গুলিস্তান থেকে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল-পর্ব:৯
গুলিস্তান থেকে- বিশ্ব জাকের মঞ্জিল, আমার দেখা ৪০-বছর।
-আব্দুল হান্নান
পদ্মা সেতু! আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। এক সময়ের স্বপ্নের সেতু এখন দৃষ্টিসীমায় দিগন্তজুড়ে দাঁড়িয়ে। পদ্মার তীর থেকে দেখা যাচ্ছে পিলারের দীর্ঘ সারি। আনেক বছর আগের কথা সাল টা মানে নাই আমার আসতে আসতে অনেক কথাই স্মৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এখন আমার বয়স ৫৩/৫৪ তখন আমার বয়স ১৮/১৯ হবে।
কিছু দিন পর পর দরবারে না আসলে ভালো লাগতোনা তোবারকে সাদ ভুলতে পারতানা পীর- কেবলা’জান পায়ে হেটে (আট চালা মসজিদে) আমাদের টিনের মসজিদের ডান পাশের একেবারে কনারে নামাজ পরতেন।
বিশেষ করে আছরের নামায এর সময় খাজাবাবা-কে কাছে পেতাম আগে থেকে-ই কেবলা’জানের পিছনে কাতারে বসে থাকতাম তিনি নিজ কদমে হেটে জামাতে এসে নামাজ পরতেন। একদিন আমার মাথায় যে টুপি ছিলো না তা আমার মনে নাই!খাজাবাবা-র নামাজে পিছনে কাতারে ধারিয়েছি তিনি বলেন মাথার টুপি কই সাথে সাথে গলা থেকে গামছা নিয়ে মাথার দিলাম নামাজ পরলাম ।
সে সময় দরবারে রাতে ঘুমাতাম না একটা লোভ কাজ করতো রহমতের সময় তিন টার বেল দিলে দৌড়ে যেতাম অজু করতে পীর- কেবলা’জান নিজে ডাক তেন মাইকে বাবা সকল এখন ঘুমায় না রহমতের সময়। কি যে মধুর কন্ঠে বলতেন – উঠো-উঠো জাকেরান ও ঘুমে কেনে অচেতন,উঠো- উঠো আশেকান ও ঘুমে কেনে অচেতন, খোদার ও রহমত ও যায়রে চলে খুলে দেখ দুই নয়ন রহমতো লইবারে সবে দেলের ঝুড়ি পাত-হে। এমনি করে ডাক তেন তিনি।
ফজরের নামাজের পড় থেকে কান থাকো তিনি নাম্বার হুজরা’শরীফের দিকে কখন সকাল ৯ টা বাজবে যে খানেই থাকতাম, কান থাকতো মাইকের দিকে কখন খাজাবাবা আসবে তিনি এসে প্রথমে মাইক্রোফোনে টোকা দিতেন তখন বুঝতে পারতাম খাজাবাবা এসেছে একটা দৌড় দিতাম তিন নাম্বার হুজরা’শরীফের দিকে এসে দেখতাম লোকে লোকারণ্য আসতে আসতে ফাক ফোকর দিয়ে গ্রিলের পাশে যেতাম
সেদিন পীর-কেবলা’জান বলেন বাবা আমি তখন অনেক ছোট আপনাদের দাদা পীর খাজা-এনায়েতপুরী (রঃ) সাহেব বলতেন বাবা’সকল যমুনা নদীর উপর দিয়া যমুনা সেতু হলে কেমন হবে বাবা-রা! ‘খাজাবাবা মানে মনে বলতেন যমুনা নদীর উপর দিয়ে সেতু হবে ইহা- কি সম্ভব! পীরের ইশারায় বুঝা বড় দায়! বাবার দেখেন এখন সেই যমুনা নদীর উপরে সেতু হইতে ছে।
একটু পারে-ই বলেন বাবা-রা আপনারা কত কষ্ট করে দরবারে আসেন বাবা-রা পদ্মা নদীতে সেতু হলে কেমন হয়! বাবা-রা এখন ১০/১২ ঘন্টা লাগে আপনারা ২/৩ ঘন্টায় দরবারে চলে আসতে পারবেন! আর কষ্ট হবে না
এখানে একটু আলোচনা করি:
তখন আমি ও মনে মনে বললাম বাবা’জান ব’লে কি পদ্মা নদীতে ও সেতু হবে! ইহা সত্য হবে! ইহা কি সম্ভব!। ভাই দেখেন চোখে পানি ধরে রাখতে পারিনা ….আপন পীরের ইশারা- বা কথার কেরামত দেখেন! সে সময় ঢাকা – মাওয়া সড়ক ও হয়নাই! আর ক’দিন পরে নিজ দেশের টাকায় তৈরী স্বপ্নের পদ্মা সেতু ২৫ জুন উদ্বোধন করা হবে। এদিন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর উদ্বোধন করবেন। সেই দিনের কথা খাজাবাবা ফরিদপুরী ( কুঃ ছেঃ আঃ) বলেছিলেন ২/৩ ঘন্টায় দরবারে চলে আসবেন দরবারে! এখন আমরা হাড়ে হাড়ে বুঝি কি ছিলেন তিনি! আর আমরাই বা-কি করি বা
কি-করছি!
তাই বাউল সকল বলেন, “কেউ বুঝিতে পারে নারে পীর মুর্শিদের খেলা আমার দয়াল বাবা-র খেলা।”
আমার দেখা ৪০ বছর! খাজাবাবা ফরিদপুরী ‘বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ‘ নিয়ে লেখতে চাই আপনাদের মতামত জানাবেন আশা রাখি।
চলবে……
পরবর্তী পর্বগুলো পড়তে নিচের লিঙ্কে প্রবেশ করুন: