খোদাতত্ত্ব সাধনায় লতিফায় কালবের গুরুত্ব

মুজাদ্দেদ আলফেসানী (রঃ) সাহেব আলমে আমরের অপর লতিফা কালবের দ্বারা প্রথমে রহুকে নাফসের প্রভাব মুক্ত করিবার রীতি প্রবর্তন করেন। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে আলমে আমরের কালব রুহ,সের,খফি,আখফা-এই পাঁচটি লতিফা,দ্বিতীয় পর্যায়ে আলমে খালকের লতিফা সমূহ অর্থাৎ আব,আতস,খাক,বাদ-কে পবিত্র করার পদ্ধতি গ্রহন করা হয়। সর্বশেষে লতফায়ে নফসকে পবিত্র করা হয়।

মহা কালবের ক্ষুদ্রতম অংশ লতিফায়ে কালব।আল্লাহপাক ফরমান,আস্মান,জমীনের কোথাও আমার গুঞ্জায়েশ হয় না,এক মাত্র মুমিনের কালব ব্যতীত। মুমিন ব্যক্তির কালবের মধ্যেই আরশ,কুরসি,লওহ,কলম ও সৃষ্টি জগতের সকল কিছুরই অবস্থান। মুমিন ব্যক্তির কালব যে কত প্রশস্ত, তাহা আল্লাহপাকই জানেন।লতিফায়ে কালব যখন জাত আহদিয়াতের নুর পরিপূর্ণ হয় তখন মহা কালবের সন্ধান পাওয়া যায় । তখনি আল্লাহপাক কোরআন মাজিদে ফরমানঃ

“অফি আন ফুসিকুম আফালা তুবছিরুন”

অর্থাৎঃ আমার নিদর্শন তোমাদের ভিতরেই আছে,তোমরা দেখনা কেন? (সুরা ; জারিয়াতঃ২১ নং আয়াত)তখন ছালেক মহা কালবের ভিতর দিয়া আরশ,কুরসি,লওহ,কলম সকল কিছুওরই সন্ধান পায়।

তাই মহাকালবের ভিতরে অর্থাৎ যে কালবের ভিতরে আল্লাহপাকের যোগসুত্র বা সান্নিধ্য পাওয়া যায় সে মহা কালবের পরিধি সাততালা আকাশ হইতে, সাততলা জমিনের নীচে “তাহাতাস সারা” পর্যন্ত। এই মহা কালবে ছায়ের শেষ করিতে পারিলে আল্লাহপাকের সান্নিধ্য পাওয়া যায়। তাই রাসুলেকরিম (সাঃ) ফরমানঃ লাসালাতা ইল্লা বিহুজুরি কালব। অর্থাৎ জুহুরি কালব ছাড়া নামাজি হয় না।

তাই খেয়াল কালবে কালব আল্লাহপাকের দিকে, আল্লাহ হাযের নাজির, তাই খেয়ালকে এক কালিন কালবে ডুবাইয়া,আল্লাহকে হাজির নাজির ওয়াহেদ জানিয়া হুজুরি কালবে সিজদাহ করাই আসসালাতু মিরাজুল মোমিনিন।তাই লতিফায় কালবে খেয়াল এককালিন ডুবাইতে না পারিলে নামাজে হুজুরি হাসিল হইবে না। আর তাহা না হইলে নামাজে বিভিন্ন খারাপ কথা মনে আসিবে। বাল্য জীবনে কত বন্ধুর স্মৃতি, কত মমলা মকাদ্দমার কথা মনে আসিয়া পৌছিবে।মন সেই দিকে ঘুরিয়া যায়বে, মুখে “সুবাহান রাব্বিয়াল আলা” (অর্থাৎ আমার প্রতিপালকে পবিত্রতা ঘোষণা করছি) বলার কি দাম? মৌখিক ভালবাসার দাম কেউ দিয়া থাকেননা। তাহাকে লিফ সিমপ্যাথি বলা হয়। সে জন্য আল্লাহপাক বলেনঃ “তোমরা নাফসের সহিত জেহাদ কর”। “নাফসে আম্মারার” সকল কিছুই আল্লাহতায়ালার বিরুদ্বে।

– শাহসূফী হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ)।