হোমপেজ বাণী ও উপদেশ ইমাম গাজ্জালীর বাণী ও উক্তি

ইমাম গাজ্জালীর বাণী ও উক্তি

19554

ইমাম গাজ্জালীর বাণী ও উক্তি

ইমাম গাজ্জালী: আল-গাজ্জালী, পুরো নাম আবু হামিদ মুহাম্মদ ইবনে মুহাম্মদ তুসী আল-গাজ্জালী, তিনি অন্যতম দার্শনিক, সুফি, ধর্মতত্ত্ববিদ, আইনবিদ, যুক্তিবিদ ও রহস্যবাদী হিসাবে পরিচিত। বাংলাদেশ সহ তিনি  বিশ্বের বহু অঞ্চলে ইমাম গাজ্জালী হিসেবে বেশি পরিচিত। (উইকিপিডিয়া)

জন্ম: ১০৫৮, তুস, ইরান।
মৃত্যু (ওফাত কাল): ১৯ ডিসেম্বর, ১১১১, তুস, ইরান।

ইমাম গাজ্জালীর ৩০টি সেরা চিরন্তনী বাণী

“সাফল্যের অপর নামই অধ্যবসায়।”

“শক্ত কথায় রেশমের মতো নরম অন্তরও পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়।”

“আপনার অবশ্যই নিজেকে বুঝিয়ে সন্তুষ্ট রাখতে হবে এই বলে যে সৃষ্টিকর্তা আপনার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন সেটাই আপনার সবচাইতে সঠিক এবং সর্বাধিক কল্যাণকর।”

“মানুষের প্রশংসায় আনন্দিত হতে এবং মানুষের নিন্দায় দুঃখিত হতে আপনার অন্তরকে প্রশ্রয় দিবেন না।”

“ক্রোধ মনুষ্যত্বের আলোকশিখা নির্বাপিত করে দেয়।”

“একটি জলবিন্দুর সুখ নদীর পানিতে মিশে হারিয়ে যাওয়ায়।”

ইমাম গাজ্জালীর বাণী

“ইলম ও জ্ঞানচর্চার দ্বারা যদি তোমার উদ্দেশ্য হয়ে থাকে আত্মগৌরব ও বড়াই-অহংকার করা, সমকালীন লোকদের উপর প্রাধান্য বিস্তার করা, আপন প্রভাব ও প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠা করা, বিশ্ববাসীর নিকট প্রিয়পাত্র অথবা ভক্তিভাজন হওয়া, পার্থিব গৌরব অর্জন করা এবং রকমারী ধন-সম্পদ কুক্ষিগত করা, তাহলে জেনে রাখো- এই জ্ঞান অর্জনের দ্বারা তুমি তোমার দ্বীন ও ঈমান ধ্বংস করছ, স্বীয় মূল্যবান জীবন বিনষ্ট করছ। নশ্বর এই পৃথিবীর বিনিময়ে আখিরাতের অনন্ত জীবনকে বিক্রয় করে দিচ্ছ। নিঃসন্দেহে এটা অত্যন্ত গর্হিত ও ক্ষতিকর কাজ। এই ব্যবসায় তোমার বৃহৎ লোকসান ছাড়া লাভের কিছু অবশিষ্ট থাকছে না।”

“তিনটি বস্তু মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। লোভ, হিংসা ও অহংকার।”

“জেনে রাখো- যে কোন ব্যক্তি নিজেকে খোদার কোন মাখলুকের তুলনায় উত্তম মনে করবে, সে-ই দাম্ভিক; অহংকারী। বস্তুতঃ তোমার এ কথা মনে রাখা উচিত, যে ব্যক্তি আখিরাতের জীবনে খোদার কাছে ভালো, সে-ই প্রকৃত ভালো। আর এটা এমন এক বিষয়, যা অদৃশ্য এবং জীবনের শেষ মূহুর্তের উপর নির্ভরশীল। অতএব, তোমার নিজেকে অন্যের তুলনায় উত্তম মনে করা নিতান্ত মূর্খতা ছাড়া কিছু নয়।”

“জ্ঞানের সাথে বুদ্ধিমত্তার সংযোগ না ঘটলে কাউকে প্রকৃত জ্ঞানী বলা যায় না।”

ইমাম গাজ্জালীর বাণী

“মানবজীবনের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হচ্ছে তার ‘মন এবং জবানকে’ নিয়ন্ত্রণে রাখয় সমর্থ হওয়া।”

“জ্ঞানের অম্বেষী এবং সম্পদের লোভী এই দুই ধরনের লোক কখনও তৃপ্ত হতে পারে না।”

“যদি কোন জ্ঞানীকে অন্য জ্ঞানীদের নামে কটু কথা বলতে দেখো তাহলে তাকে এড়িয়ে চলো।”

“নরম-কোমল কথা পাথরের চাইতে কঠিন হৃদয়কেও কোমল করে দেয়, কর্কশ-কঠিন কথা রেশমের চাইতে কোমল হৃদয়কেও কঠিন করে দেয়।”

“দ্বীনি ইলমই হচ্ছে একমাত্র বিদ্যা যা তোমার অন্তরে খোদাভীতি সৃষ্টি করবে, নিজের দোষ-ত্রুটি উপলব্ধি করার জ্ঞান বাড়াবে, সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তার পরিচয় করিয়ে দিবে। দুনিয়ার মোহান্ধতা হ্রাস করে আখিরাতের প্রতি শওক ও আগ্রহ বৃদ্ধি করবে, পাপকার্যের কুফল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করবে। ফলে, পাপাচার থেকে বেঁচে থাকার মন-মানসিকতা গড়ে উঠবে, শয়তানের ধোঁকা ও প্রতারণা সম্পর্কে সতর্ক করবে।”

ইমাম গাজ্জালীর বাণী
ইমাম গাজ্জালীর বাণী

“আল্লাহ জুলুম-অত্যাচারের কারণে যেমন হাজ্জাজের প্রতিশোধ নিবেন, তেমনি হাজ্জাজের প্রতি কেউ জুলুম বা যবান-দরাযী করলে সেটারও বিচার করবেন।”

“আপনি যা ভালোবাসেন তা অর্জন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার অপছন্দের বিষয়টিতে ধৈর্যধারণ করতে হবে।”

“আয়নায় নিজেকে সুদর্শন রূপে দেখলে পাপের কালিমা লেপন করে আমলনামা ধ্বংস করো না। আর যদি কালো-কুশ্রী হও তাহলে পাপ-পঙ্কিলতা থেকে তাওবা করে স্রষ্টার পথে ফিরে আসা।”

“যে ব্যক্তি অন্যের খারাপ চরিত্র নিয়ে অভিযোগ করলো, সে নিজের চরিত্রের খারাপ দিকটি প্রকাশ করে দিলো।”

“সৃষ্টিকর্তার উপর পরিপূর্ণ নির্ভরশীলতা যেন সেই শিশুটির মতন যে খুব ভালো করে জানে সে যদি মাকে না-ও ডাকে তবু মা তার ব্যাপারে সম্পূর্ণ সচেতন এবং সঠিকভাবেই তার দেখাশোনা করছেন।”

ইমাম গাজ্জালীর বাণী

“সদুপদেশ গ্রহণ করার জন্য অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টি না হওয়া এবং নিজের অভিমত খণ্ডিত হতে দেখেই অন্তরে ক্রোধের সৃষ্টি হওয়ার নামই অহংকার। আত্ম প্রশস্তি ও অহংকার মানুষকে নিম্নস্তরে নিয়ে যায়।”

“স্রষ্টার প্রত্যেকটি ফয়সালাই ন্যায়বিচারের ওপর ভিত্তিশীল। সুতরাং কোন অবস্থাতেই অভিযোগের ভাষা মুখে উচ্চারিত না হওয়া।”

“ক্রোধ মনুষ্যত্বের আলোকশিখা নির্বাপিত করে দেয়। রাগমুক্ত জীবন গঠন করা। কঠোরতা পরিহার করা। শক্ত কথায় রেশমের মতো নরম অন্তরও পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সাফল্য লাভ করা।”

“দুনিয়াতে সবচেয়ে বোকা ও নির্বোধ সে, যে নিজকে পবিত্র দাবী করে এবং নিজেই নিজের প্রশংসা করে।”

ইমাম গাজ্জালীর বাণী

“উপকারী জ্ঞান তো সেটাই যা আপনার মাঝে স্রষ্টাভীতি সৃষ্টি করবে, আপনার সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে আপনাকে সচেতন করবে, দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমিয়ে দিবে, আখিরাতের প্রতি আকাঙ্খা বাড়াবে এবং আপনার কাজের ত্রুটিগুলোর ব্যাপারে আপনার চোখকে উন্মুক্ত করে দিবে যেন আপনি সেগুলো সংশোধন করতে পারেন।”

“তিনটি অভ্যাস মানুষের জন্য সর্বমূখী কল্যাণ ডেকে আনে- সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার প্রতি সন্তুষ্ট থাকা, বিপদের সময় দু’হাত তুলে খোদার কাছে সাহায্য চাওয়া এবং যে কোন সংকটে ধৈর্য ধারণ করা।”

“সকল সৃষ্টির মাঝে স্রষ্টা মানুষকে জ্ঞান ও চেতনাশক্তি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। আবার খোদা কুরআনে চেতনাহীন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সমালোচনাও করেছেন। চেতনাহীন মানুষকে ঈমানের পথে ফিরিয়ে আনা ও অটল রাখার জন্য যুগে যুগে ওলি আওলিয়ারা মুক্তাঝরা বাণী ও উপদেশ দিয়েছেন। তাদের একজন ইমাম গাজ্জালী।”

ইমাম গাজ্জালীর বাণী

“চরিত্রহীন নারী বিষাক্ত সাপের ন্যায়, ধরতে গেলে নরম, কিন্তু এর ছোবল মারাত্মক।”

“যে ব্যক্তি ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং খারাপ কাজ থেকে নিষেধ করে তার ধৈর্য, সহানুভূতি, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা থাকতে হবে।”

“আজকালকার যুগের তথাকথিত পণ্ডিতদের দেখা যায় যে, বাদানুবাদ ও যুক্তিতর্ক তাদের স্বভাবকে খুবই প্রভাবিত করে রেখেছে এবং নিশ্চুপ থাকা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। কেননা, পাণ্ডিত্যের দাবীদার অসৎ বিদ্বানরা তাদেরকে বুঝিয়েছে যে, এই বিতর্ক একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ এবং এর দ্বারা মানুষের নিকট মর্যাদা পাওয়া যায়। খবরদার! এমন লোকদের থেকে তুমি ছুটে পালাও যেমন সিংহ দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তুমি পালাবে। জেনে রাখো, বাদানুবাদ যেমন মানুষের মনে ঘৃণার উদ্রেক করে, তেমনি এটি খোদার অসন্তুষ্টি ও রোষেরও কারণ হয় বটে!”