গুলিস্তান থেকে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল-পর্ব:১০
গুলিস্তান থেকে- বিশ্ব জাকের মঞ্জিল, আমার দেখা ৪০-বছর।
-আব্দুল হান্নান
ঢাকা থেকে সকালে রউনা দিয়ে দরবারে আস্তে আস্তে আছরের নামাযের পরে হয়ে গেছে। আমার সফর সংগী ছিলেন একজন ( মুক্তিযোদ্ধা আঃ মতিন মালেক ভাই ২১ জুন রাত ২ঃ ৩০ মিনিটে ২০২২ আমাদের ছেড়ে নাফেরার দেশে চলে গেলেন) (“ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউ” )
অজু করে আমরা চিন্তা করলাম তবারক খেয়ে আসি তখন বড় পাকশালার পাশ থেকে খাবার’শালা নিগেছে এখন কার খাবার মাঠে মাত্র নতুন হয়েছে একটি ছাপরা টিনের ঘর সামনে ছাউনি দেয়া। দরবারে নিয়মে নাই আছরের পরে মাগরিবের আগে খাবার দেয়ার
আমাদের চিনে বলে খানা দিয়েছেন ।
খাজাবাবা প্রতিদিনের মত সাদা রঙের লেন্ড ক্রুজার ব্র্যান্ডের গাড়ির সামনে সাদা গিলাফে মোড়ানো সিটে বসা তিনি নিজে দরবার’শরীফ গুরে দেখেন সকল ডিপার্টমেন্ট এর খোজ খবর নেন। তখন আমাদের হতে খাবারের প্লেট ঠিক আমার সামনে এসে পীর কেবল’জানের গাড়ি থামলেন বিতর থেকে খাজাবাবা তিনার সাহাদাত আংগুলি মোবারক দিয়ে আমার দিকে বলেন এ সময় ও-কে খাইতে দিছে কে ? এসময় বাবা খয়না।
এখানে একটু আলোচনা করি:
পীর কেবলা’জান বলেন বাবা আছরের নামাযে পর থেকে মাগরিব পযন্ত কিছু খাইতে নাই। দেখবেন এসময়ে দরবারে কাউকে কিছু খেতে দেন না !। আসরে নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত কোনো প্রকার কোনো খাবার গ্রহণ করা নাকি অনুত্তম। এই সময় খাওয়া-দাওয়া করা ইসলামি দৃষ্টিতে অপছন্দনীয় । এমন প্রচলিত রয়েছে ওলী-আউলিয়াদের সমাজের ও মুসলিমদের মাঝে। যেহেতু খাজাবাব বলেছেন তাই এসময় আমাদের না খাওয়া -ই উচিত বলে আমার মনে হয়। তাই আমি নিজেও সেই দিন থেকে আজ প্রযন্ত আছরের পরে মাগরেবের আগে কোন খাবার খাইনা।
রাতের এবাদত ফরজ, নফল,তরিকতের আমলের কর্ম সুচির পর সকাল ৯ টায় খাজাবাবা ৩ নাম্বার হুজরা’শরীফের আসলেন। সে সময় প্রতিদিন হাজার হাজার জাকের ভাই-বোন দের বি-র থাকতেন! পীর কেবলা’ জান সকলের নালিশ নিতেন উপদেশ দিতেন, তারপর তরিকা দিতেন। এরপর কেবলা’জান সকালের উদেশ্য উপদেশ দিতেন বা নসিহত করতেন।
সেই দিন আমি খাজাবাবা অনেক কাজে কি ভাবে গেলাম তা আমি জানিনা! অনেক কথার মাঝে বলতে ছেন বাবা-সকল আল্লাহতালা মানুষের ভেদ মানুষ আল্লাহতালার ভেদের সমুদ্র!তাই মুমিন বান্দার ‘কলব’ এর জানালায় তিনি দেখা দিয়ে থাকেন! বাবা-রা মানুষের দেহে এক টুকরা মাংসপিণ্ড যাকে বলা হয় কলব বা দেল! তার মাঝে দুইখানা চন্দ্র ও যদি রাখা হয় তাহলে ও বাবা এক কোনায় পড়ে থাকে!
শুনে অবাক হয়ে গেলাম! আমি বললাম বাবা’জান এতটুকু মাংসের টুকরার ভিতরে দুইখান চন্দ্র রাখা যায় ? তিনি বলেন যায় বাবা! সময় হলে বুজবেন! সে সময় তো আর বুঝিনাই তিনি কি বলেন । বিদায় নিয়ে ফিরলাম নিজ বাসায় ফিরে সে দিন রাতে আমার জীবনে কি গোটে ছিলো তা এখনে লেখা সঠিক সিদ্ধান্ত হবেনা বলে লিখলাম না।
এখানে একটু আলোচনা করি:
আমি প্রায় প্রতি বছরই কক্সবাজার যা-ই কিন্তু সাগরে নামা হয়না ২০১৪ সালে ছেলে আপনাদের ভাবী আমি নিজে সাগরে নামলাম নেমে সাগরের দিকে তাকিয়ে আছি অনেক সময়। হটাত মনে পরলো সেই কত বছর আগে খাজাবাবা বাণী “কলব নামক মহা সমুদ্র কথা ! সাগরের দিকে তাকিয়ে আছি আর বলতেছি হে সাগর তুই তো আর “কলব নামক মহা সমুদ্র থেকে বড় না যেখানে দুইখানা চন্দ্র রাখা যায় ?। এদিকে আমার কিছুই মনে নাই সাথে কেউ আছে কি- নাই। আস্তে আস্তে সামনের দিকে যা-ই একটু সাতার বা ভাসি পানিতে । হটাৎ মনে আসলো
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” অর্থঃ- (আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত কেউ নেই, মুহাম্মদ ( সাঃ) তাঁর রাসুল)
আমি প্রথম বার পরলাম আমার মনে হইতে ছিলো উপরের দিকে উঠে নাই আবার দ্বিতীয় বার পরলাম এসময়ে আমি সাগরে রেড সিগনাল এর অনেক ভিতরে চলে গেছি নাকি কিভাবে তা মনে নাই ! পাসে কোস্ট গার্ড এর স্পিড বোড, নৌ পুলিশে স্পিড বোড, আমাকে ডাকছে আপনি কি জীবিত আছেন? আমি চোখ খুলে বল্লাম ভাই কি হয়েছে!।
পুলিশ বলেন আপনি ২ ঘন্টা যাবত সাগরের ঢেউ তে উঠেন আর নিচে নামেন বাস্তে ছেন আমরা মনে করেছি আপনি মারা গেছেন! আমার কাছে মনে হইতে ছিলো ৫ মিনিট ও হয় নাই । সাগরের পারে শত শত মানুষ ধারায়া আছে আমার ছেলেটা কান্না করছে ছেলে জানালেন ও মা অনেক আগেই হোটেলে চলে গেছে। সাগর পারে থাকা মানুষ জানতে চাইছে আমি কি করে ২ ঘন্টা বেসে ছিলাম পানিতে তাদের শিক্ষাতে হবে! মনে মনে বলছি আমি নিযেও জানিনা। মনে হইতে ছিলো ৫ মিনিট হবে তারা বলে ২ ঘন্টা! হোটেলের রুমে গেলাম চিন্তা করছি আসলে ঘটনা টি-কি হলো!
(অলৌকিক শক্তি)
কামেল পীরের ইশারা বা হকিকত বুঝা বড়-ই দায়
সুফিবাদে ওলী বলতে শুধু কামিল ওলীকেই বোঝায়, যদিও ওলীদের মর্যাদার তারতম্য আছে। সুফিদের মতে ওলী হতে হলে শরিয়ত ও তরিকত উভয়ের অনুশীলন অপরিহার্য। শরিয়ত ও তরিকত উভয়ই পালন করে যিনি মারিফত ও হকিকত লাভ করেন তিনিই হচ্ছেন ওলী। কোনো কোনো সময় আল্লাহর কৃপায় তাঁর কেরামত (অলৌকিক শক্তি) প্রকাশ পায়, কিন্তু তিনি তা গোপন রাখতে চেষ্টা করেন। তাছাড়া আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর অন্তরে স্বজ্ঞামূলক জ্ঞান ও বিশেষ অবস্থা আপতিত হয়। এগুলি হলো ওলীর বৈশিষ্ট্য।
আমার দেখা ৪০ বছর! খাজাবাবা ফরিদপুরী ‘বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ‘ নিয়ে লেখতে চাই আপনাদের মতামত জানাবেন আশা রাখি।
চলবে……
পরবর্তী পর্বগুলো পড়তে নিচের লিঙ্কে প্রবেশ করুন: