ইসলামে গবেষনার গুরুত্ব
“ইসলাম সম্পর্কে আপনার বিস্তারিত জানার ইচ্ছে থাকলে একটু সচেতন হতে হবে। কারন এই জাতি বহু দল ও উপদলে বিভক্ত! এরা সবাই নিজেদের কোরানের অনুসারী দাবি করে ঠিকই কিন্তু দলগত পার্থক্যের কারনে এই এক কোরানকেই এরা বহু অর্থ ও বিশ্লেষণ দিয়ে প্রকাশ করেছে। যার একটির সাথে আরেকটির মিল নেই। আরবি ভাষায় একটা শব্দের ৩-২৭ টা অর্থ হতে পারে এবং কোরানের অধিকাংশ উক্তিতে ইঙ্গিত ও রুপক শব্দ ব্যাবহার হয়েছে। সুতরাং আকিদাগত পার্থক্যের কারনে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে উপস্থাপনের অবকাশ রয়েছে। এটাকে সহজ করতে ব্যাবহার করা হয়েছে অসংখ্য জাল হাদিস যা মোহাম্মদ সাঃ এর ওফাতের পরে রাজতন্ত্রবাদী উমাইয়্যা ও আব্বাসিয়ারা তাদের ক্ষমতার স্বার্থে তৈরি করেছে।
বিনিময়ের স্বার্থে রাজদরবার থেকে অনেক আলেমদের নিয়োগ করা হত ইসলাম গবেষণার নামে বিকৃত তাফসির, হাদিস ও ফিকহের কিতাব রচনা করার জন্য। নিখুঁত এই চক্রান্তগুলো তখনকার সাধারণ জনগণ বুঝতে পারেনি। যদি কেও বুঝতেও পারত তাহলে তাদের হত্যা করা হত ধর্ম অবমাননার দ্বায়ে। কালের পরিক্রমায় এমন অসংখ্য বিষয় ইসলামের ভিতর এতটা নিখুঁত ভাবে ডুকে গেছে যে এখন ঐ বিষয়গুলো সনাক্ত করার কোনো উপায় অবশিষ্ট নেই। উমাইয়্য ও আব্বাসিয়া শাসনের পূর্ব রাসুলের ওফাতের মাত্র ৬০ বছরের মধ্যে ইসলামের সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেজেডি সংগঠিত হয় যা জঙ্গে কারবালা নামে পরিচিত। এটা মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। দু’পক্ষই মুসলমান হওয়া সত্যেত এখানে একটা দল সত্য অপরটি মিথ্যা। এই যুদ্ধে সত্যের ধারক ও বাহক আলে মোহাম্মদ সাঃ তথা মোহাম্মদ সাঃ এর বংশধরদের হত্যা করা হয়।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এইযে মোহাম্মদী ইসলামের ধারক ও বাহকদের হত্যা করা আবশ্যক তা প্রমানের জন্য তারা কোরান ও হাদিস থেকে যথেষ্ট যুক্তি আবিষ্কার করে। আর এই কারবালা একদিনে সংগঠিত হয় নাই। রাসুলের ওফাতের ঠিক কয়েক মূহুর্ত পর থেকেই এর নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে, এখানে অনেক বড় বড় সাহাবীও নিজের অজান্তে ও অনেকে স্বইচ্ছায় এই মুনাফেকিতে যুক্ত হয়েছে। রাসুলের ওফাতের পরে থাকে মুসলমানদের ভিতরকার কিছু রাজতন্ত্রবাদীদের উত্থান হয়েছে এবং ইসলাম একটা লম্বা সময়ের কালো অধ্যায় পার করেছে। যার কারনে ইসলামে যথেষ্ট সংযোজন ও বিয়োজন সংগঠিত হয়েছে। সমস্যাগুলো এখন সমাধান হয়ে গেছে এমনটাও নয় বরং নতুন নতুন বিভিন্ন রুপে প্রকাশ পেয়ে চলেছে।
এই চক্রান্তগুলো সাধারণের পক্ষে ধরা সম্ভব নয়। রাসুল সাঃ এদের ব্যাপারে ভবিষ্যত বানীও করে গেছেন যে এদের আমল একজন মুমিনের মতনই হবে কিন্তু ইসলাম এদের গলার নিচে নামবে না। এখন প্রথমিক ভাবে একজন সাধারণ মুসলমান বা নন-মুসলিম ইসলাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে অবশ্যই ভুল ধারণা নেওয়া ও প্রতারিত হওয়ার যথেষ্ট মাধ্যম রয়েছে। তাই প্রাথমিক পর্যায়ের সকলের উচিত যদি সত্যিই জানার ইচ্ছে থাকে তাহলে একটু সচেতনভাবে গবেষনা করা।
কোরানের তাফসিরের ক্ষেত্রে এখানে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে এবং যেই হাদিসগুলো সরাসরি কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক তা নিঃসন্দেহে জাল হাদিস হিসেবে ফেলে দিতে হবে। ইসলাম নিয়ে জানার ইচ্ছে থাকলে নিরপেক্ষ ভাবে গবেষণা করা ছাড়া আপনি হয়ত সঠিক তথ্য কোনো কালেই পাবেন না। তাই গবেষণার বিকল্প নেই।
– ইমরান হাসান ইমন।