খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী (রহঃ) এর অমিয় বাণী
১.
আল্লাহ্ চাও, দুনিয়াও চাও এটা একটা পাগলামী।
২.
তিনি প্রকৃত আরেফ, যিনি কোনো অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিকে খালি হাতে ফেরান না। নেককার ব্যক্তির সংস্রব নেক কর্ম থেকে উত্তম। পক্ষান্তরে পাপকর্ম থেকে ব্যক্তির সংস্রব অধিকতর মন্দ।
৩.
মক্কা হচ্ছে কপালের কাবা আর মদীনা হচ্ছে রূহের কাবা।
৪.
মৃত্যু একটি সেতুর ন্যায় যার ওপর দিয়ে বন্ধু বন্ধুর নিকট গমন করে।
৫.
পৃথিবীতে প্রত্যেক জামানায় হাজার হাজার অলি-আল্লাহ বিদ্যমান থাকেন। তাদের অনেকেই থেকে যান দৃষ্টির আড়ালে। সুতরাং পৃথিবীকে কখনই আউলিয়া শূন্য মনে করো না।
৬.
তরিকতপন্থীদের জন্য ৫টি জিনিস দেখা এবাদত হিসেবে গণ্য মাতাপিতাকে দেখা, কুরআন শরিফ দেখা, আলেমে রব্বানীকে দেখা, বায়তুল্লাহ শরিফ দেখা, স্বীয় মুর্শিদকে দেখা।
৭.
কেয়ামতের আজাব থেকে মুক্তি পেতে হলে বিপন্ন, দুস্থ ও উৎপীড়িতদের খেদমত করতে হবে। অভাবগ্রস্তদের অভাব মোচন করা এবং ক্ষুধার্তদের আহার প্রদান করা, দানশীলতা নেয়ামতের চাবি।
৮.
শাহ হচ্ছে হুসাইন, বাদশাহ হচ্ছে হুসাইন, দ্বীন হচ্ছে হুসাইন, দ্বীনের আশ্রয় হচ্ছে হুসাইন, মাথা দিয়েছেন তিনি কিন্তু হাত দেননি ইয়াযিদের হাতে, সত্যিই (কলেমা) লা ইলাহা (ইল্লাল্লাহ)-র ভিত্তি হচ্ছেন হুসাইন।
৫.
সর্বাপেক্ষা বড় বন্দেগী হচ্ছে, জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করা।
৬.
কালের এসব বালা-মুসিবতে কেঁদো না-খুশি থাকো। কেন না, বন্ধুর তীর বন্ধুর পাশে এসে পড়ে।
৭.
হে তৃষ্ণার্থ গুণাহর উপত্যকায় নৈরাশ্যবাদী হয়ো না। আল্লাহর রহমতের সাগরের ঢেউ এসে পৌঁছেছে।
৮.
খোদার প্রেমের পথে যে অটল (স্থির) থাকে, প্রেমাগ্নি তার অস্তিত্বকে (আমিত্বকে) বিলোপ করে দেয়।
৯.
তিনটি বস্তুর মাধ্যমে ঈমানের পরিপূর্ণতা লাভ হয়। আল্লাহ ভীতি, আল্লাহ প্রাপ্তির কামনা, আল্লাহর প্রেম।
১০.
তারাই প্রকৃত প্রেমিক, যাদের হৃদয় প্রতি মুহূর্তে জিকিরে নিমগ্ন থাকে, কিন্তু মুখ দেখে তা বোঝা যায় না।
১১.
এমন জায়গা যেখানে জাহেদরা হাজার চিল্লায় পৌঁছে। এশকের শরাবে মত্ত এক আহ্ শব্দে সেখানে পৌঁছে।
১২.
যারা দুধের শিশুর ন্যায় জ্ঞানের উপযোগী, তাদেরকে পোলাও কোরমার মতো অতি উঁচু স্তরের জ্ঞান দিও না।
১৩.
রুটি-রুজির চিন্তা ছাড় এবং রিজিকদাতাকে চিন। তারপর দেখ, তোমার হৃদয়ের কাঙ্ক্ষিত রিজিখ কিভাবে পৌঁছে।
১৪.
ঈশার শানই আমি-অর্থাৎ আমিই দ্বিতীয় ঈশা। কারণ তাঁর কাছে যে রুহুল কুদ্দুস, সেই রুহুল কুদ্দুস আমার কাছেও।
১৫.
কোন বিপদগ্রস্ত লোকের সাহায্য করাই সর্বাপেক্ষা বড় এবাদত।
১৬.
আমি মত্ত ও পাগল হয়ে পতঙ্গের মত তোমার (প্রভুর) চারদিকে ঘুরছি, হে জ্ঞানের প্রদীপ, আমাকে ধর, নিজের মধ্যে টেনে নাও।
১৭.
আমার ক্ষত হৃদয়ে, তোমার ইশকের ব্যথা যতই ব্যাখ্যা করি, সবই যেন ব্যাখ্যার বাইরে রয়ে যায়।
১৮.
আল্লাহ পাক যাদের ভালোবাসেন, তাদের মাথার ওপর বারিধারার মতো বিপদ বর্ষণ করেন।
১৯.
শত জ্ঞানী ও বিদ্যানের সমস্ত জীবনের পাপ পূণ্যের হিসাব হাশরের দিন এক নিশ্বাসে শেষ হইবে, আশেকের এক পলকের নেকী বদীর হিসাব একশত হাশরেও শেষ হবে না।
২০.
সর্বাবস্থায় বদনে প্রশান্তি এবং হাসির আভা বিদ্যমান থাকা আরেফ ব্যক্তিদের অন্যতম লক্ষণ। আরেফের মস্তকে বিরামহীন ভাবে নূর বর্ষিত হয়। নীরবতা আরেফের স্বভাব। আরেফ ঐ ব্যক্তি যিনি নিজের হৃদয়কে দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ের আকর্ষণ থেকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছেন। প্রতি মুহূর্তে আল্লাহর হাজার হাজার তাজাল্লি তার ওপর বিকশিত হয়।
২১.
প্রথমেই তোমার নাম হয়েছে মুহম্মদ, তোমার উম্মত হবে সত্য পথে যাত্রী এবং পরিণত হবে মাহমুদ।
২২.
তরিকত পন্থীদের জন্য ৫টি জিনিস দেখা এবাদত হিসেবে গণ্য মাতাপিতাকে দেখা, কুরআন শরিফ দেখা, আলেমে রব্বানীকে দেখা, বায়তুল্লাহ শরিফ দেখা, স্বীয় মুর্শিদকে দেখা।
২৩.
হে মানুষ জেনে রাখ, মানুষ মরে পঁচে গেলেই তার মৌলিক অস্তিত্ব শেষ হয়ে যায় না। তা সুক্ষ্মভাবে সম্পূর্ণরূপে অস্তিত্বশীল হয়ে থাকে। পতন ঘটে স্থূলদেহের, মন-মস্তিষ্কের উৎকর্ষের পতন ঘটে না। তাকে মানব বীজরূপে আল্লাহ সংরক্ষিত করে রাখেন।
২৪.
পুণ্য করার চাইতে পুর্ণবানের সোহবত যত উত্তম, পাপ করার চাইতে পাপীর সোহবত তত খারাপ।
২৫.
পৃথিবীতে প্রত্যেক জামানায় হাজার হাজার অলি-আল্লাহ বিদ্যমান থাকেন। তাদের অনেকেই থেকে যান দৃষ্টির আড়ালে। সুতরাং পৃথিবীকে কখনই আউলিয়া শূন্য মনে করো না।