শাহ্সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (রহঃ) এর বাণী ও উপদেশ পর্ব-১১

শাহ্সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (রহঃ) এর বাণী ও উপদেশ পর্ব-১১

২০১.
“বন্যায় ডুবিয়া গেলে সমস্ত সংসার
হংস ভাসিয়া থাকে ভয় কি তাহার।”

২০২.
“খোদাতত্ত্ব সাধনার পথে শুরু হইতে পূর্ণতা অর্জন পর্যন্ত মোর্শেদের সাহায্য ও দয়া ব্যতীত এক চুল পরিমানও অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়। তাই মোর্শেদে কামেলের কোন বিকল্প নাই।”

২০৩.
বিশ্ব জাকের মঞ্জিল আল্লাহ ও রাসূলে পাক (সাঃ) এর মহা দান, বিশ্ব মানবের জন্য খোদাপ্রাপ্তির প্লাটফর্ম, আধ্যাত্মিক শিক্ষাকেন্দ্র।

২০৪.
“পীরের ভালোবাসা ভিতর দিয়া, পীরের মহব্বতের ভিতর দিয়া আল্লাহর উপর মহব্বত পয়দা হয়।”

২০৫.
“গোলাভরা ধান থাকলেও সকলেই কিছু না কিছু ব্যবসা করবেন। ব্যবসা হলো কাঠার মাছ। ব্যবসা ছাড়া নতুন পয়সার মুখ দেখা যায় না।”

২০৬.
“হরদম আল্লাহ আল্লাহ জেকেরের মাধ্যমেই খোদাপ্রাপ্তি ঘটে।”

২০৭.
“কখনও পীরের নির্দেশিত কর্ম করিতে উচিৎ – অনুচিত চিন্তা করিবে না। পীরের আদিষ্ট কর্ম করিতে ভাল-মন্দ চিন্তা করিতে নেই।”

২০৮.
“পীরের মহব্বত অর্জনের চেষ্টা কর। পীরকে ভালবাস। তাহা হইলে আল্লাহ রাসূলের মহব্বত তোমাদের দেলে পয়দা হইবে। আল্লাহ ও রাসূলের খাছ হোব্ব-এশক-মহব্বতের ফয়েজ তোমরা পাইতে থাকিবে।”

২০৯.
“ধন সম্পদ, আত্বীয়-স্বজন, পুত্র-পরিজন, এমন কি স্বীয় প্রাণাপেক্ষা যদি আপন পীরকে ভালবাসিতে পার, তাহা হইলে আল্লাহর মারেফাত অর্জন করা বা পরিচয় জ্ঞান লাভ করা তোমাদের জন্য খুবই সহজ হইবে।”

২১০.
“খোদাপ্রেম শীতল হইতে পারে এমন কোন চিন্তা মুরীদের জন্য অনিষ্টকর। তাই সেই সকল কর্মে আসক্ত ও ঐ সকল চিন্তায় প্রভাবিত ব্যাক্তিবর্গ হইতে তালেবের দূরে থাকা উচিত।”

২১১.
“যাহারা পৃথিবীর সম্পদ অর্জন, আল্লাহতায়ালার সান্নিধ্য ও মহব্বত অর্জনের চেয়ে বড় মনে করেন ও সেই অনুযায়ী কর্মে লিপ্ত ও আসক্ত থাকেন তাহাদের সংসর্গ আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যের পথের পথিকদের জন্য মংগলজনক নয়।”

২১২.
“পূর্ববর্তী কালের মুর্শিদে কামেলগণ দুইটি বিষয় খোদাতালাশীদের জন্য সব চেয়ে বিপদজ্জনক ও ক্ষতিকর মনে করিয়াছেন। এই দুইটি হইল ধনীদের সংসর্গ এবং আল্লাহতায়ালার পথ বিচ্যুতি হইয়া বিবাহের চিন্তা করা।”

২১৩.
“আল্লাহতায়ালার পথের পথিকদের সব চেয়ে বড় সম্পদ আদব। বেয়াদব কখনই খোদাতায়ালার প্রেম লাভ করিতে পারিবে না।”

২১৪.
“যে ব্যাক্তির আদব নাই, সে ব্যাক্তি কখনও আল্লাহতায়ালার রহমত, করুনা ও দয়া কামনা করিতে পারে না।”

২১৫.
“যে ব্যাক্তির আদব নাই সেই ব্যক্তি শুধু নয় তাহার সংগীগণও আল্লাহপাকের অনুগ্রহ হইত দূরে নিপতিত হয়।”

২১৬.
“পীরের প্রতি আদব প্রদর্শনের নিমিত্তে পীরের প্রতিটি হুকুম প্রকৃত মুরীদ পুংখানুপুংখরুপে পালন করিবে।”

২১৭.
“আপন পীর কেবলাজান ছাহেবের নিকট প্রকৃত মুরীদকে সদাই আদবের সহিত থাকিতে হইবে। স্বীয় পীর কেবলাজান হুজুরের সম্মুখে যতক্ষণ থাকিবে ততক্ষণ মুরীদ পবিত্র হইয়া থাকিবে।”

২১৮.
“স্বীয় মুর্শিদের সম্মুখে যাইবার আগে অজু করিয়া লইবে। মনকে সকল ‍দিক হইতে ফিরাইয়া একমাত্র স্বীয় মুর্শিদের প্রতি সন্নিবেশিত করিবে। আপন মুর্শিদে কামেলের নিকট বসিতে হইলে তালেব সর্বদা নতশিরে বসিবে। বসিবার একান্ত প্রয়োজন না হইলে মুরীদ আদবের সহিত দন্ডায়মান থাকিবে।”

২১৯.
“স্বীয় পীর কেবলাজানের সম্মুখে কখনই আসন করিয়া বসিবে না। যতক্ষণ মুর্শিদে কামেলের সম্মুখে থাকিবে মুরীদ অন্য কোন দিকে মন বা দৃষ্টি ফিরাইবে না। কারণ তিনি মুরীদকে উদ্দেশ্য করিয়া উপদেশ দান করিবেন। স্বীয় পীরে কামেলের দিক হইতে দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরাইয়া লওয়া অতি অন্যায় ও অনাকাংখিত কর্ম।”

২২০.
“মুর্শিদে কামেল মুরীদের মনের অবস্থা সম্পূর্ণ রুপে জ্ঞাত। তাই শুধু বাহ্যিক ভাবেই নয়, পীরে কামেলের নিকটে বা দূরে কোন অবস্থাই তালেব কুচিন্তা, কুভাব মনে প্রশ্রয় দিবে না। নাফসে আম্মারার কুপ্রভাবে কখনও এই রুপে খারাপ চিন্তা মনে আসিলে আপন পীরে কামেল ছাহেবের দয়া ও আশ্রয় ভিক্ষা চাহিয়া মন হইতে সকল প্রকার অনিষ্টকর চিন্তা দুরীভুত করিবার প্রয়াস পাইবে ও সেই সংগে তওবা করিয়া মন অন্য দিক ঘুরাইয়া লইবার জন্য আপন মুর্শিদ কেবলার দয়া মনে মনে প্রার্থনা করিবে। নাফসে আম্মারার এই প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জেহাদ করিবে।”

তথ্যসূত্রঃ বিশ্বওলী হযরত খাজাবাবা শাহ্‌সূফী ফরিদপুরী (কুঃ ছেঃ আঃ) ছাহেবের নসিহত সমূহের ১ম খন্ড, ‘আদাবুল মুরীদ’ হতে তুলে ধরা হয়েছে।

সূত্র: শাহসূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের নসিহত শরীফের বিভিন্ন অংশ ও অডিও বাণী হতে।

• শাহ্সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (রহঃ) এর বাণী ও উপদেশ সবগুলো পর্ব

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel