হোমপেজ মেরাজ তত্ত্ব মেরাজ তত্ত্ব (পর্ব-০২)

মেরাজ তত্ত্ব (পর্ব-০২)

1053

মেরাজ তত্ত্ব (পর্ব-০২)

রাসূল (সঃ) মেরাজে গিয়েছিলেন ৭ম আসমানে। এটাই সত্য। কিন্তু হাকীক্বতে বা মারফতে আসমান এর ভিন্ন ব্যখ্যা রয়েছে। প্রতিটি মানুষের মাঝেই ৭ম আসমান রয়েছে। রয়েছে আরশ, কুর্সি, লৌহ মাহফুজ, শুধু তাই নয়, রয়েছে পরম করুনাময় মহান প্রভু আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন। পরমের অবস্থান এই দেহের মাঝেই। আল্লাহ নিজেই বলেছেন যে ‘আল্লাহ মানুষ ও মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করেন’। মানবের মাঝেই স্রষ্টার বসবাস। যদি আপনি সপ্ত আসমান সম্পর্কে জানতে পারেন, তবেই এই বিষয়টা আপনার কাছে আয়নার মত স্বচ্ছ মনে হবে।

এখন প্রথম থেকে আলোচনায় আসি। মুহাম্মদ (সঃ) মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় গিয়ে নামাজ আদায় করেছিলেন মেরাজের রাতে। আর এই দুই মসজিদের দূরত্ব সম্পর্কেও রাসূল (সঃ) বলেছেন যে ৪০ বছর সময় লাগবে। আমরা এখন সবাই জানি যে, হেটে গেলেও ৪০ বছর লাগবে না। তবে কি রাসূল (সঃ) মিথ্যা বলেছেন! (নাউজুবিল্লা)। মূলত রাসূল (সঃ) এখানে তাঁর নবুয়ত লাভের ব্যপারটা বুঝিয়েছেন। নবুয়ত তাঁর মাঝেই ছিল সুপ্ত অবস্থায়, প্রতি মানুষের মাঝেই ওলীয়তী ক্ষমতা বা খোদায়ী ক্ষমতা থাকে সুপ্ত অবস্থায়। সাধন বলেই সেটা জাগ্রত করতে হয়। তেমনি রাসূল (সঃ) কেউ সেই ক্ষমতা জাগ্রত করার জন্য হেরা গুহায় ধ্যান করতে হয়েছিল। এটা মূলত দীর্ঘ্য আলোচনার বিষয়, অন্য একদিন বৃহত ভাবে আলোচনা করব।

এখন আসি বোরাক তত্ত্বে। বোরাকের আকৃতি নিয়ে পূর্বেই আলোচনা করা ছিল। তবে বোরাক নিয়ে অনেক ভ্রান্ত মতবাদ প্রচলিত আছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি ভ্রান্ত মতবাদ তুলে ধরা হল বোরাক সম্পর্কে। অনেকেই নয় বরং অধিকাংশ লোকই বলে থাকে যে, বোরাক মুখ যেহেতু নারীর মত বলা হয়েছে, সেহেতু উম্মে হানীই হল বোরাক। উম্মে হানীর চেহাড়াকেই উনারা বোরাকের চেহারা বলে থাকেন। বোরাকের দুইটা পাখা বলতে তারা বলে থাকেন যে দুই নাকের দুই ছিদ্র দিয়ে যে শ্বাস প্রশ্বাস প্রবাহিত হয়। অবশ্য এটার অনেকে গুরুত্ব আছে মিরাজের দিকে। বোরাকের পিঠ গাধার মত, অর্থাৎ নারীর বুকের পুরুষের আরামদায়ক বাহন।বোরাকের সীনাটা বাঘের মত, যা কিনা কাম ক্ষুধার প্রতীক। পেছনের লেজ বা পুচ্ছটা ময়ূর পেখমের মত, সেটাও মূলত কাম ক্ষুধার প্রতীক বা নারীর শাড়ীর প্রতীক মনে করেন তারা। বোরাকের পা ঘোড়ার পায়ের ক্ষুরের মত, যা মনের প্রতীক বলে ধরা হয়। কাম ক্ষুধার দিকটাই অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে এই মতের মানুষেরা। তারা মূলত বুঝাতে চান যে, উম্মে হানীর সাথে রাসূল (সঃ) এর শারীরিক সম্পর্কে হয়েছিল সেদিন রাতে (নাউজুবিল্লা)।

মিরাজের মত আধ্যাত্মিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টাকেউ তারা নোংরামীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেছে। এই জন্যেই মূলত তারা বলে থাকে যে, নারী ছাড়া সাধনা হয় না, নারী ছাড়া নামাজ হয় না, তাই মিরাজও হয় না। বিষয়টা আপনারা আপনাদের বিবেক দিয়ে বিচার করলেই বুঝতে পারবেন অনেকটা।

বোরাক নিয়ে ভ্রান্ত তত্ত্ব উল্লেখ করলাম আজ, আগামী পর্ব গুলোতে বোরাকের হাকীকত ও রফরফ নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। কেন বোরাক ৪র্থ আসমানের উপর যেতে পারে না, এবং ৭ম আসমানে পৌঁছাতে কেনই বা রফরফ এর প্রয়োজন হয়।

১ম পর্ব পোস্ট না পড়লে এই পোস্ট বুঝবেন না। তাই আগে পূর্বের পোস্ট পড়ুন। ১ম পর্ব: মেরাজ তত্ত্ব (পর্ব-০১)

লেখাঃ DM Rahat

আরো পর্ব