হযরত আলী রাঃ এর অমীয় বাণী (পর্ব-১)
(১) রাজ্যের পতন হয় দেশ হতে সুবিচার উঠে গেলে, কারণ সুবিচারে রাজ্য স্থায়ী হয়। সুবিচারকের কোন বন্ধুর দরকার হয় না।
(২) হীনব্যক্তির সম্মান করা ও সম্মানীয় ব্যক্তির অপমান করা একই প্রকার দোষের।
(৩) বুদ্ধিমানেরা কোনো কিছু প্রথমে অন্তর দিয়ে অনুভব করে, তারপর সে সম্বন্ধে মন্তব্য করে। আর নির্বোধেরা প্রথমেই মন্তব্য করে বসে এবং পরে চিন্তা করে।
(৪) বুদ্ধিমান ও সত্যবাদী ব্যক্তি ছাড়া আর কারো সঙ্গ কামনা করো না।
(৫) অভ্যাসকে জয় করাই পরম বিজয়।
(৬) হজরত আলী (রা.) বলেন, ‘মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে, প্রেম-ভালোবাসার জন্য; আর বস্তু সৃষ্টি করা হয়েছে ব্যবহারের জন্য। সমস্যার জন্ম নেয়, যখন বস্তুকে ভালোবাসা হয় এবং মানুষকে ব্যবহার করা হয়।
(৭) সব দুঃখের মূল এই দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক আকর্ষণ।
(৮) পাপ লুকানোর চেষ্টা করে কোনোদিন সফলকাম হতে পারে না। পাপের কথা স্বীকার করে যদি কেউ তা ত্যাগ করার চেষ্টা করে তবে তার পক্ষে সফলতা লাভ করা স্বাভাবিক।
(৯) কৃপণতা সকল বদভ্যাসের সম্মিলিত রুপ। এটা এমনি এক লাগাম যা দ্বারা যে কোন অন্যায়ের দিকে টেনে নেওয়া চলে।
(১০) মানুষ উত্তম নিয়তের কারণে সওয়াব/পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়, যা অনেকক্ষেত্রে ভালো আমলের পরও পাওয়া যায় না। কেননা নিয়তের ক্ষেত্রে লোক-দেখানো বা লৌকিকতার সুযোগ নেই।
(১১) বুদ্ধিমানেরা কোনো কিছু প্রথমে অন্তর দিয়ে অনুভব করে, তারপর সে সম্বন্ধে মন্তব্য করে। আর নির্বোধেরা প্রথমেই মন্তব্য করে বসে এবং পরে চিন্তা করে।
(১২) পাপ লুকানোর চেষ্টা করে কোনোদিন সফলকাম হতে পারে না। পাপের কথা স্বীকার করে যদি কেউ তা ত্যাগ করার চেষ্টা করে তবে তার পক্ষে সফলতা লাভ করা স্বাভাবিক।
(১৩) সব দুঃখের মূল এই দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক আকর্ষণ।
(১৪) ধনসম্পদ মাটিতুল্য; আর মাটি সংরক্ষণের যথাযোগ্য স্থান হচ্ছে পদতলে। তা যদি মাথার ওপর রাখা হয়, সেটা কবরের নামান্তর হয়। আর কবর তো জীবিত মানুষের জন্য নয়।
(১৫) অযাচিত দানই দান, চাহিলে অনেক সময় চক্ষুলজ্জায় লোকে দান করে, কিন্তু তা দান নহে।
(১৬) সময় ও সম্পদ এমন দুইটি জিনিস, যা মানুষের ইচ্ছাধীন নয়। সময় মানুষকে বাধ্য করে, আর সম্পদ অহংকারী করে তোলে।
(১৭) নেককারদের সাহচর্য দ্বারা মানুষ শুধু মঙ্গলই পেয়ে থাকে। কেননা বাতাস যখন ফুলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাতে নিজেই সুগন্ধিযুক্ত হয়ে যায়।
(১৮) যা সত্য নয় তা কখনো মুখে এনো না । তাহলে তোমার সত্য কথাকেও লোকে অসত্য বলে মনে করবে।
(১৯) বড়দের সম্মান কর, ছোটরা তোমাকে সম্মান করবে।
(২০) মূর্খলোক সম্পদের জন্য অন্তরের শান্তি বিসর্জন দেয়; আর বুদ্ধিমান ব্যক্তি মনের শান্তির জন্য সম্পদ লুটিয়ে দেয়।
(২১) কখনও কারও সামনে নিজের সততা-ভালো হওয়ার কথা বলতে যাবে না। কেননা তোমার প্রতি যার বিশ্বাস আছে, তার কাছে তেমনটির প্রয়োজনই নেই; আর তোমার প্রতি যার ভক্তি-বিশ্বাস নেই, সে তা মেনে নেবে না।
(২২) জীবজন্তুর মাঝে থাকে প্রবৃত্তি-কামনা এবং ফেরেশতাদের মধ্যে থাকে বুদ্ধি-বিবেক; কিন্তু মানুষের মধ্যে থাকে উভয়টি। মানুষ যদি বিবেক-বুদ্ধিকে চেপে যায়, পশু হয়ে যায় আর যদি প্রবৃত্তি-কামনা-বাসনাকে চেপে যায়, ফেরেশতাসম হয়ে যায়।
(২৩) ধনসম্পদ হচ্ছে কলহের কারণ, দুর্যোগের মাধ্যমে কষ্টের উপলক্ষে এবং বিপদ আপদের বাহন
(২৪) স্বাস্থ্যের চাইতে বড় সম্পদ এবং অল্পে তুষ্টির চাইতে বগ সুখ আর কিছু নেই
(২৫) সৎমানুষের এটাও অন্যতম গুণ যে, তাদের ইচ্ছা করে মনে রাখতে হয় না; তাদের কথা এমনিতেই মনে পড়ে।
(২৬) ‘শব্দ-কথা’ মানুষের ইচ্ছাধীন দাস হয়ে থাকে; তবে তা বলার আগ পর্যন্ত। বলে ফেললে, মানুষ তার দাসে পরিণত হয়।
(২৭) কার্পণ্য ত্যাগ করো নতুবা তোমার আপনজনরা তোমার জন্য লজ্জিত হবে এবং অপরে তোমাকে ঘৃণা করবে।
(২৮) ভালোবাসা সবাইকে নিবেদন করো; তবে তাকে সর্বাধিক ভালোবাস, যার অন্তরে তোমার জন্য তোমার চেয়েও অধিক ভালোবাসা বিদ্যমান।
(২৯) যে কাউকে একাকী উপদেশ দেয়, সে তাকে সজ্জিত করে; আর যে কাউকে সবার সামনে উপদেশ দেয়, সে তাকে আরও বিগড়িয়ে ফেলে।
(৩০) জীবনযাপনকে প্রয়োজনের মধ্যে সীমীত রাখো; শখ-বাসনার দিকে নিয়ে যাবে না। চাহিদা একজন ফকিরেরও পূর্ণ হয়ে যায়। আর শখ-বাসনা একজন রাজা-বাদশাহরও পূর্ণ হয় না।
(৩১) কথা বল পার্থক্য-জ্ঞানসহ, প্রশ্ন-প্রতিবাদ কর প্রমাণসহ। কেননা মুখ তো পশু-প্রাণীরও থাকে; কিন্তু তারা জ্ঞান-বুদ্ধি-ভদ্রতা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে।
(৩২) যা তুমি নিজে করো না বা করতে পারো না, তা অন্যকে উপদেশ দিও না।
(৩৩) অসৎ লোক কাউকে সৎ মনে করে না, সকলকেই সে নিজের মতো ভাবে।
(৩৪) কোনো মানুষের ভালো বা গুণের কিছু জানলে, তা বল, প্রকাশ কর। কিন্তু কোনো ত্রুটি পেলে সেক্ষেত্রে তোমার নিজের গুণের পরীক্ষা বলে মনে করবে।
(৩৫) মানুষের সাথে তাদের বুদ্ধি পরিমাণ কথা বলো।
(৩৬) মনে রেখো তোমার শত্রুর শত্রু তোমার বন্ধু, আর তোমার শত্রুর বন্ধু তোমার শত্রু।
(৩৭) শত্রুরা শত্রুতা করতে কৌশলে ব্যর্থ হলে তারপর বন্ধুত্বের সুরত ধরে
(৩৮) সেসব মানুষের ওপর আস্থা-ভরসা রাখবে, যারা তোমার তিনটি বিষয় মূল্যায়ন করে। ক. তোমার হাসি-আনন্দের ক্ষেত্রে অব্যক্ত দয়া পোষণ করে, খ. তোমার ক্রোধের ক্ষেত্রে অব্যক্ত ভালোবাসা পোষণ করে, গ. তোমার মৌনতার ক্ষেত্রে গোপনমুখ হিসেবে কাজ করে।
(৩৯) যে নিজে সতর্কতা অবলম্বন করে না, দেহরক্ষী তাকে বাঁচাতে পারে না।
(৪০) বিপদে অস্থিরতা নিজেই একটি বড় বিপদ।
(৪১) মানুষ তো এই পৃথিবীতে লক্ষ্যবস্তুর ন্যায় যাকে লক্ষ্য করে বানের ন্যায় মৃত্যু ছুটে আসে। সে লুণ্ঠিত বস্তুর ন্যায় যাকে লুণ্ঠন করে নেওয়ার জন্য বিপদ-আপদ দ্রুত বেগে তার দিকে ধাবিত হয়।
(৪২) ধৈর্য যাকে পরিত্রাণ দিল না, অধৈর্য ও অস্থিরতা তাকে ধ্বংস করে দিল।
(৪৩) আমি মিথ্যা বলিনি। আমার ওপর মিথ্যা আরোপ করা হয়নি। আর আমি পথভ্রষ্ট হইনি এবং আমার দ্বারা কেউ পথভ্রষ্ট হয়নি।
(৪৪) হে আদম সন্তান! তুমি তোমার জীবন ধারণের অধিক যা কিছু উপার্জন কর, অন্যের জন্য তুমি তার ভাণ্ডার রক্ষক মাত্র।’
(৪৫) অন্যায় সূচনাকারী যালেম আগামী দিন (অর্থাৎ কিয়ামতের দিন) স্বীয় হাত কামড়ে খাবে।
→হযরত আলী রাঃ এর অমীয় বাণী (পর্ব-১)
→হযরত আলী রাঃ এর অমীয় বাণী (পর্ব-২)