বাঁশি কেন কাঁদে! (মাওলানা রুমি রহঃ) – পর্ব-১
(১)
“বিশনু আজ না এচুঁ হেকাইযে মিকুনাদ,
ওয়াজ জুদাই হা শীকাইয়েত মিকুনাদ।
অর্থঃ মাওলানা রুমি (রহঃ) বলেন, বাঁশের বাঁশি যখন বাজে, তখন তোমরা মন দিয়ে শোন, সে কি বলে। সে তাহার বিরহ বেদনায় অনুতপ্ত হইয়া ক্রন্দন (কান্না) করিতেছে।
(২)
কাজ নাইয়াছতান তা মরা ব বুরিদাহআন্দ,
আজ নফিরাম মরদো জন নালিদাহআন্দ।
অর্থঃ বাঁশি বলে আমি বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে আপনজনের সাথে সুখে শান্তিতে বসবাস করতেছিলাম। সেখান থেকে আমাকে কাটিয়া পৃথক করিয়া আনা হইয়াছে৷ সে জুদাইর (আলাদার) কারনে আমি ব্যথিত হইয়া বিরহ-যাতনায় ক্রন্দন (কান্না) করিতেছি। আমার বিরহ যাতনায় মানবজাতি সহানুভূতির ক্রন্দন করিতেছে।
ভাবঃ এখানে বাঁশের বাঁশি মানব রুহের সাথে তুলনা করা হইয়াছে। মানব রুহ আলমে আরওয়া (রুহের জগত) এর মধ্যে আল্লাহর পবিত্র স্থায়ী ভালোবাসায় নিমগ্ন ছিল। ইহজগতে আগমন করিয়া পার্থিব বস্তুর মোহের প্রভাবে আল্লাহর ভালোবাসা ভুলিয়া গিয়াছে। এখন যদি ঐশী ইচ্ছার আকর্ষণে বা কোন কামেল লোকের সহচর্যে অথবা কোন প্রেমের কাহিনী পাঠে নিজের প্রকৃত গুণাবলি ও অবস্থার প্রতি সজাগ হয় তখন খোদার প্রেমও চিরশান্তির জন্য অনুতপ্ত ও দুঃখিত হইয়া নিজের ভাষায় যেরুপ অনুশোচনা প্রকাশ করে, উহাকেই বাঁশির সুরের সহিত তুলনা করিয়া প্রকাশ করা হইয়াছে। মানব রুহের বিভিন্ন গুন রয়েছে, যেমন মহব্বতে রাব্বানী, মারেফতে ইলাহী, ও জিকিরে দায়েমী, ইহজগতে ইহার প্রত্যেকটি কিছু না কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলিয়া এক একটি স্বরণ করিয়া, অনুতপ্ত হইয়া দুঃখ প্রকাশ করিতে থাকে। এজন্য মাওলানা বলেন- বাঁশি কয়েক প্রকার বিরহ-বেদনা প্রকাশ করিতেছে।
— Fackrul Islam Joy