আহলে বাইত (আ:) আলোচনা (কোরআন দর্শন: সদরউদ্দিন চিশতী)
কোরআনুল হাকীমে ২৯টি সূরার প্রারম্ভে ব্যবহৃত যে সাংকেতিক অক্ষর (মোকাত্তা আত) উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে দুটি সূরার সাংকেতিক অক্ষর নিয়ে সামান্য আলোকপাত করছি।
কোরআন মানুষের জন্য প্রেরিত। ইহার সব কিছুই মানুষের জ্ঞাতব্য। কাজেই সাংকেতিক অক্ষরগুলির ইঙ্গিত আল্লাহ ছাড়াকেহই জানেনা-একথা মোটেই গ্রহণ যোগ্য নহে। আমাদের ধারণায় কোরানের সব কিছু মানুষের জানার জন্যইরহিয়াছে।
মতভেদের দৃষ্টিতে মুসলমানগণ মুলত: দুইটি দলে বিভক্ত। একদল রসুল এবং তাঁহার বংশধরগণের শ্রেষ্ঠত্বের দাবির সমর্থক। ইহারা সংখ্যায় অল্প। অন্যদল ক্ষমতাসীন শাষকগোষ্ঠীর সমর্থ্ক, ইহারা সংখ্যায় অধিক। শাষকগোষ্ঠী বলতে বিশেষ করিয়া উমাইয়া এবং আব্বাসীয় রাজাগণ রসূল এবং তাঁহার বংশধর এবং অন্যান্য মহা-পুরুষগণের শেষ্ঠেত্ব এবং গুরত্ব যথা সম্ভব গোপন করিয়া রাখিবার চেষ্টা চালাইয়া গিয়েছে, তাঁহাদের প্রচারিত দলিল পত্রের মাধ্যমে যা আজও চলছে।
কোরানের সাংকেতিক অক্ষর সমুহ (মোকাত্তা আত) মোট ১৪ প্রকার সাংকেতিক শব্দ কোরান মজীদের ২৯টি সূরার প্রারম্ভে উল্লেখিত হয়েছে। এই সংকেত সমুহে ১৪টি অক্ষর ব্যবহৃত হইয়াছে। এইগুলি রসূল এবং তাঁহার বংশের ১৪ মাসুমের প্রতীক রুপে গ্রহণ করা হইয়াছে।’’মোকাত্তাআত’’ এর সবগুলি মহা-পুরুষগণের গুণাবলীর উল্লেখ এবং সেই সব গুণাবলীর প্রতীক ব্যতীত অন্য আর কিছুই নহে।
এখন আমরা শুধুমাত্র সূরা শু,য়ারা এবং সূরা কাসাসের প্রারম্ভে উল্লেখিত একই রুপ প্রকাশ নিয়ে কিছু আলোচনা করব।
তোয়া-সীন-মীম :যেহেতু এই দুই সূরার প্রারম্ভে একই সাংকেতিক অক্ষর প্রকাশ করা হয়েছে যাহার অর্থ একই রুপ। তোয়া-সীন-মীম :তৈয়ব-তাহের-হাসান-হোসেন-মোহাম্মদ। অথাৎ ইহারা আল কেতাবের প্রকাশ্য পরিচয়। রাসুলাল্লাহর প্রথম স্ত্রীর গর্ভে দুইটি পুত্র সন্তানকেই তিনি সংসার হইতে বাল্যকালেই বিদায় দিলেন এবং সেই স্থলে ইমাম হাসান–হোসেনকে পুত্র রুপে গ্রহণ করিলেন। এইজন্য তাঁহারা দুই ভাই হইলেন ‘’ইবনে রসুল’’ অথাৎ রসূল নন্দন। ইহারা হইলেন নবী পুত্র বা রেসালতের পুত্র।
আমাদের নিকট ভেদ তত্বের বিশ্বাস মতে তৈয়ব-তাহের মাসুম হইলেও তাঁহাদের দুই জনকে মা ফাতেমা নন্দন রুপে পূনর্জন্মে আনিয়া চরম ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ব্যক্তিত্বে পরিনত করিয়া (দেহ জাত নহে) নবী জাত একটি খাস নূরের ফোয়ারা রুপে তাঁহাদিগকে প্রকাশে আনিলেন। এইজন্য ইহারা হইলেন মোহাম্মদ মোহাম্মদ। মীমের উপর তসদীদ স্থাপন করিয়া মোহাম্মদ সংকেতটিকে দ্বিতল বিশিষ্ট করিয়াছেন।সুত্র:মওলা সদর উদ্দীন চিশতী (আ:) এর
গ্রন্থ সূত্রঃ কোরআন দর্শন ১ম খন্ড। (সদরউদ্দিন চিশতী)