স্বামী বিবেকানন্দ এর অমর বাণী (পর্ব-৩)

স্বামী বিবেকানন্দের বাণী: পর্ব-৩

 

“পবিত্র, খাঁটি ও প্রত্যক্ষ অনুভূতি সম্পন্ন মহাপ্রাণ ব্যক্তিরাই,
জগতে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে থাকেন”

“কোনো ব্যক্তি অসত্যের দিকে আকৃষ্ট হয়
তার প্রধান কারণ হলো, সে সত্যকে ধরতে পারছেনা।
অতএব যা মিথ্যে তা দূর করার একমাত্র উপায় হলো,
যা সত্য তা মানুষকে দিতে হবে।
সত্যটা কি? তাকে সেটা জানিয়ে দেও।
সত্যের সাথে সে নিজের ভাবের তুলনা করুক।
তুমি তাকে সত্য জানিয়ে দিলেই
ওখানেই তোমার কাজ শেষ হয়ে গেল।”

“আমাদের জীবনের সবচেয়ে সুখকর মুহুর্ত সেইগুলি,
যখন আমরা নিজেদের একেবারে ভুলে যাই।”

“অসংযত ও উচ্ছৃঙ্খল মন আামাদের নিয়ত
নিম্ন থেকে নিম্নতর স্তরে নিয়ে যাবে
এবং চরমে আমাদের বিধ্বস্ত করবে, ধ্বংস করবে।
আর সংযত ও সুনিয়ন্ত্রিত মন আমাদের রক্ষা করবে, মুক্তিদান করবে।”

“যারা লক্ষ লক্ষ দরিদ্র ও নিষ্পেষিত নরনারীর
বুকের রক্ত দিয়ে আয় করা টাকায় শিক্ষিত হয়ে
এবং বিলাসিতায় আকণ্ঠ ডুবে থেকেও তাদের কথা একটিবার
চিন্তা করার অবসর পায় না-তাদের আমি ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলি।”

“তুমি ইন্দ্রিয়ের দাস কিন্তু
এই ইন্দ্রিয়ের ভোগ স্থায়ী নয়, বিনাশী এর পরিনাম।
এই তিনদিনের ক্ষনস্থায়ী বিলাসের ফল সর্বনাশ।
অতএব ইন্দ্রিয়ের দ্বারা সৃষ্ট সুখকে ত্যাগ করো,
এটাই ধর্মলাভের উপায়।
ত্যাগই আমাদের চরম লক্ষ্য
ও মুক্তির পথ কিন্তু ভোগ আমাদের লক্ষ্য নয়”

“দর্শনবর্জিত ধর্ম কুসংস্কারে গিয়ে দাঁড়ায়,
আবার ধর্মবর্জিত দর্শন শুধু নাস্তিকতায় পরিণত হয়।
আমাদের নিম্নশ্রেণীর জন্য কর্তব্য এই,
কেবল তাদেরকে শিক্ষা দেওয়া
এবং তাদের বিনষ্টপ্রায় ব্যক্তিত্ববোধকে জাগিয়ে তোলা”

“প্রথমে অন্নের ব্যবস্থা করতে হবে, তারপর ধর্ম”

“ভক্তি, যোগ এবং কর্ম – মুক্তির এই তিনটি পথ।
প্রত‍্যেকের কর্তব্য তার উপযুক্ত পথটি অণুসরণ করে চলা।
তবে এই যুগে কর্মযোগের উপরেই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত”

“মানুষ মূর্খের মত মনে করে,
স্বার্থপর উপায়ে সে নিজেকে সুখী করতে পারে।
বহুকাল চেষ্টার পর অবশেষে বুঝতে পারে প্রকৃত সুখ স্বার্থতার নাশে
এবং সে নিজে ছাড়া অন্য কেউই তাকে সুখী করতে পারবে না”

“যে ব্যক্তিতে সত্য, পবিত্রতা ও নিঃস্বার্থপরতা বর্তমান-স্বর্গে,
মর্তে বা পাতালে এমন কোনো শক্তি নেই যে তাকে মারতে পারে।
এগুলি সম্বল থাকলে সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড বিপক্ষে দাঁড়ালেও
একলা সেই ব্যক্তি প্রতিপক্ষের সম্মুখীন হতে পারেন।”

“সাফল্য লাভ করিতে হইলে প্রবল অধ্যবসায়,
প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি থাকা চাই। অধ্যবসায়শীল সাধক বলেন,
‘আমি গণ্ডূষে সমুদ্র পান করিব।
আমার ইচ্ছামাত্র পর্বত চূর্ণ হইয়া যাইবে।’
এইরূপ তেজ, এইরূপ সংকল্প
আশ্রয় করিয়া খুব দৃঢ়ভাবে সাধন কর।
নিশ্চয়ই লক্ষে উপনীত হইবে।”

“মনে করিও না, তোমরা দরিদ্র। অর্থই বল নহে;
সাধুতাই-পবিত্রতাই বল। আপনাতে বিশ্বাস রাখো।
প্রবল বিশ্বাসই বড় কাজের জনক।”

“শক্তি ও সাহসিকতাই ধর্ম।
দুর্বলতা ও কাপুরুষতাই পাপ।
অপরকে ভালোবাসাই ধর্ম,
অপরকে ঘৃণা করাই পাপ।”

“অজ্ঞানতাই বন্ধনের কারণ,
আমরা অজ্ঞানেই বদ্ধ হয়েছি।
জ্ঞানের উদয়ের দ্বারাই অজ্ঞানতার নাশ হবে,
জ্ঞানই আমাদের অজ্ঞানতার পারে নিয়ে যাবে”

“নিজেদের বিপদ থেকে টেনে তোলো!
তোমার উদ্ধার-সাধন তোমাকেই করতে হবে।
ভীত হয়ো না। বারবার বিফল হয়েছো বলো নিরাশ হয়ো না।
কাল সীমাহীন, অগ্রসর হতে থাকো,
বারবার তোমার শক্তি প্রকাশ করতে থাকো,
আলোক আসবেই।”

“মানুষকে সর্বদা তাহার দুর্বলতার বিষয়
ভাবিতে বলা তাহার দুর্বলতার প্রতীকার নয়-
তাহার শক্তির কথা স্মরণ করাইয়া দেওয়াই প্রতিকারের উপায়।
তাহার মধ্যে যে শক্তি পূর্ব হইতে বিরাজিত,
তাহার বিষয় স্মরণ করাইয়া দাও।”

“হে বীরহৃদয় যুবকগণ,
তোমরা বিশ্বাস কর যে,
তোমরা বড় বড় কাজ করবার জন্য জন্মেছ।
ওঠ, জাগো, আর ঘুমিও না; সকল অভাব,
সকল দুঃখ ঘুচাবার শক্তি তোমাদের ভিতরেই আছে।
এ কথা বিশ্বাস করো, তা হলেই ঐ শক্তি জেগে উঠবে।”

“কেবল আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন
করতে পারলেই সবধরনের দুঃখ-কষ্ট ঘুচবে।
যতই শক্তি প্রয়োগ, শাসন প্রণালীর পরিবর্তন
ও আইনের কড়াকড়ি করোনা কেন,
তারফলে জাতির অবস্থার পরিবর্তন হয়না।
আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষাই,
প্রবৃত্তি পরিবর্তন করে জাতিকে সৎ পথে চালিত করে।”

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel