যামানার মহা কামেল, যুগ শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দেদ বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃ)

আমার হযরত পীর কেবলাজান বিশ্বওলী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেব যিঁনি দয়াল নবীর নায়েব, যামানার মহা কামেল, নূরে মুহাম্মদীর ধারক, যুগ শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দেদ। দুনিয়ার মানুষকে রাসূল (সাঃ) এঁর প্রেম শিক্ষাদিতেই তিঁনি দুনিয়ার বুকে আসেন। তিঁনি ফরমান, ” আল্লাহ রাসূলের ভালোবাসা মানুষের মনে সৃষ্টি করার আর্দশ প্রচারের নির্দেশিত হয়ে আমি এসেছি।”

নূরে মুহাম্মদি সম্পর্কে  কেবলাজান হুজুর ফরমান, “সমস্ত সৃষ্টির ফাউন্ডেশন হযরত রাসূল (সাঃ)। তিঁনি জাতে (সত্তায়) উদ্ভুত প্রেমের প্রথম বিকাশ। নূরে মুহাম্মদি দ্বারা সব-ই সৃষ্টি। নূরে মুহাম্মদি একটা সুন্দর উজ্জ্বল প্রদীপ। এই প্রদীপ থেকেই তামাম আশেকান এর হৃদয়ে আল্লাহ রাসূলের মহব্বতের প্রদ্বীপ জ্বলে উঠেছে।”

তিঁনি বলতেন, বাবা সকল! এই যে সূর্য সারা দুনিয়াকে আলো দেয়, এই সূর্য আলো পায় কার কাছ থেকে? নিশ্চয় অন্য কোনো বড় সূর্য থেকে। আর ঐ বড় সূর্যটা ই হলো নূরে মুহাম্মদী।”

তাই তিঁনি মধুর কন্ঠে গাইতেন,
“রাসূল তোমারই কারনে বিশালও ভূবনে
আমার আল্লাজিরও পরিচিয়।
না ছিলো আকাশ, না ছিলো বাতাস,
না ছিলো চন্দ্র-সূর্য দীপ্তময়।”

হযরত রাসূল (সাঃ) ছিলেন বিশ্ব জগতের জ্ঞানের প্রতীক। এই সম্পর্কে পীর কেবলাজান ফরমান,
“আল্লাহতায়ালার নূর হিসাবে ও সমস্ত জগতের ধারক ও বাহক হিসাবে হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) ছিলেন বিশ্ব জগতের জ্ঞানের প্রতীক।”

প্রেম বিতরনে নবীজীর (সাঃ) শ্রেষ্ঠত্বের কথা বলতে গিয়ে পীর কেবলাজান বলেন, “আল্লাহপাকের পক্ষ হইতে তিনি (হযরত রাসূল সাঃ) সকলেরই আশ্রায়স্থল-তাই তাহার তুলনা নাই যেমন মহত্বে, তেমনি জ্ঞানে, শৌর্যে ও বীরত্বে।”

রাসূলের (সাঃ) পূর্ণ চাঁদ ছিলেন আমার হযরত পীর কেবলাজান। দুনিয়ার অন্য আল্লাহওলীগণ যখন নিজের নামে বা তিঁনাদের শায়েখগণের নামে তরিকা দিচ্ছেন তখন আমার দয়াল বাবা, ” রাসূল পাক (সাঃ) এঁর সত্য তরিকায় আমাদেরকে দিক্ষা দিলেন। আমাদেরকে ওয়াদা করালেন,” রাসূলুল্লাহর সত্য তরিকা শেষ নিঃশ্বাস পযর্ন্ত ছাড়বো না।”

প্রায় ১৪০০ বছর আগে সাহাবীগণ রাসূল (সাঃ) এঁর কদমে বিভিন্ন জিনিস নজরানা দিতেন। আমার পীর কেবলাজান ১৪০০ বছর পরে আমরা যেনো  রাসূলের কদমে নজরানা দিতে পারি সেই ব্যবস্থা করলেন। তিঁনি ফরমাইলেন, “বাবা সকল! রাত্রে বিছানাই পিঠ লাগাইবার পূর্বে রাসূল (সাঃ) কে “৫০০ বার” “দরুদ শরীফ” পড়ে নজরানা দিয়া ঘুমাইবেন।”

তিঁনি রাসূলের চরিত্রে চরিত্রবান ছিলেন।
তিঁনার প্রতিটা হুকুম ছিলো রাসূল (সাঃ) সুন্নাত অনুসারে।
তিঁনি রাসূলে দেখানো পথ অনুসরন করে বলতেন,
“তোমার ছেলেপেলে তিনবার খাবে আর তোমার প্রতিবেশী  উপবাস থাকবে,
তাহলে তুমি প্রকৃত মুসলমান নও, রাসূলে করিম (সাঃ) ও তোমার উপর খুশি হবেনা।”

রাসূল (সাঃ) ফরমান, “মানুষকে খাওয়ানো ইসলামের অন্যতম ভালো কাজ।”  আর আমার কেবলাজান এই মেহমানদারীর জন্য গড়ে তুললেন “দুনিয়ার সব চেয়ে বড় মেহমানখানা।” তিঁনি রাসূলের ঘর হিসাবে খ্যাত “মাদ্রাসা”।

তাই তিঁনি  প্রতিষ্ঠা করলে সুবিশাল আলীয়া কামিল মাদ্রাসা। হযরত রাসূল (সাঃ) এঁর মহব্বতই ঈমান। এ সম্পর্কে হযরত পীর কেবলাজান ফরমান, “ঈমানের মানদন্ডই হইল রাসূলে পাক (সাঃ) এর প্রতি মহব্বত।”

তিঁনি আরো ফরমান, ” রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মহব্বতই প্রকৃত ঈমান। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মহব্বত যাহার অন্তরে যতটুকু তাহার ঈমানও ততটুকু, যার অন্তরে দয়াল নবীর মহব্বত নাই তার ঈমান বলতে কিছু নাই, সে ছরাছার বেঈমান।”

আজ বিশ্ব মুসলমানগণের অন্তরে রাসূল (সাঃ) এর মহব্বত না থাকার কারনে সারা দুনিয়া মুসলমানগণ মার খায়।

কেবলাজান বলেন, “রাসূলের (সাঃ) আর্দশ মেনে না চললে কাফেরের আঘাতে চূর্ন-বিচূর্ন হবেন।”

তিঁনি আরো ফরমান, “আল্লাহ ও তার রসূলের পথ থেকে মুসলমানদের বিচ্যুত হওয়ার কারনেই আজ তাদের এত দুর্দশা। রাসূলের মহব্বত ব্যতিরেকে, রাসূলের (সাঃ) খেলাপ করে মুসলমানগণ ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না।” দুনিয়ার সকল সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন হলো নবীজির দুনিয়ায় আগমনের দিন। আমার পীর কেবলাজান এই দিনে উপলক্ষ্যে পবিত্র কন্ঠে গাইতেন,

“গুনাহগার ভয় নাহি আর মাফি নেবার
আজকে মহা দিন
এসেছেন সেই মুহাম্মদ মোস্তফা ওই রাসূলে করিম
কাঁদিছে লাখ মানত ঐ কাবা ঘরে
কাঁপিছে শয়তান আজই পালাবে কোন পথে হায়
রশনি ভরা আসমান ও জমিন।”

রাসূলে (সাঃ) পবিত্র মিলাদুন্নাবীতে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল কলেমা খচিত পতাকায়  সজ্জিত হয়। ক্ষনে ক্ষনে মিলাদ শরীফ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নবীজিকে সালাম দেয়া হয়। যখন নবীজিকে দাঁড়িয়ে দাড়িঁয়ে সালাম দেয়া হয় তখন এমন কোন কঠিন হৃদয় জন্ম নেয়নি যার চোখ বেড়ে রাসূলের মহব্বতে পানি পড়বেনা।

রাসূলের মহব্বতে হাউ-মাউ করে কাঁদবে না। আর এই কান্নার শিক্ষা আমার দয়াল বান্ধবের। রাসূল (সাঃ) এর বয়ান করতে গেলে কেবলাজান বেকারার হয়ে যেতেন। কেঁদে পবিত্র বুক ভাসাতেন। আর তখন বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে কোটি কোটি তৃষ্ঞার্ত প্রান বান্ধবের সাথে কান্নার স্রোতে ভাসতো।

এই মিলাদুন্নাবী (সাঃ) এ  তিঁনি রাসূল পাক (সাঃ) এঁর  সত্যিকারে  আর্দশ প্রচারের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন “জাকের পার্টি”। আর পার্টি প্রতীক হিসেবে নেন, “রাসূলের পবিত্র ঘাম মোবারক থেকে সৃষ্টি পবিত্র “গোলাপ ফুল”। পতাকায় রাখেন সবুজ গম্ভুজের মালিকের “সবুজ রং।” আমার পীর কেবলাজান জীবনভর  খোদাতালাশীগণকে রাসূলে প্রেম সুধা পান করিয়েছেন। তিঁনি আবেগময় পবিত্র কন্ঠে গাইতেন,

“নবী প্রেম সুধা পান কর সবে
মন বেদনা যাতনা জুড়াইবে,
খোদা প্রাপ্তি তোর তরে লাভ হবে
নবী পদ বিনে ভাব সবই মিছে।”

তিঁনি বলতেন, বাবা! রাসূলে করীম (সাঃ) এর মহব্বত যিনি লাভ করেন, তার ইহপারকালে মন বেদনার কারন নেই।”

তিঁনি পবিত্র কন্ঠে গজল গাইতেন,

“এসো শাফিয়ে মাহশর দেখ এসে
মোরে দংশিছে বিচ্ছদ আশীবিষে
এর ওঝা নাহি নবী তোমা বিনে
তব পাশে আছে এর মন্ত্রষধী।”

রাসূলকে দেখার আকুতিতে গাইতেন,

“তব দরশনে জ্বালা জুড়াইব
পদ পরশনে তনু শীতলীব
দাস সম্ভাষনে মনে পুলকিব
পদ নিরজ ভোষজ এই বিষে।”

হযরত রাসূল (সাঃ) তামাম সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত। আমার পীর কেবলাজান জাকেরান-আশেকানগণকে নিশির শেষ ভাগে সেই রাসূলের দয়া ও করুনা লাভের আশায় দয়াল নবী (সাঃ) কে “ইয়া রাহমাতাল্লিল” নাম ধরে ডাকার শিক্ষা দেন।

তিঁনি মধুর কন্ঠে গাইতেন,
“যার পিপাসাও হৃদি শুকায় রে
দাও ক্ষীর ছানা ননী যত্ন করে
হীরা মুক্তা মানিক  দাও তারে
কভু ফিরে ও চাবে না তারে পানে।”

আমার দয়াল পীর দস্তগীর Bishwa Zaker Manzil – বিশ্ব জাকের মঞ্জিল দরবার শরীফ সম্পর্কে ফরমান, “এই দরবার আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর স্বীকৃত দরবার।” তিঁনার প্রতিটা বাণী, প্রতিটা পদক্ষেপ ছিলো রাসূলের মহব্বত নিয়ে।
মহান খোদাতায়ালার নিকট কোটি কোটি শুকরিয়া এমন “মহান বান্ধবের” দরবারে যাওয়া সৌভাগ্য নসিব করার জন্য।

– লেখক: সুজন শাহজী

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel