সত্যের সাধক ইমাম হোসেন ইসলামের জন্য জীবন দিলেও মাথানত করেননি।
ইমাম হোসেন (রাঃ) যদি ধর্মচ্যুত ও আর্দশচ্যুত এজিদের বশ্যতা বা আনুগত্য স্বীকার করিতেন, তাহা হইলে হয়তো আরও কিছু দিন তিঁনি জীবিত থাকিতে পারিতেন কিন্তু সত্যের সাধক ইমাম হোসেন (রাঃ) এর পক্ষে অসত্য ও অন্যায়ের কাছে মাথা নোয়ানো কি করিয়া সম্ভব?
তিনি যদি তাহা করিতেন, তাহা হইলে রাসূলে পাক (সাঃ) এর সত্য ধর্ম ইসলামের সাত্ত্বিক আর্দশ চিরদিনের জন্য কবরস্থ হইতো। তাই সত্যের আর্দশ সমুন্নত রাখার জন্য ধর্মের হেফাজতের প্রয়োজনে তিনি পুত্র-পরিজনসহ প্রান দান করিলেন। প্রান দান করিয়া মরণজয়ী মহাপুরুষ হিসাবে খ্যাত হইলেন। সত্যের জয় হইল।
মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়াইয়া আর্দশের জন্য প্রান দান সহজ কথা নয়। ইহা এক মহৎ গুন। এই মহৎ গুণ ইমাম বংশের মধ্যে সঞ্চারিত হইয়াছিল দয়াল নবী (সাঃ) এর চারিত্রিক গুনের প্রতিবিম্ব হিসেবে। কারবালার ইতিহাস মুসলিম জাতিকে সেই ত্যাগের গুণ অর্জনের তাগিদ দেয়।
কিন্তু ত্যাগের সেই মহৎ গুন অর্জনের জন্য প্রয়োজন আত্নশুদ্ধির সাধনা, প্রয়োজন আধ্যাত্নিক অনুশীলন। আধ্যাত্নিক চর্চা মুসলমানদের মধ্যে না থাকার কারনে সংখ্যার দিক থেকে এই জাতি ১২৫ কোটির মত হওয়া সত্ত্বেও তাহারা এজিদ শক্তির নিকট বারংবার অত্যাচারিত বা লাঞ্ছিত হইতেছে।
এজিদ শুধু একজন ব্যক্তি নয়। এজিদ এক অশুভ শক্তি। এজিদি শক্তির সেলসেলা বিশ্ব ব্যাপী বিস্তৃত। সে শক্তি আজ বিরাট মহীরুহ। শিকড়সহ সেই এজিদি অপশক্তির মহীরুহ উৎপাটন করিতে হইলে প্রত্যেক মুসলমানেরই প্রয়োজন আত্নশুদ্ধির মাধ্যমে ত্যাগের গুন অর্জন করা। ইমাম ছাহেবের রক্ত সেই অনুপ্রেরণাই দেয়।
গ্রন্থসূত্রঃ খোদাপ্রাপ্তি জ্ঞানের আলোকে শাহসূফী হযরত ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের পবিত্র নসিহত শরীফ, ৯ম খন্ড (মুহাররম)।