রাসূল (সাঃ)’র নিকট জীব্রাইল বাজ পাখীর রূপে আসার কাহিনি।

রাসূল (সাঃ)’র নিকট জীব্রাইল বাজ পাখীর রূপে আসার কাহিনি।

বিশ্বওলী খাজাবাবা হযরত ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) তেনার নসিহতে একটি কাহিনীর উল্লেখ করেছেন- যা পাঠ করলে পাঠক মাত্রই বুঝতে পারবে নবীজী (সাঃ) কেন ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’।

কাহিনীটি নিম্নে দেওয়া হলোঃ

সহীহ রেওয়াতে আছে, একদা হযরত জীব্রাইল (আঃ) আল্লাহতায়ালার নিকটে আরজ করিলেন, হে আল্লাহ্‌পাক! আপনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে কেন রাহমাতুল্লিল আ’লামীন উপাধিতে ভূষিত করিলেন, অন্য কোনো নবী কেন এমন নামে অভিহিত হইলেন না। আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামীন হযরত জীব্রাইল (আঃ) কে তখন বলিলেন, ‘তুমি আমার হাবীবের নিকট গমন কর, তাহা হইলেই ইহার কারণ জানিতে পারিবে।’ হযরত জীব্রাইল (আঃ) তখন এক বাজ পাখীর রূপ ধারণ করিলেন।

তাহার অন্য এক সহযোগী ফেরেশতাকে এক কবুতর শাবকের রূপ ধারণ করিতে বলিলেন। অতঃপর বাজ পাখী রূপী জীব্রাইল (আঃ) কবুতর রূপী পক্ষী শাবককে তাড়া করিয়া হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) এর নিকট গমন করিলেন। কবুতর রূপী ফেরেশতা রাসূলে করীম (সাঃ) এর নিকট প্রাণ রক্ষার জন্য আশ্রয় চাহিল। হযরত রাসূলে করীম (সাঃ) তাহাকে তাহার নিজের জামার পকেটের মধ্যে লুকাইয়া রাখিলেন। ইহার পর বাজপাখী রূপী জীব্রাইল (আঃ) আসিয়া হযরত নবী করীম (সাঃ) কে বলিল, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি ক্ষুধার্ত; এই পাখীটাকে যদি আপনি আমাকে ফেরত না দেন, তাহা হইলে আমাকে ক্ষুধায় কষ্ট পাইতে হইবে।’ নবী করীম (সাঃ) তখন বাজপাখীকে বলিলেন, ‘তুমি আমার শরীরের যে কোনো স্থান হইতে গোশত যতখানি খুশী খাইয়া যাও।’

তখন বাজপাখী নবী করীম (সাঃ)-এর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় তাহার ঠোঁট লাগাইল- কিন্তু দেখিতে পাইল, নবী করীম (সাঃ)-এর দেহ মোবারকের কোথাও গোশত নাই। কেবলই হাড়ের কাঠামোর উপর চামড়া আবৃত। বাজপাখীরূপী জীব্রাইল (আঃ) তখন বলিলেন, ‘হে নবী (সাঃ)! আপনার দেহ মোবারকের কোথাও একটুও গোশত নাই, যাহা দিয়া আমার ক্ষুধা নিবৃত্ত করিতে পারি।’ তখন নবী করীম (সাঃ) তাহাকে বলিলেন, ‘আমার চক্ষু নিশ্চয়ই নরম। তুমি না হয় আমার চক্ষু খাইয়া তোমার ক্ষুধা নিবৃত্ত কর।

যে কবুতর আমার কাছে আশ্রয় চাহিয়াছে তাহাকে আমি তোমার হাতে তুলিয়া দিয়া তাহার মৃত্যু ঘটাইতে পারিব না।’ তখন জীব্রাইল (আঃ) আপন পরিচয় জানাইয়া ও ঐরূপ বেশ সাজিবার উদ্দেশ্য ব্যক্ত করিয়া নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট ক্ষমা চাহিয়া বলিলেন, ‘আমার সকল ভ্রান্তি অপসারিত হইয়াছে, আপনিই রাহমাতুল্লিল আ’লামীন, সমস্ত বিশ্ব নিখিলের জন্য করুণা ধারা।’

গ্রন্থসূত্রঃ [খোদাপ্রাপ্তি জ্ঞানের আলোকে বিশ্বওলী শাহ্সূফী হযরত ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নসিহত-সকল খন্ড একত্রে, নসিহত নং ৯৫, পৃষ্টা নং ৮০৫-৮০৬]