হোমপেজ ইলমে মারেফত ধর্ম কি এবং মুসলমান ব্যাতীত অন্যান্য ধর্মাবলম্বীগণ কি মুক্তি পাবে?

ধর্ম কি এবং মুসলমান ব্যাতীত অন্যান্য ধর্মাবলম্বীগণ কি মুক্তি পাবে?

Advertisement:
IPL 2024: ফ্রিতেই IPL Live Cricket খেলা দেখুন Full HD তে

ধর্ম কি এবং মুসলমান ব্যাতীত অন্যান্য ধর্মাবলম্বীগণ কি মুক্তি পাবে?

পোস্টটি সবার জন্য নহে। আত্মজ্ঞান লাভের উদ্দেশ্য যারা সূফিবাদ চর্চা করে পোস্টটি শুধু তাদের জন্য।

ধর্ম বাংলা শব্দ। আরবীতে উহাকে দ্বীন বলা হয়। যার অর্থ ধর্ম, জীবন যাত্রার প্রণালী ইত্যাদি। দ্বীন আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান। বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ স্বকীয় বিবেক বলে উহা গ্রহণ করলে ঐ বিধান মানুষকে মুক্তির পথ প্রদর্শন করে।

পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“তুমি একনিষ্ঠভাবে নিজেকে ধর্মে প্রতিষ্ঠিত কর। আল্লাহর প্রকৃতির অনুসরণ কর, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহর প্রকৃতির কোন পরিবর্তন নেই।” (সূরা আর রুম, আয়াত নং ৩০)।

IPL 2024: ফ্রিতেই IPL Live Cricket খেলা দেখুন Full HD তে

“ধর্মে কোন জবরদস্তি নেই, সোজা পথ তো ভ্রান্ত পথ থেকে আলাদা।” (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ২৫৬)।

“যারা বিশ্বাস করে, যারা ইহুদি হয়েছে এবং খ্রীষ্টান ও সাবেইন, যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসে বিশ্বাস করে ও সৎ কাজ করে তাদের জন্য পুরস্কার রয়েছে তাদের প্রতিপালকের কাছে; তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।” (সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ৬২)।

পবিত্র কুরআন শরিফের বর্ণনার পাশাপাশি তাসাউফের সাধনা করে আমি যা পেয়েছি, তা হলো – রাসূল পাক (সাঃ) এর যুগের মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনেক অনুন্নত ছিল। তথাপি রাসূল পাক (সাঃ) এর আদর্শে আদর্শবান হয়ে, তাঁর হৃদয়ের প্রজ্বলিত নূর দ্বারা নিজেদের হৃদয়ে নূর শিখা জ্বালাতে সক্ষম হয়ে, তাঁরা আজও সাহাবা বলে শ্রদ্ধাভাজন হয়ে আছেন। কিন্তু বর্তমানের এই বিজ্ঞানের যুগে আমরা রাসূল পাক (সাঃ) এর সেই সিরাজাম মুনীরার ধারক ও বাহক অলী আল্লাহগণের সান্নিধ্যে গিয়ে নিজেদের হৃদয়ের মাঝে অবস্হিত আল্লাহর সুপ্ত নূরকে প্রজ্জ্বলিত করার কথা ভুলে গিয়ে শুধু পুস্তক পাঠ করেই নিজেদেরকে মুসলমান দাবি করছি।

আসলে শুধু পুঁথি পুস্তক পাঠ করলেই সত্যিকারের ঈমানদার হওয়া যায় না। উদাহরণস্বরুপ, কাগজে লেখা আগুন যদি হাঁড়ির নীচে দিনের পর দিনও রেখে দেয়া হয়, তাতে ভাত রান্না হবে না। কেননা এ জন্য বাস্তব আগুনের দরকার। কাগজের লেখা আগুন আর বাস্তব আগুন কোনদিন এক হতে পারে না। মনে করুন, কোন কারণে বিদ্যুৎ চলে গেছে। ফলে ঘর অন্ধকার। এ সময় কেরোসিন কিংবা মোমের বাতি জ্বালাবার মত দেওয়াশলাইও ঘরে নেই। নিকটেই অতি সাধারণ এক গরীব ব্যক্তির বাড়ীতে আলো দেখা যায়। এখন আলো পেতে হলে ধনী-গরিব আর পন্ডিত-মূর্খ নির্বিশেষে সকলেই উক্ত গরীব ব্যক্তির বাড়ীতে গিয়ে আলো জ্বালিয়ে আনতে হবে। পন্ডিত বা ধনী ব্যাক্তি বলে ঘরে বসে থাকলে আলো পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

অনুরুপভাবে, মুমেন হতে হলে আল্লাহর বন্ধু কোন মহামানবের সান্নিধ্যে গিয়ে তাঁর প্রজ্বলিত হৃদয় থেকে আপন অন্ধকার হৃদয়ে আল্লাহর নূর গ্রহণ করে ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত মুমেন হওয়া কোনক্রমেই সম্ভব নয়। ধর্ম বলতে এমন একটা স্বর্গীয় সুন্দরতম আদর্শ বা চরিত্রকে বুঝায়, যা পালনের মাধ্যমে শান্তি লাভ হয়। সে মতে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে বিরাজমান প্রকৃতিগত গভীর সম্পর্ককে ধর্ম বলে। অর্থাৎ স্রষ্টার নির্দেশিত পথে সৃষ্টি পরিচালিত হওয়াতে যে শান্তি, উহাই ধর্মের সার কথা।

আমাদের ধারণা, মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়ে মুসলমান না হতে পারলে কারো মুক্তি নেই। আসলে প্রকৃত মুসলমান হওয়া আর মুসলমানের ঘরে জন্ম নিয়ে মুসলমান দাবীদার হওয়া এক জিনিস নয়। উদাহরণস্বরুপ বলা যায় যে, কোন ডাক্তারের ছেলে জন্মসূত্রে ডাক্তার হতে পারে না। অন্য কোন ব্যক্তিকে যে পদ্ধতিতে অধ্যয়ন করে ডাক্তার হতে হয়, ডাক্তারের ছেলেকেও অনুরুপ বিষয়সমূহ পড়েই ডাক্তার হতে হয়। ডাক্তার হতে হলে ডাক্তারের ছেলে হওয়া শর্ত নয়, বরং ডাক্তারী কোর্স পড়ে পাস করা শর্ত।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে পরিশেষে বলা যায় – যে কোন ধর্মের লোক এক আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্নসমর্পণ করে যদি তাঁর বিধান মত নিজেকে পরিচালিত করতে পারে, পুরস্কার দিবসের মালিক মহান আল্লাহ বলেন, তাহলে তারাও সৎকাজের পুরস্কার পাবে। মোটকথা, ইসলাম বা মুসলিম কোন ব্যক্তির নাম নয়, এটা আল্লাহ প্রদত্ত্ব নির্দিষ্ট বিধান এবং বিধান পালনকারীর নাম। যে কোন অবস্থায় থেকে এই বিধান পালন করতে পারলেই তাকে মুসলমান বলে গণ্য করা যায়। আর যে কোন অবস্থায় থেকেই এই চরিত্র অর্জন করতে পারলে তার মুক্তি হওয়া সম্ভব।

গ্রহন্থসূত্র: আল্লাহ কোন পথে।
নিবেদক: অধম পাপী মোজাম্মেল পাগলা।