(পর্ব-৩)
হযরত শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের বাণী ও উপদেশ
৪১.
“নিজের স্বভাবকে যদি মাটির মত বিনয়ী করিতে পার, তাহা হইলে মাটির তৈরি তোমাদের এই দেহের প্রত্যেক অণুতে কলেমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ”-এর ফুল ফুটিবে, খোদাপ্রাপ্তি তত্ত্বজ্ঞান রুপ ফল ধরিবে।”৪২.
“কামেল পীরের তাওয়াজ্জুহ-এর বলে মুরীদের মুর্দা দিল জিন্দা হইয়া প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করিতে পারে। মুর্দা দিল জিন্দা হইলে ঐ দিলে আল্লাহ ও রাসূলের (দঃ) খাস মহব্বতের ফয়েয ওয়ারেদ হইতে থাকে৷ তখন মানুষ হুজুরী দিলে নামাজ আদায় করিতে সক্ষম হয়।”৪৩.
“আল্লাহকে চিনিবার পথে অনেক দুঃখ ও লোক নিন্দা সহ্য করিতে হয়।”৪৪.
“অল্প আহার, অল্প নিদ্রা ও অল্প কথার অভ্যাস করা একান্ত আবশ্যক”৪৫.
“আল্লাহতায়ালা বলেন, “আল্লাহকে ভয় কর এবং তাহাকে পাইবার জন্য ওসিলা অন্বেষন কর”। সেই ওসিলাই যামানার কামেল ওলীসকল, যেহেতু তাঁহাদের পাক আত্মার যোগযোগে বিশ্ব আত্মার সান্নিধ্য লাভ হয়।”৪৬.
“রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মহব্বতই প্রকৃত ঈমান। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর মহব্বত যার অন্তরে যতটুকু তাহার ঈমানও ততটুকু।”৪৭.
“যেইমাত্র তোমার ময়লা দিলকে পীরে কামেলের পাক দিলের সহিত মিশাইতে পারিব, সেই মুহুর্তে তোমার অন্ধকার দিল আলোকিত হইবে এবং আল্লাহর জিকিরে নাচিয় উঠিবে।”৪৮.
“হে তামাম দুনিয়ার মুসলমান সকল! অমূল্য জীবন স্বপ্নের মত চলিয়া যাইতেছে। হুশিয়ার হও, নিশির শেষভাগে আল্লাহতায়ালাকে ‘ইয়া আল্লাহু, ইয়া রাহমানু, ইয়া রাহীমু’ – এই তিন নাম ধরিয়া ডাক। তবেই কল্যান-সন্দেহ নাই।”৪৯.
“যদি তোমরা আল্লাহ রাসূলের মহব্বত অন্তরে সৃষ্টি করিতে চাও, তবে কামেল পীরের সাহচর্য সন্ধান কর।”৫০.
“দরবার শরীফকে সর্বদাই ইজ্জত করিবে। মনে রাখিও, পীরের দরবারের ধুলাবালি আশেকানদের চোখের সুরমা।”৫১.
“পীরের ভালোবাসার বাহনে চড়িয়া আল্লাহ-রাসূলের প্রেম সমুদ্রে সন্তরণের যোগ্যতা অর্জন কর। আশা করা যায় তোমরাও এই ধন, এই অমূল্য সম্পদ লাভে ধন্য হইবে।”৫২.
“মুরিদ হলো পীরের আয়না। অর্থাৎ মুরিদের চলা-ফেরা, কথা বার্তা, চলন বলন দেখে মানুষ চিন্তা করে লোকটার পীর কেমন। কেবলাজান হুজুর পাক বলতেন, পীরের খাসলতে খাসলত ধর তবেই ত্রান ও শান্তি।”৫৩.
“কোন মুরিদ যদি বিপদে পতিত হইয়া পৃথিবীর কোন এক প্রান্ত হইতে আপন পীরকে স্বরণ করে, আর পীর যদি পৃথিবীর অপর প্রান্তে থাকে। এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্তের মুরিদের ডাকে সাড়া দিয়া পীরে কামেল আত্বিকভাবে তাওয়াজ্জুহ এর হাত বাড়াইয়া বিপদগ্রস্ত মুরিদকে বিপদ হইতে রক্ষা করিতে পারেন।৫৪.
“হে জাকেরগণ! বর্তমান জামানা কঠিন মুছিবতের সময়। ইহা এমন এক সময় যখন জলে-স্থলে, আকাশে বাতাসে সর্বত্রই বিপদ দেখিতে পাইবে। সেই কঠিন বিপদের সময়ে যদি বাঁচিতে চাও, তবে জামানার কামেলকে শক্ত করিয়া ধর।”৫৫.
“বাইন মাছগুলি কাঁদায় বাস করে। কিন্তু তাঁহাদের গায়ে কাদা লাগে না। বাইন মাছ কাদায় থাকিয়া যদি কাদা হইতে বাঁচিতে পারে তবে তুমি মানুষ হইয়াও গোনাহের মধ্যে থাকিয়া কেন গোনাহের কাদা হইতে বাঁচিতে পারিবে না? অতএব, পীরের মহব্বতের চাদর দিয়া নিজেকে ঢাক। তাহা হইলেই নিজেকে সকল প্রকার গোনাহ ও গোমরাহী হইতে বাঁচাইতে পারিবে। আল্লাহর প্রেমে দেল ভরিয়া উঠিবে।”৫৬.
“বাবা! এমনিভাবে গজব আসতে শুরু করবে যেমনিভাবে তসবিহ এর দানা একটার পর একটা আসতে থাকে ঠিক তসবিহ এর দানার মতো গজব আসতে শুরু করবে। সেই গজব থেকে যদি বাঁচতে চাও তরিকতের ওজিফা কালাম যেন ভুলোনা, আপন পীরের কদমকে নূহের তরী মনে করে শক্ত করিয়া ধর।৫৭.
“বাবা! অচিরেই গোটা পৃথিবীতে লোহার মই টানা হবে মু’মিন ছাড়া কেউ সেই গজব থেকে রেহাই পাবেনা”৫৮.
“যেদিন তামাম দুনিয়ার অন্ধ মানুষ সকল নিশির শেষভাগে, সুখের নিদ্রা ত্যাগ করে নিবেদিত প্রানে আল্লাহতায়ালাকে প্রান ভরে ডাকবে, সেদিন তামাম দুনিয়াতে রহমতে ভরে যাবে। গাছে ফল হবে, জমিনে শস্য হবে, পুকুরে মাছ হবে। দুঃখের লেসমাএ আর থাকিবে না।”৫৯.
“যদি এক মুহূর্ত আপন পীরের পাক দেলের সাথে তোমার নাপাক দেল মিশাইতে পার, তবে তোমার দেলে গওহর পয়দা হইবে, গোলাপ ফুলের মত ফুটিয়া, মুর্দা দেল জেন্দা হইবে। দেল ১৪ই রাত্রির পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জল হইবে। দেলে আল্লাহ আল্লাহ জেকের জারী হইবে। কখনও আর এই জেকের বন্ধ হইবে না।”৬০.
“খোদা তা’আলার নিদর্শণ দেখিবার জন্য দেল দরিয়ায় ডুব দিতে হইবে। কিন্তু উসিলা ব্যতীত একা-একা কস্মিনকালেও দেলসমুদ্রে খেয়াল-কে ডুবানো যায় না, আজ অবধি কেহ পারে নাই এবং পারিবেও না। তাই, প্রয়োজন উসিলা বা মাধ্যমের। আর সেই মাধ্যমই হলো জামানার কামেল ওলিসকল।”
সূত্র: শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নসিহত শরীফের বিভিন্ন অংশ হতে।
⇒ শাহ্সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরীর বাণী ও উপদেশ সবগুলো পর্ব