূরা ফাতেহার পর সুরা এখলাছ দ্বারা পড়িবে, নামাযান্তে মুনাজাত করিবে।
নফল নামাযের মুনাজাতঃ
হে আল্লাহ! এই দুই রাকআত নফল নামাযের ভুল-গলতি মাফ করিয়া কবুল কর এবং ইহার সওয়াব নজর পেীছা আমাদের দয়াল নবী, সারওয়ারে কায়েনাত, মােফাখখারে মওজুদাত, হযরত আহমদ মুজতবা মুহাম্মদ মােস্তফা (দঃ) তাঁহার আল আওলাদ, আল-আসহাব, আযওয়াজে মুতাহারাত, খুলাফায়ে রাশেদীন, আশারায়ে মুবাশ্বেরীন ও আহলে বায়াতের হুজুরে।
সওয়াব নজর পৌছা খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমাতুজ্জোহরা (রাঃ), হযরত ইমাম হাসান (রাঃ), হযরত ইমাম হােসেন (রাঃ) এবং তাহাদের মহব্বতে যত লােক কারবালার ময়দানে শহীদ হইয়া গিয়াছেন- তাহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে।
ইয়া আল্লাহ! সওয়াব নজর পৌছা- আমাদের তরিকার ইমাম হযরত শায়খ আহমদ ছিরহিন্দী মুজাদ্দিদ আলফেছানী (রাঃ) এবং তাঁহার নেছবতে যত ওলীআল্লাহ ইন্তেকাল করিয়াছেন, তাঁহাদের হুজুরে। সওয়াব নজর পৌছা হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশবন্দ (রঃ), হযরত কলন্দর (রঃ), হযরত চিশতী (রঃ), হযরত মাদার (রঃ), হযরত ছালমান ফারছী (রাঃ), আশেকে রাসূল হযরত বিলাল (রাঃ), হযরত ওয়ায়েছ করনী (রাঃ), সুলতানুল আউলিয়া হযরত বায়েজীদ বােস্তামী (কুঃ ছেঃ আঃ), হযরত শেখ ফরিদ (রঃ), হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়া (রঃ), হযরত মােছাফিয়া (রঃ), হযরত শাহজালাল (রঃ), হযরত খাজা বাকিবিল্লাহ (রঃ) তাঁহাদের সকলের আরওয়াহ পাকের হুজুরে।
ইয়া আল্লাহ! দয়া করিয়া সওয়াব নজর পৌছা- হযরত শাহসূফী ফতেহ আলী (রঃ), তাঁহার বিবি ছাহেবা (রঃ) এবং তাঁহার নেছবতে যত ওলীআল্লাহ ইন্তেকাল করিয়াছেন, তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে। হযরত শাহসূফী সৈয়দ ওয়াজেদ আলী(রঃ), তাঁহার নেছবতে। যত ওলীআল্লাহ ইন্তেকাল করিয়াছেন তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে। কুতুবুজ্জামান, দুররে মাকনুন, মরহুমা মাগফুরা হযরত জহুরা খাতুন (রঃ), তাঁহার কলিজার টুকরা হযরত এহসান (রঃ) ও তাহার নেছবতে যত ওলীআল্লাহ ইন্তেকাল করিয়াছেন, তাহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে সওয়াব নজর পৌছা, আল্লাহ।
ইয়া আল্লাহ! দয়া করিয়া সওয়াব নজর পৌছাও-আরেফে কামেল, মুর্শিদে মুকাম্মেল, খাজায়েনে রহমত হযরত শাহসূফী খাজা এনায়েতপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ) ছাহেবের হুজুরে, তাঁহার ওয়ালেদাইন, খেশ আকরাবা, তাঁহার যত আওলাদ এবং মুরিদান ইন্তেকাল করিয়াছেন তাহাদের সকলের আরওয়াহ পাকের হুজুরে।
হে খােদা! পৌছাও সওয়াবে নজর আমাদের দয়াল পীর, দস্তগীর, আরেফে কামেল, মুর্শিদে মুকাম্মেল, মুজাদ্দেদে জামান হযরত মাওলানা শাহসূফী ফরিদপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ) ছাহেবের হুজুরে, তাঁহার মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, তাঁহার যত আওলাদ ও যত মুরিদান ইন্তেকাল করিয়াছেন, তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে সওয়াব নজর পৌছাও-আল্লাহ। হে আল্লাহ! সওয়াব নজর পৌঁছাও আমাদের বড় পীর আম্মা(রঃ) ও পীর আম্মা(রঃ) দ্বয়ের হুজুরে।
তরিকার যত ওলীআল্লাহ, গাওস-কুতুব, নুজাবা, নুকাবা, আখইয়ার আবদাল ইন্তেকাল ফরমাইয়াছেন, তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে সওয়াব নজর পৌছাও। তাহাদের সকলের ওসিলায়, তাের ফজল, করম ও রহমে, তাের হাবিব পাকের খাতিরে আমাদেরকে মাঞ্জিলে মাছুদে পৌছাইয়া দে আল্লাহ।
ইয়া আল্লাহ! আমাদের মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং যত মুমিন মুমিনাত, যাঁহারা ইন্তেকাল করিয়াছেন তাঁহাদের আরওয়াহ পাকের হুজুরে সওয়াব নজর পৌছাও, হে আল্লাহ। তাঁহাদের কবর কোশাদা কর, কবর রৌশন কর, কবরে বেহেশতের দরজা খুলিয়া দে, আল্লাহ! আবাদুল আবাদ পর্যন্ত তাঁহাদের উপর রাজী ও খােশ থাক, আল্লাহ।
হে আল্লাহ! আমরা চিরনাদান, চির গুনাহগার। তুই রহমান, রহিম, গফুর মাফ করনেওয়ালা। তুই দয়া করিয়া তাের ফল, করম ও রহমে, তাের হাবিব পাকের খাতিরে আমাদের জীবনের সকল গুনাহ মাফ কর এবং আমাদিগকে মাঞ্জিলে মাকছুদে পৌঁছাইয়া দে, আলাহ! তুই দয়া করিয়া আখেরী জামানায় ফেৎনা-ফাছাদ হইতে আমাদের বাঁচা।
মানুষ-শয়তান, জিন-শয়তান, খবিছ মতন, আরওয়াহ-শয়তান ও নফছ-শয়তানের হাত হইতে আমার বাঁচা। দয়া করিয়া আমাকে এই ক্ষমতা ভিক্ষা দে এক মুহূর্তও যেন তােকে না ভুলি। তাের নাম লইতে লইতে, তাের গুন গাইতে গাইতে, তাের জামালের দিদারের হাউসে কাবাব বনতে বনতে আমাদেরকে ‘খাতেমা বিল খায়ের’ কর, আল্লাহ! আমিন আমিন সুম্মা আমিন, বেহাক্কে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
মুনাজাত শেষ করিয়া হযরত পীর কেবলাজান ছাহেবের পাক দিলে নিজের নাপাক দিল মিশাইয়া পীরানে পীরগণের পবিত্র দিলের ওসিলা করিয়া এবং হযরত রাসুলে পাক (দঃ) এর দিল মুবারকের সঙ্গে নিজের নাপাক দিল মিশাইয়া দিলকে আল্লাহর জাত পাকের দিকে মুতাওয়াজ্জুহ করিয়া রাসূলে পাক (সঃ)-এর খাস হোব্ব এশ্ক মহব্বতের ফয়েয ভিক্ষা চাহিবে।
আছরের ওয়াক্ত
আছরের সময় তওবার ফয়েয ওয়ারেদ হয়। তাই আছরের নামাযান্তে একনিষ্ঠভাবে বসিয়া উপরােক্ত নিয়মে ওসিলা ধরিয়া তওবা করিবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, “হে আমার ঈমানদার বান্দাগণ! তোমরা খালেস্ দেলে তওবা কর”।
আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ সহ পড়িবে-
استغفر الله ربی من کل ذنب واتوب اليه
উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বী মিন কুল্লে জাম্বেও ওয়া তুবু ইলাইহে।
মাগরিবের ওয়াক্ত
মাগরিবের ফরজ ও সুন্নত নামাযের পরে পূর্বোক্ত নিয়মে দুই রাকআত নফল নামায পড়িয়া মুনাজাত করিবে এবং পরে পূর্ববর্ণিত নিয়মে ফাতেহা শরীফ পড়িয়া সওয়াব রেছানী করিবে। ফাতেহা শরীফের মুনাজাত শেষ হইলে পূর্বোক্ত নিয়মে ওসিলা ধরিয়া পাঁচ প্রকার ফয়েয় খেয়াল করিবে।
মাগরিবের সময় নিম্নলিখিত পাঁচ প্রকার ফয়েয ওয়ারেদ থাকেঃ
১ম- হাকীকতে তওবা কবুলিয়তের ফয়েয।
২য়- দোসরা দায়রা হইতে কুওয়াতে এলাহিয়ার ফয়েয।
৩য়- হযরত রাসূলে পাক (দঃ) -এর খাস হোব্ব এশ্ক মহব্বতের ফয়েয।
৪র্থ- আল্লাহ পাকের খাস হোব্ব এশ্ক মহব্বতের ফয়েয।
৫ম- আনওয়ারে জিকরে এলাহিয়ার ফয়েয।
এশার ওয়াক্ত
এশার ফরজ ও সুন্নত নামাযের পরে পূর্ববর্ণিত নিয়মে দুই রাকআত নফল নামায পড়িয়া উহার মুনাজাত করিবে এবং পরে বেতের নামায পড়িবে এবং বেতের নামাযান্তে হযরত রাসূলে পাক (দঃ) -এর গায়রাতের ফয়েয খেয়াল করিবে। গায়রাতের ফয়েয দ্বারা কালব পরিষ্কার করিয়া আলাহতায়ালার হুজুরে মুতাওয়াজ্জুহ করিয়া রাসূলে পাক (সাঃ) এর মহব্বতের ফয়েয় খেয়াল করিবে। রাসলে পাক (দঃ) -এর মহব্বতে দিল ভরিয়া গেলে এই মহব্বত ভরা দিল নবীজী (সাঃ)-এর কদম মুবারকের নীচে রাখিয়া ৫০০ বার দরূদ শরীফ পড়িয়া রাসূল পাক (দঃ) -কে নজরানা দিবে।
দরূদ শরীফ
اللهم صل على سيدنا محمد و سيلتي اليك و آله وسلم
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লে আলা ছাইয়্যেদেনা মােহাম্মাদিওঁ ওয়াসিলাতি ইলাইকা ওয়া আলিহি ওয়া ছাল্লেম।
শেষ রাতে রহমতের ফয়েজ
শেষ রাত্রি অত্যন্ত মূল্যবান সময়। এই সময় সমগ্র সৃষ্টি পরওয়ারদিগারের জিকিরে মশগুল থাকে। এই সময় আল্লাহ পাক রহমতের দরজা খুলিয়া তাঁহার সমগ্র সৃষ্টির জন্য, বিশেষ করিয়া তাঁহার প্রিয় বান্দাদের জন্য রহমত বিতরণ করিয়া থাকেন।
এই সময় তিনি তাঁহার প্রিয় বান্দাদের ডাকেন এবং রহমতের ফেরেশতাগণ। তাঁহার হুকুমে দুনিয়াতে নামিয়া আসেন। তাই এই সময় অতীব আদবের সহিত নামাযের কায়দায় বসিয়া চক্ষু বন্ধ করিয়া উল্লিখিত নিয়মে ওসিলা ধরিয়া আল্লাহ পাকের খাস রহমতের ফয়েয খেয়াল করিবে এবং আল্লাহতায়ালার রহমতের প্রত্যাশায় মহব্বতের সহিত আল্লাহকে ইয়া আল্লাহু, ইয়া রাহমান, ইয়া রাহীম’ বলিয়া ডাকিবে।
এবং মাঝে মাঝে হযরত রাসূলে পাক (দঃ) -কে মহব্বতের সহিত “ইয়া রাহমাতাল্লিল আলামীন” বলিয়া ডাকিবে। এইভাবে ফজরের নামাযের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহতায়ালার রহমত লাভের প্রত্যাশায় তাঁহার জিকিরে মশগুল থাকিবে।
বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের “সংক্ষিপ্ত ওজিফা” (পৃষ্ঠা: ১৯,২০,২১,২২,২৩,২৪,২৫,২৬,২৭,২৮,২৯,৩০) হতে।
~সমাপ্ত~
» সংক্ষিপ্ত ওজিফা (প্রথম পর্ব)
» সংক্ষিপ্ত ওজিফা (দ্বিতীয় পর্ব)
আরো পড়ুন:
→ আদাবুল মুরিদের সবগুলা নসিহত একসাথে
→ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পরিচালনা-পদ্ধতির সব গুলো অধ্যায়
→ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের প্রতি আদব প্রদর্শন
→ মাজার জেয়ারতের তাৎপর্য ও নিয়মাবলীঃ