জালাল উদ্দিন রুমি (রহঃ) এর বিখ্যাত আধ্যাত্মিক বাণী চিরন্তনী

১.
আগার খাহী হাম নশীনী বা খোদা
গো নাশিনাদ দর হুজুরে আউলিয়া।

অর্থঃ তুমি যদি আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য বা সামনে বসতে চাও,
তবে কামেল অলীগণের দরবারে বসে যাও।

২.
মরদানে খোদাঘর খোদানা বাশাদ
ওয়া লেকেন আজ খোদা জুদা না বাশাদ

অর্থঃ মানুষ কে খোদা বল,
মানুষ খোদা নয় কিন্তু
মানুষ খোদা হতে পৃথক নয়।

৩.
আল্লাহ আল্লাহ গোফতো আল্লাহ
মিশওয়াদ ইশখুনকার বাত্তর মরদম শাওয়াদ

অর্থঃ আল্লাহ আল্লাহ জপতে জপতে
মানুষই আল্লাহময় হয়ে যায়,
এ কথা কি হবে সাধারণ লোক বিশ্বাস করবে।

৪.
ছদ কিতাবো ছদ ওয়ারাক দর নারেকুন
সিনারা আজ নূরে হক গোলজারে কুন

অর্থঃ শত শত কিতাব আগুনে নিক্ষেপ কর।
তোমার সিনাকে পীরের ধ্যান দ্বারা
সত্য নূর দিয়ে ফুল বাগানে পরিণত কর।

৫.
এক জমানা ছোহবতে বা আউলিয়া
বেহতর আজ ছদ ছালা তা আত বেরিয়া

অর্থঃ এক মুহুর্ত আউলিয়ায়ে কেরামের সহচার্য লাভ করা,
শত বছরের ত্রুটিহীন এবাদত অপেক্ষা উত্তম।

৬.
গরতু খাহী হাম নশীনী বা খোদা
গো নশীনী আন্দর হুজুরে আউলিয়া

অর্থঃ তুমি যদি আল্লাহ পাকের
সান্নিধ্য লাভের ইচ্ছা পোষণ কর,
তবে আউলিয়া কেরামের দরবারে বসে যাও।

৭.
চশমে রওশন কুন যে যাকে আউলিয়া
তা বধিনি এবতেদাতা এন্দেহা

অর্থঃ তুমি যদি আউলিয়া কেরামের পদধূলি দ্বারা
স্বয়ং চক্ষুকে জ্যোতিময় কর,
তবে তুমি আদি ও অন্ত সব কিছু দেখতে সক্ষম হবে।

৮.
পেশে সোবহা পাস নেগাহ দারদে
দেল তা নাগর দেদ আয গুমানে বদ খাজেল

অর্থঃ অতএব, আল্লাহ পাকের গুনাহবলীতে
গুনান্বিত লোকদের সামনে দেলকে ওয়াসওয়াসা
ও কুধারণা হতে হেফাযতে রাখিও,
যেন অন্তরের বদ গুমানির
কারণে তোমাকে লজ্জিত হতে না হয়।

৯.
নূর খাহী মুস্তায়েদ্দে নূর শাও
দূর খাহী খেশে বীনো দূর শাও

অর্থঃ তুমি যদি মারেফাতের নূর চাও,
তবে মুশিদে কামেলের সাহর্চাযে থাকিয়া
নূরের প্রতিভা ও যোগ্যতা অর্জন কর।
আর যদি আল্লাহর রহমত থেকে দুরে থাকিতে চাও,
তবে অহংকার ও খোদপছন্দী কর
এবং অলীর দরবার থেকে দুর হয়ে যাও।

১০.
চুঁ বাসে ইবলিসে আদম রোযে হাস্ত
পাস বাহার দাস্তে না বাইয়াদ দাদে দাস্ত

অর্থঃ যেহেতু মানুষের আকৃতিতে বহু শয়তান রয়েছে,
তাই অনুসন্ধান না করে যে কোন হাতে হাত দেওয়া
বা বাইয়াত হওয়া উচিৎ নয়।

১১.
তা তূ মীবীনী আযীযাঁ রা বশর
দাঁ কে মীরাসে বলীসাস্ত আঁ নজর

অর্থঃ তুমি যখন আল্লাহর সম্মানিত ওলীগণকে
সাধারণ মানুষরুপে দর্শন কর,
তখন মনে করিও এই দর্শন তুমি
ইবলিস হতে উত্তরাধিকারী সূত্রে প্রাপ্ত হইয়াছ।

১২.
চুঁ খোদা খাহাদ কে পর্দা কাচ দারাদ
মায়লা শান্দর তানা এ পাকাঁ বারাদ

অর্থঃ কোন মানুষ কে যদি আল্লাহ পাক
লাঞ্চিত অপমানিত করতে চান,
তবে তার গতি ফিরিয়ে দেন নেক লোকদের
কে বা অলীগণের দোষারুপ করার প্রতি।

১৩.
ছ্যাঁয়া এ ইআযদাঁ বুআদ বান্দা
খোদা মুর্দা এ ঈঁ আলম ও যেন্দা খোদা

অর্থঃ আল্লাহর বিশিষ্ট বান্দা পীরে কামেলই হন
আল্লাহ পাকের কুদরুতি ছায়া,
যারা দুনিয়ায় মুর্দা স্বরুপ আল্লাহর রাস্তায়,
তারাই জীবিত ও প্রাণ চঞ্চল!

১৪.
গার বগয়্যাম শিম্মায়ে যা নগমাহা
জানেহা ছর বর্যানাদ আয দখমাহা

অর্থঃ অলীগনের বাতেনী বাণীর সামান্য পরিমাণ
ও যদি আমি বয়ান করি,
তবে (মৃত) আত্না সমূহ কবর থেকে উঠে আসবে।

১৫.
কাহরুবায়ে ফিক্রে দাহরাওয়াযে
উস্ত লজ্জতে এলহাম ও ওয়াহই ও রাযে উস্ত

অর্থঃ প্রকৃত পীর মুর্শিদ তথা তাঁর রুহানী
ফয়েয বরকত তাঁর মুরিদের ভিতর হতে দুনিয়ার
মোহকে চোষে নেয়, ঐ ফয়েজের বদৌলতেই ইলহাম,
ওহী এবং তার গোপন রহস্যের স্বাদ অনুভব করে।

১৬.
পীরেরা জাতে খোদা এক না দিদ
না মুরীদু না মুরীদু না মুরীদ

অর্থঃ পীরের জাত ও আল্লাহর জাত এক জাত,
এই দুই নূরকে যে এক রুপে দেখতে না পারবে
সে মুরিদ নয়, সে মুরিদ নয়, সে মুরিদ নয়।

১৭.
খোদ ব’খোদ কামেল ন’শুদ মোল্লায়ে
তা গোলামে শমছে তিবরিজী ন’শুদ

অর্থঃ আমার মুর্শিদ কামেল শামছে তাবরিজীর
গোলামী না করা পর্যন্ত আমি মাওলানা রুমি কামেল হতে পারি নি।

১৮.
রও যে ছ্যাঁয়া আফতাবে রা বয়্যাব
দামানে মাহ শামছ তাবরিয বতাব

অর্থঃ যাও, আল্লাহ পাকের ছায়া তথা কামেল
পীরের শিক্ষা ধরে আল্লাহ পাক পর্যন্ত যাও।
এই পথে মুর্শিদ সম্রাট শামছে তাবরিযীর জামা আকড়ে ধর।

১৯.
গরতু সঙ্গে খারাও মরমর শুভি
চুঁ বছাহেব দ্বিল রসি গও হার শুভি

অর্থঃ তুমি যদি কঠিন শিলা বা র্মাবেল পাথর ও হও,
তুমি যখন কামেল পুরুষের সান্নিধ্যে পৌঁছবে
তখন তুমি মুক্তায় পরিণত হবে।

২০.
গোফতাহ না গোফতাহ কুনাদ আজ ফতেহ
বাব তা আজা নে সিখ সুজদ নে কাবাব

অর্থঃ আল্লাহর দরজা অলীদের নিকট খোলা থাকার কারণে
তাঁরা লওহে মাহফুজে রক্ষিত বাণীতে পরিবর্তন করতে পারেন।
এতে শিখ বা কাবাব কোনটাই জ্বলে না।

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel