হুজুরী কালব বা কালবের একাগ্রতা অর্জনে মুর্শিদে কামেলের ভুমিকা

হুজুরী কালব বা কালবের একাগ্রতা অর্জনে মুর্শিদে কামেলের ভুমিকা

হুজুরি কালবে মারেফত হাসেল না করা পর্যন্ত কেহই মুমিন হইতে আরিবে না। হুজুরি কালব হাসিল করিবার একমাত্র উপায় মুর্শিদে কামেলের পাক তাওয়াজ্জু। সেই জন্য আল্লাহ পাক এরশাদ করেনঃ

“ইয়া আয়য়ুহাল্লাজিনা আমানুত তাকুল্লাহা ওয়াবতাগু ইলাইহিল অছিলা”

অর্থাৎ, হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও তাঁহাকে পাইবার জন্য অসিলা অন্মেষণ কর- তাহাতে সম্ভবতঃ তোমরা সফল হইতে পারিবে। (মায়েদাঃ৩৫)।

সেই অসিলাই জামানার কামেল ওলী সকল। জামানার মুজাদ্দেদ ও শ্রেষ্ট কামেলে মুকাম্মেল,আরিফে বিল্লাহ হযরত খাজাবাবা শাহ সুফী এনায়েতপুরী(কুঃছেঃআঃ) সাহেব,যিনির তাওয়াজ্জু-এ –এত্তেহাদির দ্বারা লক্ষ লক্ষ মুর্দা দেল জিন্দা হইয়া আল্লাহ ভুলা দেলে আলাহর জিকিরে পরিপূর্ণ হইতেছে। লতিফায়ে কালব জাত আহদিয়াতের নুরে পরিপূর্ণ হইতেছে,সে সত্য জিন্দা পীরের কদম মুবারক জড়াইয়া ধরিয়া, আদব, বুদ্ধি, মহব্বত ও সাহসের সঙ্গে তদীয় পাক দেলে দেল মিশাও। তবেই তোমাদের মুর্দা দেল জিন্দা হইয়া তথায় আল্লাহ আল্লাহ জেকেরের পায়দা হইবে এবং আল্লাহতাআয়ার তাজাল্লী দ্বারা দেল রশন হইবে। যেমন ইলেকট্টিক কারেন্ট মূল স্রোতের সঙ্গে কানেশন লাগাইয়া যেখানে বাল্ব ফিট করনা কেন,সুইচ টিপ দিলেই বাল্ব জলিয়া উঠিবে। সেইরূপ পীরের পাক দেলের সহিত মুরিদের দেল মিশাইলে মুর্শিদে কামেলের পাক তাওয়াজ্জুহতে মুরিদের মাথার চান্দি হইতে পায়ের তলা পর্যন্ত কোটি কোটি লতিফা আল্লাহ্‌র জেকেরে পূর্ণ হইয়া মাতোয়ারা হইবে, দেল আল্লাহ্‌র দিকে ঘুরিয়া যাইবে,যাহাকে “সুলতানুল আজকার” বলা হয়। এই অপূর্ব নেয়ামত পীরে কামেলের পাক তাওয়াজ্জু ছাড়া সম্ভব নয়।

তাই হযরত শেখ সাদী(রঃ) বলেনঃ

“জাগ্রত পরান যার মরে না সে জন,
দৈহিক মরন তার নহেরে মরণ।
শত শত মুর্দা দেল মাটির উপরে,
তার চাইতে অধিক ভাল যদিও কবরে।”

অর্থাৎ, তুমি একটি লতিফা জিন্দা করিয়া কবরে শুইয়া থাক,সমস্ত পৃথিবীর মুর্দা দেলওয়ালা লোকের চাইতে কবরেই তমার অধিক শান্তি হইবে।

তাই মহাকবি হাফেজ বলিয়াছেনঃ “ওগো দুনিয়ার মানুষ! তোমরা যদি আমার পীরকে বাধ্য করিয়া দিতে পার,তাহা হইলে আমি তোমাদেরকে সমরখন্দ বোখারার সিংহাসন বিলাইয়া দিব। তিনি আপন পিরকে এত ভালবাসিতেন যে,পৃথিবির সর্ব শ্রেষ্ঠ সিংহাসন সমরখন্দ বোখারার সিংহাসনও তাঁহার পীরের প্রতি ভালবাসার কাছে রুচ্ছ মনে হইয়াছে।

তাই আশেক সকল বলিয়াছেনঃ “অতি ভাগ্যের জোরে মুর্শিদের বোল”। কামেল পীরের সান্নিধ্য লাভ করা অতি ভাগ্যের জোরেই সম্ভব হয়।পীরে কামেলের তাওয়াজ্জু ছাড়া কেহই আল্লাহতায়ালার সান্নিধ্য অন্য কোন উপায়ে অর্জন করিতে পারেন নাই। তাই পারস্যের মহাকবি বলেনঃ “হাফেজ ! তুমি যত বড়ই জ্ঞানী-গুনী,বুদ্ধিমান,সাইন্টিস্ট,বিজ্ঞানি হও না কেন, তমার পীরের কাছে তুমি কিছুই নও। যদি দুর্বিপাকের তুফান হইতে বাঁচিতে চাও, তবে পীরের সংগকে “নুহের তরী” মনে করিয়া শক্ত করিয়া ধর, নচেৎ এমনই দুর্বিপাকের তুফান আসিবে যাহা তমার সকল ভিত্তিকে ভাঙ্গিয়া মেসমার করিয়া ফেলিবে।

তাই সমস্ত মুরিদগণকে জানানো জাইতেছে যে, যদি আখেরী জামানার বালা হইতে বাঁচিতে চাও, দুশমনের হাত হইতে যদি বাঁচিতে চাও,কঠিন ব্যাধি হইতে যদি বাঁচিতে চাও,আল্লাহতায়ালার গজব হইতে যদি বাঁচিতে চাও,তবে জামানার শ্রেষ্ঠ আরেফ খাজাবাবা হযরত এনায়েতপুরী (কুঃছেঃআঃ) সাহেবের পাক দেলের দিকে দেলকে মুতাওয়াজ্জুহ করিয়া সদা সর্বদা খেয়াল করিতে থাক, আনোয়ারে জেকেরে এলাহিয়ার ফয়েজ আল্লাহতায়ার কুওয়াত,লজ্জত,মহব্বতের সঙ্গে ভরিয়া,মুর্দা-দেল চির জিন্দা হইয়া,এসমে জাত আল্লাহ্‌-আল্লাহ—আল্লাহ জেকেরে লতিফায় কালবে জারি হতেছে। ইহাই বর্তমান জামানার গজব হইতে বাঁচার উত্তম উপায়। হর নিঃশ্বাসে খেয়াল কালবে ডুবাইয়া রাখ। দমে দমে আল্লাহকে স্মরণ কর।তবেই আল্লাহতায়ালার রহমত তোমাদের উপর বর্ষিবে। সকল বিপদ-আপদ,বালা-মুছিবত ও তকদীরের বুরা-ঈ হইতে বাঁচিতে পারিবে।

– শাহসূফী হযরত খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ)।

পীর-মুর্শিদ প্রশঙ্গে আরো কিছু দলিল ভিত্তিক পোস্ট নিচে দেয়া হলো:

* পীর-মুর্শিদ ধরতে হবে এই প্রশঙ্গে কোরআনের অসংখ্য দলিল।
* মহিলাদের বায়াত হওয়ার দলিল
* খোদা প্রাপ্তির জন্য মুর্শিদ শর্ত
* কামেল পীর চেনার উপায়! দলিল ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ আলোচনা
* কোরআনে কি পীর ধরার কথা উল্লেখ আছে? দলিল সহ তুলে ধরা হলো।
* ফানার জন্য পীরের প্রয়ােজন : সংক্ষিপ্ত আলোচনা
* পীর ওলিগণ শাফায়াত করিতে পারিবেন কিনা? তাহার দলিল।
* রাবেতার যােগ্য পীরের পরিচয়ঃ
* ফানা ও বাকা সিদ্ধ ওলীই প্রকৃত কামেল পীরঃ
* কামেল পীর চেনার উপায়! দলিল ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ আলোচনা
* হুজুরী কালব বা কালবের একাগ্রতা অর্জনে মুর্শিদে কামেলের ভুমিকা

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel