জাকের পার্টির জন্ম ও উদ্দেশ্য

জাকের পার্টির জন্ম

আমার পীর কেবলাজান চতুর্দশ হিজরীর মুজাদ্দেদ হযরত মাওলানা খাজাবাবা এনায়েতপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব সাংগঠনিক পদ্বতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বস্তুজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি আধ্যাত্নিক জ্ঞান চর্চার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন। তদীয় জীবনের শেষ উরসে তাই তিনি জাকের পার্টির ঘোষণা দিয়া যান। তাঁহার ওফাতের ৩৭ বছর পরে তাঁহার ইচ্ছানুযায়ী আমি ১৪১০ হিজরীর ১২-ই রবিউল আউয়াল মোতাবেক ১৪ই অক্টোবর ১৯৮৯ সালে রহমতের সময়ে জাকের পার্টি গঠন করি। সেদিন ছিল শনিবার অর্থাৎ আমার পীর কেবলাজানের জন্মদিবস। একদিকে দয়াল নবী (সাঃ) জন্মদিন, অন্যদিকে হযরত খাজাবাবা এনায়েতপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ) ছাহেবের জন্মদিন। উভয় মহামানবের জন্মলগ্নে জন্ম হয় জাকের প্রার্টির-যাহার মূল নীতিমালা হইলঃ ইসলাম, ঈমান ও এহসান।

এই তিনটি নীতির মধ্যে নিহিত আছে পরিপূর্ণ ইসলাম। আছে শরীয়ত, তরিকত, হকিকত ও মারেফাত। আছে রাসূলে করীম (সাঃ) এর ৬৩ বছরের কর্মকান্ডের নিখুঁত সার-নির্যাস।

একদা দয়াল নবী (সাঃ) ও সাহাবাগণের মজলিসে একজন মোসাফিরের বেশ ধরিয়া হযরত জিব্রাইল (আঃ) আসিয়া বসেন। দয়াল নবী (সাঃ) কে পর পর জিজ্ঞাসা করেন, ঈমান কি? ইসলাম কি? এবং এহসান কি?

প্রথম প্রশ্নের উত্তরে রাসূলে করীম (সাঃ) বলিলেন:-

ঈমান হইলঃ
আল্লাহ্‌র অস্তিত্বে বিশ্বাস করা।
ফেরেশতাদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করা।
আসমানী কিতাব সমূহে বিশ্বাস করা।
পয়গম্বরগণের উপর বিশ্বাস আনা।
পুনরুত্থান দিবসে বিশ্বাস করা।
তকদীরে বিশ্বাস করা।

দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে রাসূলে পাক (সাঃ) বলিলেন:-

ইসলাম হইলঃ
দিনে পাঁচবার নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা।
যাকাত প্রদান করা।
পূর্ণ রমজান মাসের রোজা রাখা।
সামর্থ্যবান হইলে হজ্জব্রত পালন করা।

তৃতীয় প্রশ্নের উত্তরে রাসূলে পাক (সাঃ) বলিলেন:-

এহসান হইলঃ
এমনভাবে ইবাদত করা যেন তুমি খোদাতায়ালাকে দেখিতেছ অর্থাৎ খোদাতায়ালাকে দেখিয়া ইবাদত করাই এহসান। যদি ইহা সম্ভব না হয়, তবে মনে করিতে হইবে যে, খোদাতায়ালা তোমাকে দেখিতেছেন।

উপরের আলোচনায় বুঝা গেল যে, ঈমান ও ইসলাম হইল শরীয়তের ইশারা এবং এহসান হইল মারেফাতের ইশারা বা মেরাজ তত্ত্বের ইশারা। সুতরাং ইসলাম, ঈমান, এহসান- এই তিন নীতিমালায় সজ্জিত হইল জাকের পার্টি। এই পার্টি ওলী-আল্লাহগণের পার্টি। এই পার্টি জাকেরান, আশেকানদের পার্টি।

এই পার্টির সদস্যগণের কর্তব্যঃ

  • জাগতিক জ্ঞান চর্চার সাথে সাথে আধ্যাত্নিকতা চর্চার মাধ্যমে নিজেদের মানবিক গুণাবলীর বিকাশ সাধন করা।
  • অন্যদেরকে আধ্যাত্নিক জ্ঞান অর্জনে উদ্বুব্দ করা।
  • আর্তমানবতার সেবা করা।

বর্তমান জামানা মুসিবতের জামানা। জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে কেবল বিপদ আর বিপদ। অদূর ভবিষ্যতে সারা পৃথিবী ব্যাপি এক রক্তক্ষয়ী বিপদের ইশারা পাওয়া যায়। সেই বিপদে জাকের পার্টি নূহের তরী সম কাজ করিবে। নূহ (আঃ) এর তরীতে যাহারা আরোহন করিয়াছিলেন, কেবল তাহারাই মহা প্লাবন থেকে বাঁচিয়াছিলেন।

তেমনি বিশ্বব্যাপি যে ভয়ংকর রক্তক্ষয়ী বিপদ আসিতেছে, সেই বিপদের জাকের পার্টির পতাকাতলে যাহারা সমবেত হইবে অর্থাৎ যাহারা নিজেদের জাহের ও বাতেনকে শরীয়তের জাহেরী ও বাতেনী পোশাকে সজ্জিত করিবে-তাহারাই কেবল উদ্বার পাইবে। কেন না আমার পীর কেবলাজান বলিয়াছেন, “বিশ্বব্যাপি লোহার মই টানা হইবে। একমাত্র মোমিন ব্যতিত কেহই বাঁচিতে পারিবে না।

মোমিন আল্লাহ্‌র কুওতের কেল্লায় হেফাজতে থাকিবে।” আর মোমিনতো তিনিই- যিনি দয়াল নবী (সাঃ) এর আদর্শের পূর্ণ অনুসারী। জাকের পার্টি ক্ষমতাকেন্দ্রিক পার্টি নয়; আদর্শ কেন্দ্রিক পার্টি। রাসূলে পাক (সাঃ) এর পরিপূর্ণ আদর্শ প্রচার করা এই পার্টির মূল লক্ষ্য। সে দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বিশ্ব ব্যাপি জাকের পার্টির বিজয় ডংকা বাজিবে। আল্লাহপাকই সব ভালজানেন

তথ্যসূত্রঃঃ খোদাপ্রাপ্তিজ্ঞানের আলোকে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল পাক দরবার শরীফ এবং জাকের পার্টির প্রতিষ্ঠাতা, বিশ্বওলী হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ) ছাহেবের প্রদত্ত নসিহত সমূহের ১৫ তম খন্ড- “ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) এবং জাকের পার্টির আদর্শ–লক্ষ্য” নামক খন্ড; এ অংশে তিনি জাকের পার্টি গঠনের পটভূমি আলোচনা করছেন।

নিবেদক: Nishat Wahid

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel