মাওলানা জালাল উদ্দীন রুমি (রহঃ) এর মরমী বাণী পর্ব-১

(১) প্রতিটা আত্মাই সোনা হয়ে যায়, যখন প্রিয়তমার স্পর্শ পায়।

(২) তুমি ঘুমন্ত অথবা জাগ্রত, লেখো কিংবা পড়, যাই করো না কেন, এক মুহূর্তও খোদাকে স্মরণ না করে থেকো না।

(৩) যে তার জ্ঞান দিয়ে মনের খারাপ ইচ্ছাগুলোকে জয় করতে পারে, সে স্বর্গের ফেরেশতাদের থেকেও বেশি সম্মানিত।

(৪) প্রতিটি মানুষ ভেতর থেকে ঠিক সেই কাজটি করার জন্যই তাড়না অনুভব করে।

(৫) হারিয়ে না গেলে পাওয়া সম্ভব নয়।

(৬) যে মুর্শিদকে খোদারূপে দেখে নাই সে মুরিদ নয়, সে মুরিদ নয়, সে মুরিদ নয়।

(৭) যে কখনো বাড়ি ছাড়েনি, তার কাছ থেকে যাত্রার উপদেশ নিও না।

(৮) হে প্রিয় বৎস! তোমার উপর যদি মুর্শিদের ছায়া না থাকে, তবে শয়তানের ওয়াসওয়াসাহ তোমাকে সর্বদা অস্থির করে রাখবে।

(৯) বৃক্ষের মতো হও, আর মরা পাতাগুলো ঝরে পড়তে দাও।

(১০) সব কিছু জেনে ফেলাই জ্ঞান নয়, জ্ঞান হলো কী কী এড়িয়ে যেতে হবে বা বর্জন করতে হবে তা জানা।

(১১) আপন মনকে শান্ত করো, দেখবে আত্মা নিজেই কথা বলছে।

(১২) তুমি এ ব্রহ্মাণ্ডে গুপ্তধনের, কিন্তু প্রকৃত গুপ্তধনতো তুমি নিজেই।

(১৩) তুমি তাদের এড়িয়ে যাও যারা তোমাকে ভীত সন্ত্রস্ত ও দুঃখিত করে, যারা তোমায় রোগ ও মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে ফেলবে।

(১৪) প্রদীপগুলো আলাদা, কিন্তু আলো একই।

(১৫) পীরের নিকট হইতে মুখ ফিরিওনা, সেজদা কর নৈকট্য অর্জন কর।

(১৬) একটি চেতনাপ্রাপ্ত শুদ্ধ মন (জাগ্রত রূহ) হাজার কাবা থেকে শ্রেষ্ঠতর।

(১৭) তোমাকে ঘিরে থাকা কালো মেঘ থেকে নিষ্কৃতি লাভ করো! এরপর দেখবে তোমার নিজের আলো পূর্ণিমার চাঁদের মতই উজ্জ্বল!

(১৮) শুধু তৃষ্ণার্ত পানি খুঁজে না, পানিও তৃষ্ণার্তকে খোঁজে।

(১৯) যে হৃদয় ভরপুর প্রেমের আগুনে তার প্রত্যেক কথাই হৃদয়ে ঝড় তোলে।

(২০) সিংহকে তখনই সুদর্শন দেখায় যখন সে খাবারের খোঁজে শিকারে বেরোয়।

(২১) প্রদীপ হও, কিংবা জীবনতরী, অথবা সিঁড়ি। কারো ক্ষত পূরণে সাহায্য করো।

(২২) তোমার দু’টো চোখকেই বন্ধ করে দাও। যদি অন্য চোখটি দিয়ে দেখতে চাও। তুমি যত বেশি নিশ্চুপ থাকবে, তত বেশি শুনতে পাবে।

(২৩) এটা তোমার আলোই, তোমার আলোই এই জগতকে আলোকিত করে।

(২৪) শোক করো না। তুমি যাই হারাও না কেনো তা অন্য কোনো রূপে ফিরে আসবে।

(২৫) তুমি কি, তোমার আত্মার? তবে তোমার মনের খাঁচা (আমিত্ব) থেকে অবমুক্ত হও।

(২৬) দিপ্তীমান মোমবাতির মত হওয়া মোটেও সহজ নয়! অন্যকে আলোকিত করতে চাইলে সর্বপ্রথম নিজেকে আগুনে পুড়ে শুদ্ধ হতে হয়।

(২৭) সুন্দর ও উত্তম দিন তোমার কাছে আসবে না; বরং তোমারই এমন দিনের প্রতি অগ্রসর হওয়া উচিত।

(২৮) যা কিছু হারিয়েছো তার জন্য দুঃখ করো না। তুমি তা আবার ফিরে পাবে, আরেকভাবে, আরেক রূপে।

(২৯) প্রেম কোন ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকে না, প্রেম অসীম সাগরের মত, যার কোন প্রারম্ভ বা সমাপ্তি নেই।

(৩০) যখন তুমি ক্রোধের অবয়ব দেখতে পাও, তার গভীরে লক্ষ্য কর, সেথা তুমি দম্ভের অবয়ব দেখতে পাবে।

(৩১) যদি তুমি আধ্যাত্মিক জগতের কাউকে পাও, তবে বিনয়ের সাথে কথা বলো এবং কিছু শেখার আগ্রহী হও।

(৩২) দুনিয়াবি সাধারণ দরজায় কষাঘাত করো না, তোমার হাত এতটাই প্রসস্থ যে, ইচ্ছে করলেই তুমি বেহেস্তী দরজার কড়া নাড়তে পার।

(৩৩) আত্মাকে শোনার ক্ষমতা দিয়ে যে কান দান করা হয়েছে তা এমন কিছু শুনতে পায় মন যা বুঝতেও পারে না।

(৩৪) সুফিগণ প্রেমিক, ধৈর্যই তাঁদের পোষাক। তাঁরা জানেন যে, পূর্ণিমার আলো দিতে চাঁদকে পূর্ণ হতে সময় লাগে।

(৩৫) ঘষা খেতে যদি ভয় পাও, তাহলে চকচক করবে কীভাবে?

(৩৬) যদি কামেল লোকের সোহবত ক্ষণিকের জন্যেও পাও, তাহা গ্রহণ করো। জেনে রেখো, তাহা হাজার বছরের ফকিরি হতেও উত্তম।

(৩৭) আমি অনেক মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ঘুরেছি কিন্তু পরম সত্ত্বাকে কেবল নিজের মধ্যেই অনুধাবন করতে পেরেছি।

(৩৮) সুরের মাধ্যমেই অন্তরের লুকায়িত রহস্যগুলো প্রকাশিত হয়।

(৩৯) তুমি যত বেশি নিশ্চুপ থাকবে, তত বেশি শুনতে পাবে। তোমার চোখের পাতা তোমার হৃদয় থেকে কবিতা লিখবে।

(৪০) আমরা তো সেই লোকটির মতো। যে গাধার পিঠে বসে গাধার কাছেই জানতে চায় যে কোথায় যেতে হবে!!!

(৪১) তোমার চালাকি বিক্রি করে মুগ্ধতা ক্রয় করে এনো, লাভবান হবে।

(৪২) যেদিন তোমার প্রেম আমায় স্পর্শ করব সেদিন আমি এতোটাই উন্মাদ হবো যে, সকল উন্মাদ ও আমা হতে পালাবে।

(৪৩) মানুষ যতক্ষণ অন্যায় অসত্যের বন্ধনে থাকে ততক্ষণই অদৃশ্য খোদার এবাদত করে এবং নবী ও রাসুলগণের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে।

(৪৪) আউলিয়াগণ (হৃদয়) মসজিদের ভিতরেই (অবস্থান করে) থাকেন উহাই আল্লাহ লাভের জন্য, সকলের (কাবা) সেজদার স্থান।

(৪৫) গতকাল আমি বুদ্ধিমান ছিলাম, তাই পৃথিবীটাকে বদলে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আজ আমি জ্ঞানী, তাই নিজেকে বদলে ফেলতে চাই।

(৪৬) তোমার হৃদয়টাকে ততক্ষণ পর্যন্ত ভাঙ্গতে থাকো যতক্ষণ পর্যন্ত তা না খুলে যায়।

(৪৭) এই পথটা তোমার, তুমি পথ চলো একা। তোমার চলার পথে হয়ত কেউ সঙ্গী হবে। কিন্তু তোমার পথটা অন্য কেউ হেঁটে দিবে না।

(৪৮) তুমি সাগরে এক বিন্দু পানি নও। তুমি এক বিন্দু পানিতে গোটা এক সাগর।

(৪৯) যখনই নিজের স্বার্থপর সত্ত্বার উপর বিজয় অর্জন করতে পারবে, ঠিক তখনই মনের সমস্ত অন্ধকার আলোতে রূপান্তরিত হয়ে যাবে।

(৫০) এমনকি বসন্তে অস্তিত্ব লাভ করা বস্তুও শরতের শেষে এসে ক্ষয়ে যায়; কিন্তু, প্রেম! সে তো কোন নির্দিষ্ট মৌসুমের নয়।

(৫১) এতদূর তোমাকে নিয়ে এসেছেন যিনি, আরও সামনে নিয়ে যাবেন তিনিই।

(৫২) নতুন কিছু তৈরি করো, নতুন কিছু বলো। তাহলে পৃথিবীটাও হবে নতুন।

(৫৩) প্রতিটি মানুষকে একটা নির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরি করা হয়েছে এবং সেই কাজটি তার হৃদয়ে গ্রন্থিত আছে।

(৫৪) যে সৌন্দর্য তুমি আমার মাঝে দেখতে পাও, তা তোমারি প্রতিচ্ছবি।

(৫৫) সুঁচে গাঁথিবার সুতা কখনও দু’পাল্লা হয় না, তুমি যখন আমার সাথে এক হইয়া গিয়াছ তখন এক সুঁচে প্রবেশ কর।

(৫৬) আকাশ কেবল হৃদয় দিয়েই ছোঁয়া যায়।

(৫৭) যা তোমাকে পরিশুদ্ধ করে, সেটিই সঠিক পথ!

(৫৮) গলে যাওয়া বরফের মতো হও, নিজেকে দিয়ে নিজেকে ধুইয়ে দাও।

(৫৯) তোমার কাছে যা-ই আসুক না কেন তুমি কৃতজ্ঞ থেকো, কেননা তোমার কাছে যা পাঠানো হয় তা তার পক্ষ থেকে পথনির্দেশ।

মাওলানা জালাল উদ্দীন রুমি (রহঃ) এর মরমী বাণী পর্ব-২

আরো পড়ুনঃ
Sufibad24.com | WhatsApp চ্যানেল

Sufibad24.com | Telegram Channel