হাসান বসরী (রহঃ) এর ১০টি উপদেশঃ
হযরত হাসান বসরী (রহঃ) বিশুদ্ধ, প্রাঞ্জল ও সাবলীল ভাষায় মানুষকে উপদেশ দান করতেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক রহস্যাবলী ও বিধি-নিষেধ স্পষ্টভাবে তুলে ধরতেন। তাঁর গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বাণীসমূহের কয়েকটি খোদাঅন্বেষীদের জন্য নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
১।
“অন্তরমাঝে যে সব কুমন্ত্রণা সৃষ্টি হয় এবং দূর হয়ে যায়, তা সব শয়তানের পক্ষ থেকে। এ সব কুমন্ত্রণা দূর করার জন্য আল্লাহর যিকর ও কুরআন তিলাওয়াতের সাহায্য নেয়া উচিত। আর যে সব কুমন্ত্রাণা সৃষ্টি হয়ে স্থায়ী হয়ে যায়, বুঝতে হবে তা নফ্সের পক্ষ থেকে। আর তা দূর করার জন্য নামায, রোযা ও আধ্যাত্মিক অনুশীলনের সাহায্য নেয়া উচিত।”
২।
“বিনীত ও বিনম্র হওয়ার শর্ত এই যে, ঘর থেকে বেরিয়ে যার সাথে দেখা হবে তাকে নিজের চেয়ে ভালো ও বড় মনে করবে।”
৩।
“বান্দা যখন পাপ করার পর তাওবা করে তখন তা আল্লাহর সাথে তাঁর নৈকট্য বৃদ্ধি করে দেয়।”
৪।
“এক ব্যাক্তি হযরত হাসানের (রহ) নিকট তার অন্তর কঠোর ও শক্ত হওয়ার অভিযোগ করলো। তিনি তাকে বললেন, তুমি তোমার অন্তরকে যিক্র ও ফিকরের বিভিন্ন স্তরে উন্নীত কর।”
৫।
“নিজের ভাইয়ের সম্মান করবে। তাহলে তাদের সাথে তোমার ভালোবাসার সম্পর্ক চিরকাল অটুট থাকবে।”
৬।
“প্রকৃতপক্ষে দুনিয়া হচ্ছে তোমাদের বাহন। যদি তোমরা তার পিঠে আরোহী হয়ে যাও সে তোমাদেরকে বহন করবে। আর সে যদি তোমাদের পিঠে আরোহী হয় তাহলে তোমাদের ধ্বংস করে ছাড়বে।”
৭।
“যে ব্যাক্তি আল্লাহর আনুগত্য করে তার সাথে বন্ধুত্ব করা তোমাদের জন্য জরুরী। কারণ, যে ব্যাক্তি সৎ ও সত্যনিষ্ঠ মানুষকে ভালোবাসে, সে যেন আল্লাহকেই ভালোবাসে।”
৮।
“আমি এমন কোন ব্যাক্তিকে দেখিনি যে দুনিয়া চেয়েছে এবং সে আখিরাত পেয়েছে। এর বিপরীতে যে আখিরাত চায় সে দুনিয়াও পেয়ে যায়। তাহলে এমন জিনিস কেন চাওয়া হবে না যাতে দুইটি জিনিসই পাওয়া যায়?”
৯।
তিনি বলতেন: “মন্দের মূল তিনটি এবং শাখা ছয়টি। মূল তিনটি হলো: হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা এবং দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা। আর শাখা ছয়টি হলো: নিদ্রা, পেট ভরে খাওয়া, আরাম-আয়েশ, নেতৃত্ব, প্রশংসা পাওয়া ও গর্ব-অহংকারের প্রতি আকর্ষণ ও ভালোবাসা।”
১০।
তিনি বলতেন: “জ্ঞান দুই প্রকার। অন্তরে অর্জিত জ্ঞান ও জিহ্বায় অবস্থিত জ্ঞান। প্রথম প্রকারের জ্ঞানই কল্যাণকর। আর দ্বিতীয় প্রকারের জ্ঞান আল্লাহর বান্দাদের উপর তাঁর সাক্ষ্য-প্রমাণ।(তথ্যসূত্রঃ তাজকেরাতুল আউলিয়া ও তাবেঈদের জীবনকথা)”